ফেব্রুয়ারিতে রেমিট্যান্স কমে ২১ মাসে সর্বনিম্ন

| বুধবার , ২ মার্চ, ২০২২ at ৬:২৬ পূর্বাহ্ণ

প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সে নগদ সহায়তা বাড়িয়েও খুব বেশি সফলতা মিলছে না; উল্টো সদ্য সমাপ্ত ফেব্রুয়ারিতে তা ২১ মাসের মধ্যে সর্বনিম্নে নেমে গেছে। বিভিন্ন দেশে থাকা প্রবাসীরা গত মাসে ১৪৯ কোটি ৬০ লাখ ডলার দেশে পাঠিয়েছেন। এ আয় গত বছরের একই মাসের তুলনায় প্রায় ১৬ শতাংশ কম। এর চেয়ে কম রেমিট্যান্স এসেছিল ২০২০ সালের এপ্রিলে। ওই মাসে প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছিলেন ১০৯ কোটি ২৯ লাখ ডলার। খবর বিডিনিউজের।
শুধু একক মাসে নয়, চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আট মাসের মোট রেমিট্যান্সও কমে গেছে। এই আট মাসে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ১ হাজার ৩৪৪ কোটি (১৩ দশমিক ৪৪ বিলিয়ন) ডলার। আট মাসের এই রেমিট্যান্স গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ১৯ দশমিক ৪৫ ভাগ কম। গত অর্থবছরের ওই সময়ে এসেছিল ১ হাজার ৬৬৮ কোটি ৭২ লাখ ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের সবশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত মাসে আসা রেমিট্যান্স গত বছরের ফেব্রুয়ারির তুলনায় ২৮ কোটি ৪৫ লাখ ডলার কম। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে এসেছিল ১৭৮ কোটি ৫ লাখ ৯০ হাজার ডলার। আর চলতি বছরের জানুয়ারিতে এসেছিল ১৭০ কোটি ৪৫ লাখ ডলার।
রেমিট্যান্সে নিম্নমুখী প্রবণতার পেছনে দুটি কারণ থাকতে পারে বলে মনে করছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, মূলত দুটি কারণে রেমিট্যান্স কমতে পারে। একটি হচ্ছে ফেব্রুয়ারি অন্যান্য মাসের তুলনায় কিছুটা ছোট হওয়ায় দুই থেকে তিন দিন কম পাওয়া যায়। তাই ফেব্রুয়ারিতে অন্যান্য মাসের তুলনায় কম আসতেই পারে। আরেকটি কারণ হতে পারে কোভিড-১৯ মহামারী থেকে বিশ্ব প্রায় স্বাভাবিক অবস্থায় চলে আসায় এখন মানুষের চলাচল বেড়ে গেছে। বাংলাদেশি প্রাবসীদেরও চলাচল প্রায় স্বাভাবিক হয়েছে। এই কারণে এখন নানা চ্যানেলে টাকা পাঠানোর সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
তিনি বলেন, দেশে মহামারীর সময়ই সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে। হতে পারে ওই সময়ে প্রবাসীরা চলাফেরায় বিধিনিষেধ থাকায় ব্যাংকিং ছাড়া হুণ্ডিসহ অন্যান্য সুযোগ কমে গিয়েছিল। হতে পারে এখন আবার স্বাভাবিক সময় ফিরে আসায় অবৈধ চ্যানেলগুলো আবারও সক্রিয় হয়ে উঠেছে।
ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠানো উৎসাহিত করতে সরকার জানুয়ারি থেকে প্রবাসীদের অর্থ পাঠানোতে প্রণোদনা দশমিক ৫ শতাংশ বাড়িয়ে আড়াই শতাংশ করে। এ ঘোষণায় জানুয়ারিতে প্রবাসীদের পাঠানো আয় বাড়লেও তা পরের মাসেই কমে গেল।
ব্যাংকাররা বলছেন, খোলা বাজারে প্রতি ডলারের দাম বেড়ে ৯০ টাকা হওয়ার কারণেও অনেকে বিনিময় হারের বাড়তি সুবিধা নিতে ব্যাংকের বদলে বিকল্পভাবে দেশে পাঠাচ্ছেন। এর প্রভাবও পড়েছে রেমিট্যান্স প্রবাহে। রেমিট্যান্সের সবশেষ পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ক্রমান্বয়ে রেমিট্যান্সের পরিমাণ কমেছে। জুলাই মাসের ১৮৭ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স ডিসেম্বরে এসেছে ঠেকেছে ১৬৩ কোটিতে। বছরের শুরুতে নগদ প্রণোদনা বাড়ানোর ঘোষণায় জানুয়ারিতে বেড়ে ১৭০ কোটি ৪৫ লাখ ডলার হলেও পরের মাসেই তা কমে গেল।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএবার পিকআপ মালিক গ্রেপ্তার
পরবর্তী নিবন্ধদুই মামলা, চার ফুট দূরত্বে দুজনকে দাহ