বন্ধুর মোবাইল কেড়ে নিতে নৃশংসতা

কিশোর গ্যাং

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ at ৭:৪২ পূর্বাহ্ণ

মোবাইল ফোন কেড়ে নিতে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে রবিউল আলম (১৭) নামে এক কিশোরের শ্বাসনালি কেটে দিল কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। এই ঘটনায় গত রোববার রাতে গ্যাংয়ের ৩ সদস্যসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পতেঙ্গা মডেল থানার পুলিশ।
পুলিশ জানায়, শুক্রবার রাতে থানাধীন বোট ক্লাব সংলগ্ন কন্টেইনার টার্মিনাল ফ্লাইওভারের উপর এই ঘটনা ঘটে। মূলত একটি মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়ার জন্য
বন্ধুরা বাসা থেকে রবিউলকে ডেকে নিয়ে তাকে জবাই করে হত্যা করতে চেয়েছিল। বর্তমানে রবিউল চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন।
এই ঘটনায় রবিউল আলমের পিতা নুরুল ইসলাম গত ৪ ফ্রেরুয়ারি বাদি হয়ে পতেঙ্গা থানায় মামলা করেন। গত ৬ ফ্রেরুয়ারি রাতে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ঘটনায় জড়িত আরিফ, নাজমুল, শিপন ও সাইফুলকে নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জসহ চট্টগ্রামের পাহাড়তলী, আকবরশাহ এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়। সোহাগ এবং জামসেদ পলাতক আছে। ধৃত আসামিদের মধ্যে আরিফ এবং সাইফুল বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছেন।
ভিকটিম রবিউল আলম বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যাংছড়ি উপজেলার বাইশা ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের মো. নুরুল ইসলামের পুত্র। তারা বর্তমানে আকবরশাহ থানার উত্তর কাট্টলী কমিউিনিটি সেন্টার বালুর মাঠ এলাকায় সোহেলের ভাড়া ঘরে থাকেন। এই ঘটনায় ব্যবহৃত ১টি ছোরা এবং সিএনজিটি উদ্ধার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা হলেন নোয়াখালী জেলার সুবর্ণচরের রসুল আহাম্মদের পুত্র মোকসেদুর রহমান প্রকাশ শিপন (১৭)। কুমিল্লার চান্দিনা থানার উম্বুরপুর, ভূইয়াবাড়ীর মৃত সাইদুল ইসলামের পুত্র মো. নাজমুল হাসান (১৭)। কুমিল্লা জেলার কুমিল্লা সদর দক্ষিণের মো. আদম আলীর পুত্র মো. আরিফুল ইসলাম স্বপন (১৯) ও লক্ষীপুর জেলার চন্দ্রগঞ্জ থানার নলডগী গ্রামের ১৮ নং কুশাখালী, ৯ নং ওয়ার্ডের মৃত রুহুল আমিনের পুত্র মো. সাইফুল ইসলাম (৩২)।
পুলিশ জানায়, আসামি শিপন, নাজমুল, আরিফ, সোহাগ, জামসেদ বন্ধু। ভিকটিম রবিউল শিপনের পরিচিত। শিপন ভিকটিমের স্মার্ট মোবাইল সেটটি তার নিকট রেখে ব্যবহার করতে চায়। রবিউল দিতে রাজি হয়নি। গত ৩ ফেব্রুয়ারি শিপন তার অপর বন্ধুদের নিয়ে পরিকল্পনা করে রবিউলের মোবাইলটি কেড়ে নেওয়ার জন্য। পরিকল্পনা অনুযায়ী নিউ মার্কেট এলাকার ফুটপাতের দোকান থেকে ৩টি ছোরা কিনে। এরপর রাত ১০টার দিকে শিপনের নির্দেশে নাজমুল রবিউলকে ফোন করে পাহাড়তলী বিটাকের সামনে আসতে বলে। রবিউল বাসা থেকে বের হয়ে বিটাক মোড়ে এলে শিপন তার থেকে মোবাইল এবং মানিব্যাগ কেড়ে নেয়। এর পর সিএনজি নিয়ে তারা পতেঙ্গা ফ্লাইওভারের উপরের নামে। এ সময় শিপনের নির্দেশে আরিফ এবং নাজমুল রবিউলের হাত ধরে রাখে। সোহাগ রবিউলের গলায় ধারালো ছোরা দ্বারা পোঁচ মারে। এতে রবিউলের শ্বাসনালী কেটে ফাঁক হয়ে যায়। মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য সোহাগ রবিউলের বুকেও ছুরি মারে। তারা সকলে ভিকটিমকে ফেলে রেখে সিএনজি নিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। গলা কাটা অবস্থায় রবিউল হেটে সামনে গিয়ে পুলিশের সাহায্য চায়। পুলিম তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএক বছরে এক কোটি ডোজ টিকা চট্টগ্রামে
পরবর্তী নিবন্ধসাতকানিয়ায় ৬টিতে নৌকা, ২টিতে বিদ্রোহী ২টিতে স্বতন্ত্র জয়ী