বনে পরিযায়ী পাখি খয়রা মাথা শুমচা

সমির মল্লিক, খাগড়াছড়ি | রবিবার , ২৬ মে, ২০২৪ at ৮:০৯ পূর্বাহ্ণ

খয়রা মাথা শুমচা একটি পরিযায়ী পাখি। গ্রীষ্ম এলে বাংলাদেশে দেখা যায় বলে এরা ‘সামার এম্বেসেডর’ নামে পরিচিত। বেশ কয়েক বছর ধরে পরিযায়ী এই পাখি গ্রীষ্মকালে এ দেশে আসে। গত তিন বছর ধরে পাখিটির নিয়মিত দর্শন মিলছে। এটি দুর্লভ পরিযায়ী পাখি। কমই দেখা মিলে। প্রজননের জন্য গ্রীষ্মকালে এরা বাংলাদেশে আসে। গত বছর এরা প্রচুর পরিমাণে খাগড়াছড়িতে এসেছিল। চলতি গ্রীষ্মে এখন পর্যন্ত পাঁচটি স্পটে এদের দেখা মিলেছে।

পরিযায়ী পাখিটি প্রতিবছর পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়িতে দেখা মিলেছে। পাহাড়ি বনে এটি বংশবৃদ্ধি করে। বাচ্চারা উড়তে শেখার পর শুমচারা এখানে স্থায়ী আবাস গড়ে না। অন্যত্র চলে যায়। এক জোড়া শুমচা ‘হুইহুই’ বনে নীরবতা ভাঙে। যেমন সুন্দর সুর, দেখতেও তেমন সুন্দর। ঘন ঝোঁপের ভেতরে উড়ে বেড়াচ্ছে পাখিটি। খয়রা মাথা শুমচে শালিকের চেয়ে ছোট। এরা লম্বায় ১৯ সেমি। এদের দেহ সবুজ। মাথার চাঁদি খয়েরি। ঘাড় কালচে খয়েরি। গলা ও গাল কালো। চোখ কালচে বাদামি। এদের ঠোঁট কালো। ডানায় উজ্জ্বল নীল। পা কালচে। শুমচার বাচ্চাদের রং অনেকটা বিবর্ণ। পেট বাদামি। চোখের রং বাদামি।

খয়রামাথা শুমচার ইংরেজি নাম ঐড়ড়ফবফ ঢ়রঃঃধ এবং বৈজ্ঞানিক নাম ঝড়ৎফরফধ। খয়রা শুমচা সাধারণত চিরসবুজ বনের তলদেশে পোকামাকড় খুঁজে বেড়ায়। এরা বনের মধ্যে বাসা বাঁধে। সর্বোচ্চ দুই থেকে পাঁচটি ডিম দেয়।

বাংলাদেশ ছাড়া ভারত, ইন্দোনেশিয়া, নেপাল, ভুটান, মালেশিয়া, চীন, ভিয়েতনাম, মিয়ানমারসহ পৃথিবীর জুড়েই এদের আবাস। ২০০৯ সালে এশিয়াটিক সোসাইটি কর্তৃক প্রকাশিত ‘বাংলাদেশের উদ্ভিদ ও প্রাণী কোষ’ বইয়ে শুমচা পাখিকে বাংলাদেশে দুর্লভ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণবিষয়ক সংস্থা (আইইউসিএন) এটিকে সারা বিশ্বে ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত প্রাণী হিসেবে উল্লেখ করেছে। বাংলাদেশের ১৯৭৪ ও ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইনে শুমচা প্রজাতিটি সংরক্ষিত।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপ্রথম শিল্পগ্রুপ হিসেবে সর্বজনীন পেনশন স্কিমের আওতায় কেএসআরএম
পরবর্তী নিবন্ধচন্দনাইশে এসএসসি ৯১ব্যাচের মিলনমেলা