ফটিকছড়ি বনাঞ্চলের কাঠ যাচ্ছে রাউজান ইটভাটায়

জিপ গাড়ি প্রতি ১৫শ থেকে ২ হাজার টাকা চাঁদা আদায়ের অভিযোগ

ফটিকছড়ি প্রতিনিধি | বুধবার , ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ at ১০:৩৫ পূর্বাহ্ণ

ফটিকছড়ির সংরক্ষিত বনাঞ্চল উজাড় করে রাউজানের ইটভাটায় জ্বালানি কাঠ সরবরাহ করা হচ্ছে রাতদিন। ফটিকছড়িগহিরারাউজান সড়কে কাঠ পাচার এখন ওপেন সিক্রেট। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টরা নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে বলে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ফটিকছড়িগহিরারাউজান সড়ক দিয়ে এক সময় রাতের আঁধারে কাঠ পাচার হতো রাউজানের ইট ভাটায়। এখন তা সেটি প্রকাশ্যে দিনের বেলায় হয়। এ জন্য হাটহাজারী রেঞ্জের সর্তা বনবিটের সংরক্ষিত বনাঞ্চল খিরাম, মগকাটা, রহতের বিল, গোপালঘাটা, গামরীতলা, নারায়ণহাট রেঞ্জের ধূরুং বনবিটের সংরক্ষিত বনাঞ্চল রাঙ্গামাটিয়া, রাঙ্গামাটিয়া রাবার বাগান, ফেনুয়া টি এস্টেট, কাঞ্চন নগর, মানিকপুর, কালাপানিয়া, কুমারি, বাইন্যেছোলা এবং পার্বত্য খাগড়াছড়ির লক্ষীছড়ির বিভিন্ন বনাঞ্চলে সরকারি অর্থে ও প্রাকৃতিকভাবে সৃজনকৃত সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকে সেগুন, চাপালিশ, গামারি, কড়ই, গর্জন, হাইব্রিট, আকাশ মণি, জামরুল, জামসহ নানা প্রজাতির ছোট বড় গাছ কেটে সরকারি বাগান সংলগ্ন নিরাপদ জায়গায় স্তুপ করে রাখে। সুযোগ বুঝে এসব কাঠ গাড়ি ভর্তি করে সড়ক পথেই রাউজানের বিভিন্ন ইটভাটায় পাচার হয়। এ জন্য ফটিকছড়িগহিরারাউজান সড়কটিই ব্যবহার হচ্ছে বেশি।

সূত্রে আরো জানা যায়, কাঠ পাচারের জন্য সংশ্লিষ্ট বনবিভাগ, বন বিভাগের স্পেশাল টহল টিম, থানা পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশের নামে ঘাটেঘাটে চাঁদা তোলা হচ্ছে। জিপ গাড়ি প্রতি ১৫শ২ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করে সংশ্লিষ্ট কালেকটররা। দিনের বেলায় কাঠ পাচারের গাড়ি গুলো হাট বাজারে, স্কুল কলেজের সামনে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি করছে এবং জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করছে। কাঠবাহী জিপ গাড়ি গুলোর বেপরোয়া চলাচল জনজীবন অতিষ্ট করে তুলছে বলেও অভিযোগ করেন আজাদী বাজার, নানুপুর, তকিরহাটের ব্যবসায়ীরা।

ধুরুং বনবিট এলাকা থেকে কাট পাচারের অভিযোগ অস্বীকার করে বনবিট কর্মকর্তা টিপু চাকমা বলেন, আমার বিট এলাকা থেকে কাট পাচার হয় না। তবে কিছু কাঠ লক্ষীছড়ি এলাকা থেকে আসে এবং কর্ণফুলী চা বাগান থেকে বের হয়। দক্ষিণ ফটিকছড়ির দিকে যেগুলো রাউজানে যায় সেকাঠ গুলো সর্তা বনবিট থেকে বের হয়।

সর্তা বনবিট কর্মকর্তা আইয়ুব আলী মুঠোফোনে বলেন, কাঠ পাচারের বিষয়ে কথা বলতে আমার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি লাগবে। মুঠোফোনে এ বিষয়ে কথা বলা সম্ভব নয়। সরাসরি দেখা করে কথা বলেন।

হাটহাজারী রেঞ্জ কর্মকর্তা মোস্তফা আল ইমরান কাঠ পাচার রোধে তার অবস্থান জিরো টলারেন্স দাবি করে বলেন, শীতকালিন কাঠ পাচার রোধে আমাদের একাধিক টহল টিম কাজ করে। গত ২৬ তারিখও আমি একটি কাঠবাহী গাড়ি জব্দ করেছি। আরো যে সব অভিযোগ জেনেছি তা খতিয়ে দেখবো। এ বিষয়ে চট্টগ্রাম অঞ্চলের বন সংরক্ষক (সিএফ) বিপুল কৃষ্ণ দাশ বলেন, চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের সংশ্লিষ্ট বনবিট এলাকা থেকে কাঠ পাচারের বিষয়ে খোঁজ খবর নিচ্ছি। কাঠ পাচারে দায়ীদের বিরুদ্ধে দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আমি সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় কর্মকর্তাকে এ বিষয়ে জানাচ্ছি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধছয় আসনে আজ উপনির্বাচন
পরবর্তী নিবন্ধশূন্যরেখায় আর কোনো রোহিঙ্গা নেই : মোমেন