দীর্ঘদিন নিম্নমুখী থাকার পর আবারও বাড়ছে ভোজ্যতেলের দাম। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে সয়াবিন ও পাম তেলের দাম মণপ্রতি বেড়েছে সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা পর্যন্ত। ব্যবসায়ীরা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে এখনো ভোজ্যতেলের বাজার চড়া। প্রতিদিনই বুকিং দর অল্প অল্প করে বাড়ছে। দাম বৃদ্ধির কারণে দেশের বাজারে সয়াবিন ও পাম উভয় তেলের দাম স্থির থাকছে না। তবে ভোক্তারা বলছেন, দেশে সয়াবিন তেলের মিল রয়েছে হাতে গোনা। কাস্টমসের তথ্যমতে, দেশে প্রচুর পরিমাণ সয়াবিন উৎপাদন হয়েছে। তাই এই মূহূর্তে সয়াবিনের দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই।
গতকাল খাতুনগঞ্জের পাইকারী বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত এক মাস আগে প্রতি মণ (৩৭ দশমিক ৩২ কেজি) পাম তেল বিক্রি হয়েছে ৫ হাজার ১০০ টাকায়। বর্তমানে ৫০০ টাকা বেড়ে গিয়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৫ হাজার ৬০০ টাকায়। অন্যদিকে একই সময়ে প্রতি মণ সয়াবিন তেল বিক্রি হয়েছে মণপ্রতি ৫ হাজার ৬০০ টাকায়, বর্তমানে মণপ্রতি ৪০০ টাকা বেড়ে গিয়ে বিক্রি হচ্ছে ৬ হাজার টাকায়।
খাতুনগঞ্জের কয়েকজন তেল ব্যবসায়ী জানান, খাতুনগঞ্জের বাজারে পণ্য বেচাকেনা ও লেনদেনে যুগ যুগ ধরে কিছু প্রথা চালু আছে। নিজেদের সুবিধার অনেক প্রথা আছে যেগুলো আবার আইনগতভাবেও স্বীকৃত নয়। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ডেলিভারি অর্ডার (ডিও) স্লিপ। তেল কিংবা অন্য কোনো পণ্য কেনাবেচায় ডিও বেচাকেনার মাধ্যমে বিভিন্ন আগাম লেনদেন হচ্ছে। দেখা যায়, পণ্য হাতে না পেলেও ওই স্লিপটিই বেচাকেনা হচ্ছে। কোনো কোম্পানি বাজার থেকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ পণ্যের ডিও কিনে নেয়। যে দরে ডিও কেনা হয়, তার বাজার দর যদি বেড়ে যায়, তখন পণ্যটি ডেলিভারি দিতে তারা গড়িমসি করে। আবার দেখা যায়, কোম্পানির পণ্যই আসেনি কিন্তু ডিও কিনে রেখেছেন অনেক বেশি। এর ফলেও কোম্পানি বাজারে পণ্য ডেলিভারি দিতে পারে না। ফলে এসব পণ্যের দামও নিয়ন্ত্রণে থাকে না। এক্ষেত্রে তেল ও চিনির ডিও বেচাকেনা বেশি হয়। বলা যায় ডিও কারসাজির কারণে মাঝে মাঝে পণ্যের দাম আকাশচুম্বি হয়ে উঠে। এই সুযোগে কিছু মৌসুমী ব্যবসায়ী কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়।
জানতে চাইলে চাক্তাই খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর আলম দৈনিক আজাদীকে বলেন, আমাদের দেশের ভোজ্যতেলের বাজার আন্তর্জাতিক বাজারের ওপর নির্ভরশীল। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধি পেলে সেই প্রভাব দেশের বাজারেও পড়বে। এখানে সিন্ডিকেট কারসাজির কিছু হচ্ছে না।