বঙ্গবন্ধু আমাদের সঠিক গন্তব্যে পৌঁছার স্বপ্ন দেখিয়েছেন

বিজয় মঞ্চে আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ১৫ ডিসেম্বর, ২০২১ at ৮:২৪ পূর্বাহ্ণ

দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক বলেছেন, যে স্বপ্ন সঠিক গন্তব্যে পৌঁছার পথ দেখায়, সেটিই হলো বাস্তব স্বপ্ন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদেরকে সেই স্বপ্নই দেখিয়েছেন।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা মঞ্চে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, দেশ স্বাধীন হওয়ার পরদিন ১৭ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম থেকে সর্বপ্রথম সাহসিকতার সাথে আজাদী পত্রিকা প্রকাশিত হয়। শীর্ষ সংবাদটির শিরোনাম ছিল ‘জয় বাংলা, বাংলার জয়’। অনেকে প্রশ্ন করেন, কীভাবে এ অসম্ভবকে সম্ভব করেছিলাম সেদিন? আমি বলি, চট্টগ্রাম সবসময় এগিয়ে থাকে। আমরা চট্টগ্রামবাসী চাইলেই অসম্ভবকে সম্ভব করতে পারি। যে কারণে ব্রিটিশ আমলে মাস্টারদা সূর্য সেনের নেতৃত্বে বিপ্লবীরা এ চট্টগ্রামকে তিন দিন স্বাধীন রেখেছিলেন। স্বাধীনতার প্রথম ঘোষণা হয়েছিল এই চট্টগ্রামের কালুরঘাট সংলগ্ন চান্দগাঁও বেতার কেন্দ্র থেকে।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, তোমরা আমাদের ভবিষ্যৎ নও, আমাদের বর্তমান। কারণ ভবিষ্যতে কী হবে তা আমরা কেউ জানি না। বর্তমানে দাঁড়িয়ে তোমরা যদি দেশের কল্যাণে কাজ করো, তবে জাতি উপকৃত হবে। তিনি বলেন, জীবন কখনো থেমে থাকে না। আজ যে আছে কাল সে থাকবে না। বর্তমান বিশ্বে অসম্ভব বলে কোনো শব্দ নেই। আমরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে দেখে শিখতে পারি, গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার খোকা কীভাবে তিলে তিলে আন্দোলন সংগ্রাম করে বঙ্গবন্ধু হয়েছিলেন। তাঁর অভীষ্ট লক্ষ্য ছিল, এ দেশকে পরাধীনতার গ্লানি থেকে মুক্ত করা। তোমরা শারীরিকভাবে বেড়ে উঠবে, কিন্তু ছেলেবেলার কুসুম-কোমল মনটা যেন রয়ে যায়। জীবনটাকে এমনভাবে গড়ে তুলতে হবে, যেন জীবন নামের এই নোটবুকটা পড়ে পরবর্তী প্রজন্ম উপকৃত হয়। তিনি শিশু-কিশোরদের শিক্ষামূলক কয়েকটি প্রশ্ন করেন। এর জন্য পুরস্কারও প্রদান করেন।
মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা পরিষদের কো-চেয়ারম্যান ডা. সরফরাজ খান বাবুলের সভাপতিত্বে এবং প্রভাষক মিনু মিত্রের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ডিন প্রফেসর ড. সেকান্দর চৌধুরী, প্রফেসর ড. সুকান্ত ভট্টাচার্য ও কবি কামরুল হাসান বাদল। স্বাগত বক্তব্য দেন মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা পরিষদের মহাসচিব মোহাম্মদ ইউনুছ।
প্রফেসর ড. সেকান্দর চৌধুরী বলেন, ১৯৭১ সালের এই দিনে বিজয়ের আগ মুহূর্তে ঘটে যায় এক নির্মম হত্যাযজ্ঞ। আমাদের সেই ইতিহাস ভুলে গেলে চলবে না। ইতিহাস বিকৃতি থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত রাখতে হবে নতুন প্রজন্মের জন্য।
তিনি প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ করেন, বায়ান্নের ভাষা আন্দোলন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকালীন দৈনিক আজাদী, কোহিনূর ইলেকট্রিক প্রেস, ইঞ্জিনিয়ার আবদুল খালেক, অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ এবং বর্তমান সম্পাদক এম এ মালেকের সাহসী ভূমিকার যথাযথ মূল্যায়ন করতে হবে।
প্রফেসর ড. সুকান্ত ভট্টাচার্য বলেন, দেশে সত্যিকার অসাম্প্রদায়িকরা আজ কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। মনে-প্রাণে কথায়, কাজে চেতনাধারী মানুষ হারিয়ে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে তরুণদের এগিয়ে আসতে হবে। তারাই এ ঘুণে ধরা সমাজ বদলে দেবে।
কবি ও সাংবাদিক কামরুল হাসান বাদল বলেন, আমার বাংলাদেশ হবে ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশ। আমার বাংলাদেশ হবে সমাজতান্ত্রিক বাংলাদেশ।
পরে প্রতিযোগীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন অতিথিবৃন্দ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধতদন্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজি দিতে গিয়ে হামলার শিকার ভিকটিম
পরবর্তী নিবন্ধহাসপাতালে ভর্তি ওবায়দুল কাদের শঙ্কামুক্ত