সীতাকুণ্ডে গৃহবধূ হত্যাকাণ্ডের ১২ ঘণ্টার মাথায় মূল রহস্য উদঘাটন করেছে থানা পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে চট্টগ্রাম জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত–২ এর বিচারক এএইচএম জোনাইদের আদালতে নিজে ছুরি চালিয়ে স্ত্রী সায়মাকে হত্যার স্বীকারোক্তি দিয়েছেন ঘাতক স্বামী দিদারুল আলম। সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তোফায়েল আহমেদ বলেন, আদালতে দেওয়া ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে দিদারুল আলম জানিয়েছেন, তিনি ফটিকছড়ির একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে চাকরি করেন। সেখানে একজনের সঙ্গে পরকিয়ায় প্রেমে জড়িয়ে পড়েন। বিষয়টি তার স্ত্রী জানতে পারার পর সেও তার এলাকার এক ছেলের সঙ্গে পরকিয়ায় জড়িয়ে পড়ে। এরপর থেকে স্বামীকে উপেক্ষা করতে থাকে। এতে প্রায়ই উভয়ের মধ্যে বাকবিতণ্ডা লেগে থাকতো। এ থেকে দিদার স্ত্রীকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেন। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী মঙ্গলবার রাতে অগোচরে বাড়িতে এসে স্ত্রীকে মুঠোফোনে বাড়ির পার্শ্ববর্তী পুকুর পাড়ে ডেকে আনেন। সেখানে ধারালো ছুরি দিয়ে স্ত্রীর গলা কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করে পুনরায় তার কর্মস্থলে চলে যান। সেখান থেকে বুধবার সকালে এসে পরিকল্পিত এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনাকে ডাকাতরা ঘটিয়েছে বলে প্রচারের মাধ্যমে নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন।
ওসি তোফায়েল আহমেদ আরও জানান, হত্যাকাণ্ডের খবর পেয়ে বুধবার সকালে নিহত গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধারের পাশাপাশি ঘটনাস্থল থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরিসহ বেশ কিছু আলামত সংগ্রহ করা হয়। এই সময় খুনে জড়িত সন্দেহে গৃহবধূ সায়মা আক্তারের স্বামী দিদারুল আলম ও তার দুই ননদকে আটক করে তারা। এ ঘটনায় বুধবার রাতে নিহতের পিতা বেলাল হোসেন স্বামী দিদারুল আলম ও ছোট ননদ রেশমা আক্তারকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এর আগে থানায় জিজ্ঞাসাবাদে দিদারুল আলম জানিয়েছিলেন– ডাকাতরা তার স্ত্রীকে গলাকেটে হত্যা করেছে। কিন্তু যেসকল আলামত জব্দ হয়েছে তাতে মিলেছে ভিন্ন তথ্য। পরবর্তীতে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে দিদার তার স্ত্রীকে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে বলে স্বীকার করেন। ওসি আরো বলেন, দিদার জানিয়েছে খুনে ব্যবহৃত ছুরিটি তিনি ফটিকছড়ি থেকে কিনে এনেছিলেন। এরপর ছোট বোন রেশমা আক্তারের সঙ্গে মিলে পরিকল্পনা করে স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যা করেন।