চন্দনাইশ ও আনোয়ারা উপজেলা সীমান্তের মধ্যদিয়ে বয়ে গেছে চাঁনখালী খাল। এ দুই উপজেলার অন্যতম যোগাযোগ মাধ্যম চাঁনখালী খালে প্রায় সাড়ে ২৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ১১৮ মিটার লম্বা ও ১০.২৫০ মিটার প্রস্থের একটি অত্যাধুনিক পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে বহুল প্রত্যাশিত এ সেতুর প্রায় ৯০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে।
চলতি বছরের জুন মাসেই সেতু নির্মাণের কাজ শেষে যানবাহন চলাচলের জন্য সেতুটি উন্মুক্ত করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন দোহাজারী সড়ক বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী জামাল উদ্দীন। সেতুর দুই ৩টি স্প্যানে ১৫টি গার্ডার বসানো শেষে এখন চলছে টপস্ল্যাব বসানোর কাজ। পাশাপাশি সেতুর দুই প্রান্তে এপ্রোচ সড়কের কাজও চলছে দ্রুতগতিতে।
জানা গেছে, চাঁনখালী খালের উপর বিদ্যমান বেইলী সেতুটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। যেটি ৯০ এর দশকে ১ বছরের জন্য অস্থায়ীভাবে স্থাপন করা হলেও দীর্ঘ দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে বড় বড় মালবাহী ট্রাক, যাত্রীবাহী বাসসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করে আসছে। ফলে ব্রিজটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। এরমধ্যে বিগত ২০১৫ সালে বর্তমান সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বেইলী সেতুটি পরিদর্শনকালে সেখানে একটি পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন। পরে ২০১৯ সালে ওই স্থানে অত্যাধুনিক পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণের কাজ শুরু করে দোহাজারী সড়ক ও জনপথ বিভাগ।
সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, চাঁনখালী খালের উপর ১৯৯৪ সালে অস্থায়ীভাবে স্থাপিত বেইলী ব্রিজের পাশেই নির্মিত হচ্ছে অত্যাধুনিক পিসি গার্ডার সেতুটি। সেতুটি নির্মাণের পর যানবাহন চলাচলের জন্য উম্মোক্ত করা হলে যোগাযোগ ব্যবস্থায় আরো একধাপ এগিয়ে যাবে চন্দনাইশ ও আনোয়ারা উপজেলা। দুই উপজেলায় উৎপাদিত কৃষি পণ্য, আনোয়ারা অঞ্চলে প্রতিষ্ঠিত বিভিন্ন শিল্পাঞ্চলের মালামাল ও সার কারখানার সার পরিবহন সহজ হবে। তাছাড়া কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিতব্য ট্যানেলের সাথে সরাসরি যুক্ত হবে পুরো দক্ষিণ চট্টগ্রাম। ফলে দক্ষিণ চট্টগ্রামে যোগাযোগ ব্যবস্থায় আসবে আমুল পরিবর্তন।
দোহাজারী সড়ক উপ-বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (অতিরিক্ত দায়িত্ব) জামাল উদ্দীন জানান, ইতিমধ্যে ৩টি স্প্যানের মধ্যে আনোয়ারা প্রান্তের স্প্যানে টপ স্ল্যাব বসানো শেষ হয়েছে। বাকি দুটি স্প্যানে টপ স্ল্যাব বসানোর কাজ চলমান। একই সাথে সেতুর দুই প্রান্তে প্রায় ৫শ মিটার এপ্রোচ সড়ক নির্মাণের কাজও শেষ পর্যায়ে রয়েছে। মে মাসের শেষের দিকে সেতুর শতভাগ কাজ শেষে জুন মাসের শুরুর দিকে যানবাহন চলাচলের জন্য সেতুটি উম্মোক্ত করে দেয়ার আশা করছেন তিনি।