ফিরিঙ্গিবাজারে পুড়ে গেল শতাধিক ঘর

টেকপাড়া বস্তি ও এয়াকুব নগর বস্তিতে ভয়াবহ আগুন ১১ হাজার ভোল্টের বৈদ্যুতিক তারের সাথে নারিকেল পাতা স্পার্ক করে আগুনের সূত্রপাত : ফায়ার সার্ভিস

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ১৬ এপ্রিল, ২০২৪ at ৬:১৩ পূর্বাহ্ণ

নগরীর ফিরিঙ্গি বাজারে টেকপাড়া বস্তি ও লাগোয়া এয়াকুব নগর বস্তিতে ভয়াবহ আগুনে পুড়ে গেছে প্রায় শতাধিক ঘর। গতকাল সোমবার বেলা ১ টা ২০ মিনিটে ওই দুই বস্তিতে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লাগে বলে জানান ফায়ার সার্ভিস চট্টগ্রাম অঞ্চলের কর্মকর্তারা। ১১ হাজার ভোল্টের বৈদ্যুতিক তারের সাথে নারিকেল পাতার সংঘর্ষে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের নন্দনকানন, লামারবাজার, চন্দনপুরা ও আগ্রাবাদ ফায়ার স্টেশনের নয়টি ইউনিট দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রায় এক ঘণ্টা পর ২ টা ২০ মিনিটের দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ততক্ষণে টেকপাড়া ও এয়াকুব নগর বস্তির গরীবঅসহায় পরিবার গুলোর সব কিছু পুড়ে নিঃস্ব হয়ে যায়। এসব পরিবারের মানুষের বুক ফাটা আর্তনাদে পুরো এলাকার পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে। অনেক শিক্ষার্থীর বইপত্র সব পুড়ে গেছে। বই পুড়ে যাওয়ায় অনেক শিক্ষার্থীকে কান্না করতেও দেখা যায়। এই ব্যাপারে ফায়ার সার্ভিসের চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপ পরিচালক দীনমনি শর্মা আজাদীকে বলেন, সোমবার বেলা ১টা ২০ মিনিটে ফিরিঙ্গি বাজারে টেকপাড়া বস্তি ও লাগোয়া এয়াকুব নগর জেলে বস্তিতে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। এই দুটি বস্তির উপর দিয়ে ১১ হাজার ভোল্ডের বৈদ্যুতিক তার গেছে। এই ১১ হাজার ভোল্ডের বৈদ্যুতিক তারের সাথে নারিকেল গাছের পাতায় সংঘর্ষে স্পার্ক করে আগুন লেগেছে। বস্তির সব গুলো ঘর টিনের ছাউনি। তীব্র গরমের সাথে বাতাসের কারণে আগুন মুহূর্তের মধ্যে বস্তিতে ছড়িয়ে পড়ে। খবর পাওয়ার সাথে সাথে আমাদের নন্দনকানন, লামারবাজার, চন্দনপুরা ও আগ্রাবাদ ফায়ার স্টেশনের নয়টি ইউনিট প্রায় এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। পাশে নদী থাকায় পানির কোনো সংকট ছিল না। এই কারণে আমরা দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছি। আগুনে উভয় বস্তির প্রায় ৭০ কক্ষ পুড়ে গেছে। এই দুই বস্তির মাঝখানে একটি ৪ তলা বিল্ডিং ছিলএই বিল্ডিংয়ের আসবাবপত্র গুলো পুড়ে গেছে। তবে কি পরিমান ক্ষতি হয়েছে তা এখনো তদন্ত চলছে। তদন্ত করে বলা যাবে।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ফিরিঙ্গি বাজার ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লব আজাদীকে বলেন, আমার এলাকায় টেকপাড়া আর এয়াকুব নগর বস্তিতে এই আগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। টেকপাড়ার শেষ মাথায় এয়াকুব নগর, দুটোই লাগানো। এই কারণে দুটো বস্তিতে আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। এয়াকুব নগর বস্তির ৬৫টি ঘর এবং টেকপাড়া বস্তির ২৮টি ঘর পুড়ে গেছে। ফয়ার সার্ভিসের লোকজন জানিয়েছেন নারিকেল পাতার সাথে বিদ্যুতের তারের শর্ট সার্কিট হয়ে আগুন লেগেছে। আগুনে প্রায় শতাধিক ঘর পুড়ে গেছে। এটা আওয়ামী লীগ নেতা রাজু সাহেবের (দক্ষিণ জেলা আওয়ামীলীগ নেতাবাঁশখালীর সৈয়দুল মোস্তফা চৌধুরী রাজু) বস্তি। এখানে নিম্ন আয়ের মানুষেরা থাকেন।

মেয়র মহোদয় এবং জেলা প্রশাসকের সাথে আমি কথা বলেছি। জেলা প্রশাসক মহোদয় ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিটি পরিবারকে ২০ কেজি করে চাল এবং ২ হাজার করে টাকা দিয়েছেন। মেয়র সাহেব এসেছেন, তিনি প্রতিটি পরিবারকে ৩ হাজার টাকা, টিন, শাড়ি এবং লুঙ্গি দিবেন বলেছেন। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর জন্য রাতে খাবারের ব্যবস্থা করেছি। স্থানীয়রা জানান, তীব্র গরমের সাথে বাতাস থাকায় আগুন মুহূর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। কেউ কিছু বের করতে পারেননি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত
পরবর্তী নিবন্ধদুবাইয়ের পথে এমভি আবদুল্লাহ