শেষ বিকেলে পথ হারাল বাংলাদেশ

শেষ দিনে জয়ের জন্য প্রয়োজন ২৬৩ রান, রয়েছে ৭ উইকেট

ক্রীড়া প্রতিবেদক | সোমবার , ৪ এপ্রিল, ২০২২ at ৬:০৪ পূর্বাহ্ণ

টাইগারদের সামনে আরেকটা পরাজয় যেন চোখ রাঙাচ্ছে। ডারবান টেস্টের চতুর্থ দিনে দক্ষিণ আফ্রিকাকে তাদের দ্বিতীয় ইনিংসে অলআউট করে দিয়ে যে সম্ভাবনা জাগিয়েছিল টাইগাররা। তা শুরুতেই ম্লান হয়ে যায়। শেষ বিকেলে তিনটি মূল্যবান উইকেট হারিয়ে ভীষণ বিপদে পড়ে গেছে বাংলাদেশ। এখন টেস্টের শেষ দিন বাংলাদেশের মিডল অর্ডারের ওপরই নির্ভর করছে সব। চতুর্থ ইনিংসে ব্যাট করার কঠিন দায়িত্ব তাদের সামনে। ক্রিজে আছেন মুশফিকুর রহিম (০) ও নাজমুল হোসেন শান্ত (৫)। অবশ্য শেষ দিন প্রকৃতিও একটা ফ্যাক্টরে পরিণত হতে পারে।
কিংসমিডে এই স্কোর বা তার বেশি তাড়া করে জেতার নজির খুব একটা নেই। মাত্র ৩টি। সর্বশেষ ২০১৯ সালে শ্রীলংকা ৩০৩ রান তাড়া করে জিতেছিল। আর বাংলাদেশেরও সফল রান তাড়া করে জেতার রেকর্ডটি খুবই পুরনো। ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২১৫ রানের লক্ষ্য টপকেছিল ৪ উইকেট হাতে রেখে। এমন পরিসংখ্যান সামনে রেখে বাংলাদেশের হয়েছে হতাশাজনক শুরু।
গতকাল রোববার ডারবান টেস্টে বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিতীয় ইনিংসে খেলতে নেমে মিরাজ-এবাদতদের বোলিং তোপে ২০৪ রানে গুটিয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। ফলে বাংলাদেশের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ২৭৪ রান। জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই বিদায় নেন সাদমান ইসলাম, মাহমুদুল হাসান জয় ও অধিনায়ক মোমিনুল হক। ৩ উইকেট হারিয়ে ১১ রান সংগ্রহ করে চতুর্থ দিন পার করে বাংলাদেশ। আলোর-স্বল্পতার কারণে চতুর্থ দিন তাড়াতাড়ি শেষ হওয়ার কারণে পঞ্চম দিনে স্থানীয় সময় সকাল ১০ টায় শুরু হবে ম্যাচ। এদিন জয়ের জন্য বাংলাদেশকে করতে হবে ২৬৩ রান। অপরদিকে ৭ উইকেট তুলে নিলেই জয়ের দেখা পাবে স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকা।
দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে দ্বিতীয় ওভারেই উইকেট হারান সাদমান ইসলাম। শূণ্য রানে তার বিদায়ের পর কেশভ মহারাজের বলে বোল্ড হন প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান মাহমুদুল হাসান জয়। ৯ বলে ৪ রান করে বিদায় নেন তিনি। একই ওভারে অধিনায়ক মোমিনুল হককে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলে বিদায় করেন মহারাজ। ৪ বলে ২ রান করে বিদায় নেন বাংলাদেশের অধিনায়ক। আগের ইনিংসে কোনো রান করেননি তিনি।
এর আগে চতুর্থ দিনে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো করে দক্ষিণ আফ্রিকা। তৃতীয় দিনে অপরাজিত থাকা দুই ওপেনার ডিন এলগার ও সারেল এরউইয়ের ব্যাটে স্বাগতিকদের লিড শতরান ছাড়ায়। এরইউকে ফিরিয়ে ৪৮ রানের জুটি ভাঙেন এবাদত। ১৯তম ওভারের তৃতীয় বলে বাংলাদেশ এলবিডব্লিউর আবেদন করলেও আম্পায়ার সাড়া দেননি। তবে রিভিউ নেয়ার পর সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে হয় আম্পায়ারকে। ৮ রানে সাঝঘরে ফেরেন এরউই। সারেল এরউই ফিরে যাওয়ার পর এলগারকে সঙ্গ দেন কিগান পিটারসেন। একপ্রান্তে থেকে থিতু হয়ে ৭৩ বলে ৬ চারে অর্ধশতক তুলে নেন এলগার। এ দুই ব্যাটারের জুটিতে প্রথম সেশনে ১০৫ রান সংগ্রহ করে স্বাগতিকরা। দ্বিতীয় সেশনের শুরুতেই উইকেটের দেখা পান তাসকিন। দুবার জীবন পাওয়া এলগারকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন তিনি। ১০২ বলে ৬৪ রান করে বিদায় নেন প্রোটিয়া অধিনায়ক।
এলগারের বিদায়ের পর বেশিক্ষণ থিতু হতে পারেননি কিগান পিটারসেনও। দীর্ঘ সময় ধরে উইকেট নেওয়ার চেষ্টায় থাকা মেহেদি হাসান মিরাজ ৪৩তম ওভারে এসে তাকে ফেরান। জয়ের হাতে ক্যাচ তুলে ৮৫ বলে ৩৬ রানে বিদায় নেন প্রোটিয়া ব্যাটার। পরের ওভারেই টেম্বা বাভুমাকে নিজের দ্বিতীয় শিকার বানান এবাদত। ইয়াসিরের দারুণ ক্যাচে মাত্র ৪ রানেই প্যাভিলিয়নে ফেরেন বাভুমা। পঞ্চম উইকেটে ব্যাট করতে নামা রায়ান রিকেলটন যখন একপ্রান্ত সামলাতে ব্যস্ত তখন অপরপ্রান্তে থাকা দুই ব্যাটারকে সাজঘরে ফেরান মিরাজ। সাদমানের হাতে ক্যাচ তুলে ৬ রানে বিদায় নেন কাইল ভেরেইনা। এরপর দারুণ ক্যাচে বাভুমাকে ফেরানো ইয়াসিরের হাতে বল তুলে দিয়ে ১১ রানে বিদায় নেন ভিয়ান মুল্ডার। বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি ব্যাট করতে নামা কেশভ মহারাজও। তাসকিনের দ্বিতীয় শিকার হয়ে ৫ রানে বিদায় নেন তিনি। টাইগারদের হয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে তিন উইকেট করে শিকার করেন মিরাজ ও এবাদত। জোড়া উইকেট পান ইনজুরিতে থেকেও বল করা তাসকিন আহমেদ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবরকল সেতুর ৯০ ভাগ কাজ শেষ, জুনে চালু
পরবর্তী নিবন্ধহালদায় সাকার ফিশ, উদ্বেগ