ফ্রান্স এবং ইংল্যান্ড বারুদ লড়াই আজ

স্পোর্টস ডেস্ক | শনিবার , ১০ ডিসেম্বর, ২০২২ at ৫:০৫ পূর্বাহ্ণ

বিশ্বকাপের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স। আর ইউরো কাপের রানার্স আপ ইংল্যান্ড। ইউরোপের দুই ফুটবল সুপার পাওয়ার। ইউরোপের সেরা দুই লিগ এই দুই দেশে। যেন আন্তর্জাতিক ফুটবলারদের সবচাইতে বড় হাট। কিন্তু বিশ্বকাপে ফ্রান্স দুইবার শিরোপা জিতলেও সেই ১৯৬৬ সালের পর স্বপ্ন পূরণ হয়নি আর ইংলিশদের। অথচ বরাবরই সেরা দল নিয়ে ফেবারিটের তকমা লাগিয়ে বিশ্বকাপে খেলতে যায় ইংলিশরা। কিন্তু ফিরে স্বপ্ন ভঙ্গ হয়ে। গতকাল যেমন ফিরেছে সেমিফাইনাল থেকে। আজও স্বপ্ন ভঙ্গ হবে এক দলের। হয় বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের না হয় সাবেকদের। বিশ্ব ফুটবলে এই দু দল একে অপরের বেশ পরিচিত। বলা যায় একেবারে চির চেনা। পরস্পরের বিপক্ষে ত্রিশের বেশি ম্যাচ খেলে ফেলেছে ফ্রান্স ও ইংল্যান্ড। তবে বিশ্বকাপে দুই দলের দেখা হয়েছে মাত্র দুইবার। সবশেষ দেখাটি হয়েছিল ৪০ বছর আগে। কাতার আসরে এবার মুখোমুখি হতে যাচ্ছে দল দুটি। সেমিফাইনালে জায়গা করে নিতে আজ শনিবার মাঠের লড়াইয়ে নামবে ফ্রান্স ও ইংল্যান্ড। আল খোরের আল বাইত স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় রাত একটায় শুরু শিরোপাধারী ও সাবেক চ্যাম্পিয়নদের এই দ্বৈরথ। ফরাসিদের বিপক্ষে বিশ্বকাপে শতভাগ সফল ইংলিশরা। দুই দলের মুখোমুখি লড়াইয়েও প্রায় দ্বিগুণ ব্যবধানে এগিয়ে তারা। তাই আজকের ম্যাচে আশা জাগাচ্ছে ইংলিশদের।

এ বারের বিশ্বকাপে দু দল যে চারটি ম্যাচ খেলেছে তাতে বেশ সফল দু দলই। ইংল্যান্ড অজেয় থেকেই এসেছিল নক আউট পর্বে। আর ফরাসিরা এসেছিল শেষ ম্যাচে হেরে। তবে নক আউট পর্বে দু দলই জিতেছে বেশ সহজে। ইংলিশরা হারিয়েছে ৩০ গোলে যুক্তরাষ্ট্রকে। আর ফ্রান্স হারিয়েছে ৩১ গোলে পোল্যান্ডকে। তাই দু দলের লড়াইটা যে সহজ হবেনা সেটা বেশ ভালই অনুমেয়। চলতি বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত ৪ ম্যাচে ১২ গোল করেছে ইংল্যান্ড। যৌথভাবে কোনো বড় টুর্নামেন্টে যা তাদের সর্বোচ্চ। ২০১৮ সালে রাশিয়া আসরে সেমিফাইনালে ওঠার পথেও ১২ গোল করেছিল তারা। অপরদিকে ফরাসি তারকা কিলিয়ান এমবাপে এখন পর্যন্ত ৪ ম্যাচ খেলে পাঁচ গোল করেছেন। এই ফরোয়ার্ড ছাড়িয়ে গেছেন গত আসরে ফ্রান্সের শিরোপা জয়ের পথে করা ৪ গোল। তাই নজরে রাখতে হবে এই স্ট্রাইকারকে। বড় কোন টুর্নামেন্টে ইংল্যান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ গোল এখন হ্যারি কেইনের। সেনেগালের বিপক্ষে জালের দেখা পেয়ে ইংলিশ অধিনায়ক ছাড়িয়ে গেছেন গ্যারি লিনেকারকে।

২০০৬ সালে ব্রাজিলের পর শিরোপাধারী প্রথম দল হিসেবে কোয়ার্টারফাইনালে খেলছে ফ্রান্স। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের একটি করুন পরিনতি থাকলেও ফ্রান্স এবারে সেটা উৎরাতে পেরেছে। ২০১০ আসরে চ্যাম্পিয়ন হিসেবে খেলতে নামা ইতালি বিদায় নিয়েছিল গ্রুপ পর্ব থেকে। আবার ওই আসরের চ্যাম্পিয়ন স্পেন ২০১৪ সালে বিদায় নিয়েছিল গ্রুপ পর্ব থেকে। ২০১৪ আসরের শিরোপা জয়ী জার্মানিরও গত আসরে হয় একই অবস্থা। সেদিক থেকে এগিয়ে ফ্রান্স। আজ তারা কোয়ার্টার ফাইনালে। ইংল্যান্ড ও ফ্রান্স এখন পর্যন্ত ৩১ ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে। যেখানে ১৭ ম্যাচ জিতে অনেকটা এগিয়ে আছে ইংলিশরা। ফরাসিদের জয় কেবল ৯টিতে। তবে ইংল্যান্ডের ১০ জয়ই ১৯৫০ সালের আগে। এই শতকে মাত্র দুইবার জিতেছে তারা। আর হেরেছে ৪ ম্যাচে। সেদিক থেকে বেশ এগিয়ে ফ্রান্স। এছাড়া বিশ্বকাপে দুইবার দেখা হয়েছে এই দুই দলের। দুইবারই জয়ের স্বাদ পেয়েছে ইংল্যান্ড। আর সেটাও বর্তমান দলের ফুটবলারদের জন্মের আগে। ১৯৬৬ সালে নিজেদের প্রথম ও একমাত্র শিরোপা ঘরে তোলার পথে গ্রুপ পর্বে ফরাসিদের ২০ গোলে হারিয়েছিল ইংলিশরা । পরের জয়টা সেই ১৯৮২ আসরে । আর সে ম্যাচে ইংলিশদের জয় ৩১ গোলে। এখন প্রেক্ষাপট ভিন্ন। দু দলেই এখন টগবগে তারুন্য। আর দু দলই এখন বিশ্বের অন্যতম সেরা দল। তাই বিশ্বকাপে শেষ চারে যাওয়ার লড়াইটাও যে বারুদ হবে তেমনটি আঁচ করাই যায়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধইংল্যান্ডের গতি ভাবাচ্ছে দেশমকে
পরবর্তী নিবন্ধকোচ হিসেবে মূল্যায়ন করা হয় না সাউথগেটকে