বরিশালে হাতপাখার মেয়র প্রার্থীর ওপর হামলা

দুই সিটির ফল প্রত্যাখ্যান, বাকি দুটিতে প্রার্থী প্রত্যাহার

আজাদী ডেস্ক | মঙ্গলবার , ১৩ জুন, ২০২৩ at ৪:৫১ পূর্বাহ্ণ

এজেন্টকে বের করে দেওয়ার খবর শুনে কেন্দ্র পরিদর্শনে গিয়ে ক্ষমতাসীন দলের কর্মীদের হামলার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন বরিশাল সিটি কর্পোরেশনে ইসলামী আন্দোলনের মেয়র পদপ্রার্থী মুফতী সৈয়দ ফয়জুল করীম। গতকাল দুপুরে নগরীর ছাবেরা খাতুন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে বের হওয়ার পর হাতেম আলী কলেজ চৌমাথার কাছে এ হামলার ঘটনার হাতপাখার প্রার্থী বরিশাল মহানগর পুলিশে কমিশনারের কাছে এ ব্যাপারে অভিযোগ দিয়েছেন।

এদিকে নির্বাচনে অনিয়ম ও প্রার্থীর ওপর হামলার প্রতিবাদে বরিশাল ও খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যানের ঘোষণা দিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। পাশাপাশি সিলেট ও রাজশাহী মহানগরী থেকে নিজের প্রার্থীও সরিয়ে নিয়েছে চরমোনাই পীরের দল। সৈয়দ ফয়জুল করীমের গায়ে হাত তোলার অভিযোগ তদন্ত করে দায়ীদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। খবর বিডিনিউজের।

অভিযোগ দিয়ে বের হয়ে ফয়জুল করীম বলেন, ৩০৪০ জন নৌকা সমর্থক অতর্কিতভাবে এই হামলা চালায়। আমাদের ঘিরে হঠাৎ কী নিয়ে তর্কবিতর্ক শুরু করল, ফট করে দেখি আমাকে ঘুষি দেওয়া শুরু করছে। কীসের আমার উপর হামলা, আমি নিজের লোকদের তখন সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করি। আমি অভিযোগ নির্বাচন কমিশনে দিয়েছি। আমি শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে ওদের পতন ঘটিয়ে মাঠ থেকে বিদায় হব। আমার গায়ে হাত দিয়েছে, রক্তাক্ত করেছে। (তখন তিনি নিজের নাকের রক্ত দেখান)। আমি কী করেছি? আমি একজন প্রার্থী। আমি তো তাদের মুরব্বি, আলেম মানুষ। আমার উপর আঘাত করতে হবে তাদের? অথচ আমি কিচ্ছু বললাম না।

এ নিয়ে মামলা করবেন জানিয়ে হাতপাখার প্রার্থী বলেন, নির্বাচন শেষ হোক। আমি যেহেতু রক্ত ঝরিয়েছি। আওয়ামী লীগের পতন হওয়ার আগ পর্যন্ত আমি রাজপথ ছাড়ব না।

হাতপাখার মিডিয়া সেলের প্রধান কে এম শরিয়ত উল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, হামলার সময় লাঠিসোটা ও পাথর ব্যবহার করা হয়। হুজুরের সাথে থাকা বেশ কিছু নেতাকর্মী এ সময় কমবেশি জখম হয়।

অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে বরিশাল মহানগর পুলিশ কমিশনার সাইফুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, প্রার্থীর ওপর হামলার অভিযোগ পেয়েছি। কে বা কারা এই হামলা করেছে; উনার দাঁত ফেটে রক্ত বেরিয়েছে। সব জায়গায় সিসি ক্যামেরা আছে, আমরা তাদের বের করে ফেলব। প্রার্থীর ওপর যেই হামলা করে থাকুক তার বিরুদ্ধে কঠোরভাবে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গ্রেপ্তার করা হবে।

হামলার অভিযোগ মৌখিকভাবে পেয়েছেন জানিয়ে নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা হুমায়ুন কবীর বলেন, আমি অভিযোগ পেয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দ্রুত এ ব্যাপারে আইনি পদক্ষেপ নিতে বলেছি। এই হামলাটি কেন্দ্রের বাইরে হয়েছে। ফলে ভোটে এর কোনো প্রভাব পড়েনি।

এ ব্যাপারে চেষ্টা করেও আওয়ামী লীগের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

দুই সিটির ফল প্রত্যাখ্যান : নির্বাচনে অনিয়ম ও প্রার্থীর ওপর হামলার প্রতিবাদে বরিশাল ও খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যানের ঘোষণা দিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। পাশাপাশি সিলেট ও রাজশাহী মহানগরী থেকে নিজের প্রার্থীও সরিয়ে নিয়েছে তারা।

গতকাল বিকালে ভোট শেষে বরিশাল নগরীর চাঁদমারী এলাকার মাদ্রাসা রোডের মুজাহিদ কমপ্লেঙে হাতপাখার নির্বাচনী কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন ইসলামী আন্দোলনের আমির মুফতি রেজাউল করিম। তিনি বলেন, আজকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মনোনীত প্রার্থী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীমের ওপর দুইবার আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়েছে, জখম করেছে। এর ঘৃণা ও ধিক্কার জানাই।

বুথগুলো নিয়ন্ত্রণে নিয়ে অনিয়ম বাস্তবায়ন করেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, এই মারাত্মক অনিয়মের প্রতিবাদে আমরা দুই সিটিতে নির্বাচনী ফলাফলকে প্রত্যাখ্যান করছি। আর সিলেট ও রাজশাহীতে আমাদের যে প্রার্থী রয়েছে তাদের আমরা প্রত্যাহার করে নিচ্ছি। সঙ্গে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) পদত্যাগ দাবি করছি। এ হামলার প্রতিবাদে ঢাকাসহ সারা দেশে এরই মধ্যে বিক্ষোভ করেছেন নেতাকর্মীরা। আগামী শুক্রবার জুমার নামাজের পর সারাদেশে বিক্ষোভ ও মিছিল হবে।

এ সময় সেখানে মেয়র প্রার্থী সৈয়দ ফয়জুল করীম উপস্থিত ছিলেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহামলাকারী আটক
পরবর্তী নিবন্ধ‘সুশৃঙ্খল আনন্দমুখর পরিবেশে ভোট হয়েছে’