চট্টগ্রাম বন্দরের ভেতর চোর সন্দেহে পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে একজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বিকেলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যায়। বাকি চারজন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তপক্ষের দাবি, নিরাপত্তাকর্মীদের ধাওয়া খেয়ে পালানোর সময় পাঁচজন পড়ে গিয়ে আহত হন। পরে তাদের আটক করে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবশ্য পুলিশ বলছে, পিটুনির কারণে একজন মারা গেছে। নিহতের পরিবারও একই দাবি করেছে। নিহতের নাম মো. শামীম (৩৫)। সে বন্দর থানার ৬ নম্বর রোডে মিয়ার ঘরে পরিবার নিয়ে ভাড়ায় থাকেন। আহত বাকি চারজন হলেন-মোহাম্মদ জসিম (৩০), মো. ফারুক (২৭), শফিকুল ইসলাম (৪০) ও রবিউল ইসলাম (৩৫)। আহতরাও একই এলাকার বাসিন্দা।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওমর ফারুক জানান, সকালে বন্দরের ভেতর অকশন ঘোলার কাছে চুরি করতে আসলে নিরাপত্তাকর্মীরা পাঁচজনকে আটক করে। চুরি করে দেয়াল টপকে পালানোর সময় পড়ে গিয়ে তারা আহত হয়। তাদের বন্দর থানায় নিয়ে গেলে আহত হওয়ায় পুলিশ তাদের গ্রহণ করেনি। তাদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। সেখানে সন্ধ্যায় একজন মারা যান। এ ঘটনায় বন্দর থানায় অভিযোগ দেওয়া হচ্ছে।
চমেক হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই শীলব্রত বড়ুয়া বলেন, আটক পাঁচজনকে পিটুনি দিয়েছে বন্দরের নিরাপত্তা কাজে নিয়োজিত আনসার সদস্যরা। আহত অবস্থায় তাদের হাসপাতালে আনা হয়। এর মধ্যে একজন মারা গেছেন। বাকিরা নিরাপত্তা কর্মীদের হেফাজতে চিকিৎসা নিচ্ছে।
এদিকে গতকাল সন্ধ্যায় হাসপাতালে উপস্থিত হয়ে দেখা গেছে নিহতের স্বজনদের বুকফাটা আহাজারী। আহতদের স্বজনরাও ভিড় করেছেন সেখানে। নিহত শামীমের ভাই মো. মিজান বলেন, ভাই লেবারি করত। এগুলো করতে গিয়ে মাঝে মধ্যে চাল-ডাল চুরি করতো। এগুলো আনসারদের ঘুষ খাওয়ায় নিতো। আমার ভাইয়ের কাছে ১৫ হাজার টাকা ছিল সেগুলোও নিয়ে ফেলেছে। এরপর তাদের মারধর করছে। মারার পর হাসপাতালে নিচ্ছিল না। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কথা বললে প্রতি জন থেকে এক লাখ টাকা করে দাবি করে আনসাররা। আহতরা জানান, সিকিউরিটিকে টাকা দিয়ে মাঝেমধ্যে লোহা নিই। সাইফুল নামে একজন আনসার আজকে পেছন থেকে মারধর করে।
বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নেজাম উদ্দিন বলেন, আমরা শুনেছি, চুরি করতে ঢুকেছিল কয়েকজন। ধাওয়া খেয়ে পালাতে গিয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। আমাদের কাছে কোনো অভিযোগ দেয়নি। কোনো আসামিও তারা জমা করেনি।