অমর একুশে বইমেলা–২০২৪ আয়োজনে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজ সংলগ্ন মাঠ (উচ্ছেদ হওয়া শিশু পার্ক এর জায়গা) ব্যবহারের অনুমতি পায়নি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)। তাই সংস্থাটি এবার বইমেলার ভেন্যু হিসেবে সিআরবি শিরীষতলার মাঠকে চূড়ান্ত করেছে। গতকাল এ বিষয়ে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল ও চসিকের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়।
২০১৯ সাল থেকে নগরের এম এ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমনেশিয়াম মাঠে বইমেলার আয়োজন করে আসছিল চসিক। খেলার মাঠ হওয়ায় এখানে বইমেলা আয়োজনে আপত্তি জানায় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক। তাই বিকল্প হিসেবে শিশু পার্ক এর জায়গা এবং সিআরবি শিরীষতলা নিয়ে পরিকল্পনা করে চসিক। এর মধ্যে শিশু পার্ককের মাঠটি বরাদ্দ চেয়ে জেলা প্রশাসন ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করে চসিক। গত রোববার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে মাঠটি বরাদ্দ দেয়া হবে না বলে চসিককে জানিয়ে দেয়। তাই দ্বিতীয় বিকল্প শিরীষতলাকে বেছে নেয় সংস্থাটি। অবশ্য শিরীষতলা বরাদ্দ চেয়ে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের জিএম’কে চলতি মাসের শুরুতে চিঠি দিয়েছিল চসিক।
এদিকে গতকাল সোমবার শিরীষতলার মালিক রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের জিএম (ভারপ্রাপ্ত) এর মো. নাজমুল ইসলাম এর সঙ্গে বৈঠক করেন চসিকের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং প্রকাশক ও লেখকরা। সেখানে শিরীষতলা ব্যবহারের বিষয়ে অনুমোদন দেয়ার আশ্বাস দেন নাজমুল ইসলাম। দুয়েকদিনের মধ্যে অফিসিয়ালি অনুমোদন দেয়া হবে। বৈঠকে অংশ নেন বইমলার আহ্বায়ক ও চসিক কাউন্সিলর ড. নিছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু, চট্টগ্রাম সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদ এর সাধারণ সম্পাদক আলী প্রয়াস, প্রকাশক শাহ আলম নিপু, কবি ওমর কায়সার, কবি শুকলাল দাশ, সিআরবি পূর্বাঞ্চলের স্টেট অফিসার সুজন চৌধুরী, চারুশিল্পী দীপক দত্ত এবং সিটি মেয়রের পিএস আবুল হাশেম।
বইমেলার আহবায়ক ড. নিছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু আজাদীকে বলেন, বইমেলার ভেন্যু হিসেবে সিআরবি চূড়ান্ত হয়েছে। আমরা শিশু পার্কের মাঠ চেয়েছিলাম। গতকাল প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় মাঠটি দিবে না বলে দিয়েছে।
জানা গেছে, বইমেলা উপলক্ষে গত ১৪ জানুয়ারি টাইগারপাসস্থ নগর ভবনের সম্মেলন কক্ষে মেয়র, লেখক, প্রকাশক, মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন পেশাজীবীর অংশগ্রহণে একটি সভা হয়। সেখানে চারুশিল্পী দীপক দত্ত উল্লেখ করেন, সিআরবিতে ১৭৫ টা স্টল দেয়া সম্ভব। সেখানে ৪২ হাজার স্কয়ার ফিট জায়গা আছে। জিমনেশিয়ামে ৩৮ হাজার স্কয়ার ফিট। শিশু পার্কের মাঠ পুরোটা নিলেও সিআরবির সমান হবে না।
তবে স্টল আরো কমানো হবে বলে আজাদীকে জানান কাউন্সিলর ড. নিছার উদ্দিন। তিনি বলেন, ১৪০–১৫০টি স্টল করব। প্রবেশ এবং বের হওয়ার জন্য যথেষ্ট পরিমাণ জায়গা রাখব। সেখানে বঙ্গবন্ধু কর্নার, লেখক আড্ডাসহ সংশ্লিষ্ট কারণে আরো কিছু স্পেস যাবে। স্টল বেশি করলে ঘিঞ্জি টাইপের হয়ে যাবে।
চসিক সূত্রে জানা গেছে, বইমেলা শুরু হবে আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি। ২৩ দিনব্যাপি এ বইমেলা শেষ হবে ২ মার্চ। মেলার আয়োজক চসিক হলেও চট্টগ্রামের সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদ, নাগরিক সমাজ, বীর মুক্তিযোদ্ধা, সাহিত্যিক, লেখক, বুদ্ধিজীবী এবং অন্যান্য শিল্প–সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতরাই সম্মিলিতভাবে এ মেলা বাস্তবায়ন করবে।