প্লাস্টিকের মোড়ক ও বোতল থেকে বিপিএ যাচ্ছে শরীরে, বাড়াচ্ছে ঝুঁকি

| বৃহস্পতিবার , ১১ মে, ২০২৩ at ৫:২৭ পূর্বাহ্ণ

খাদ্যপণ্যের প্লাস্টিক কনটেনার বা বোতল ও মোড়ক তৈরিতে ব্যবহৃত রাসায়নিক ‘বিসফেনল এ’ বা বিপিএ খাবারের সঙ্গে শরীরে প্রবেশ করে সব বয়সী মানুষের জন্য স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ ঘটাচ্ছে বলে সতর্ক করেছে ইউরোপীয় খাদ্য সংস্থাইএফএ। ইএফএ নিউজ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক গবেষণায় পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে ইউরোপিয়ান ফুড সেফটি অ্যাসোসিয়েশনের (ইএফএসএ) বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিপিএ মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। তাদের এই পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে ইউরোপীয় কমিশন এবং ইউরোপীয় দেশগুলো এখন উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার পথ খুঁজবে। খবর বিডিনিউজের।

বিপিএ হল একটি রাসায়নিক পদার্থ, যা অন্যান্য পদার্থের সঙ্গে মিশিয়ে প্লাস্টিক ও রেজিন তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। যেমনপলিকার্বোনেটে বিপিএ পাওয়া যায়। এই পলিকার্বোনেট হল এক ধরনের স্বচ্ছ অনমনীয় প্লাস্টিক, যা বারবার ব্যবহারযোগ্য পানির বোতল, অন্যান্য পানীয় ও খাবারের পাত্র তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। এছাড়া খাদ্যপণ্যের পাত্র বা কনটেনারের ভেতরের আবরণে ব্যবহৃত ইপোক্সি তৈরিতেও এর ব্যবহার হয়। বিপিএ এর মত রাসায়নিকগুলো কন্টেইনারে থাকা খাবার ও পানীয়তে সামান্য পরিমাণে মিশে যেতে পারে। ফলে সেগুলো কোন মাত্রা পর্যন্ত নিরাপদ, তা বুঝতে পর্যায়ক্রমে নতুন নতুন তথ্যের আলোকে পর্যালোচনা করেন ইএফএসএ এর বিজ্ঞানীরা।

ইএফএসএ’র বিশেষজ্ঞ দলের প্রধান ক্লদ ল্যাম্ব্রে বলেন, বিপিএ এর ঝুঁকি নিয়ে ২০০৬ সালে প্রথমবারের মত বড় পরিসরে পর্যালোচনা করা হয়। এরপর থেকে পর্যায়ক্রমে পুক্সখানুপুক্সখভাবে আমাদের বিজ্ঞানীরা ওই রাসায়নিক কতটুকু নিরাপদ তা বিশ্লেষণ করেছেন। তিনি বলেন, ২০১৩ সাল থেকে আট শতাধিক নতুন গবেষণাসহ বিপুল বৈজ্ঞানিক গবেষণাপত্র তারা ঘেঁটে দেখেছেন। সব মিলিয়ে বিপিএ কতটুকু নিরাপদ, সে বিসয়ে সংশয়ের একটি জায়গায় তারা পৌঁছেছেন। প্লীহায় আমরা টি হেল্পার লিম্ফোসাইটের বৃদ্ধি দেখেছি। এটা আমাদের সেলুলার ইমিউন মেকানিজমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আর টি হেল্পার লিম্ফোসাইটের এমন বৃদ্ধিতে ফুসফুসে অ্যালার্জিজনিত প্রদাহ ও ‘অটোইমিউন’ রোগের বিকাশ ঘটাতে পারে। বিপিএ এর ঝুঁকি মূল্যায়নের সময় বিশেষজ্ঞদের দলটি মানুষের প্রজনন প্রক্রিয়া, বিপাকীয় ব্যবস্থা এবং জীবের বিকাশের ক্ষেত্রে সম্ভাব্য ক্ষতিকারক প্রভাবগুলোও বিবেচনা করেন।

খাবারের প্যাকেজিং থেকে রাসায়নিক পদার্থ খাবারে মিশে যাওয়ার বিষয়ে পদক্ষেপ নিয়ে থাকে ইউরোপীয় কমিশন এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর প্রতিনিধিরা। বিপিএ নিয়ে ইএফএসএ’র এই বৈজ্ঞানিক মূল্যায়নের পর ভোক্তাদের সুরক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বিষয়টি এখন ইইউ এর আইনপ্রণেতাদের আলোচনায় উঠবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআসামি অটোরিকশা চালকের জবানবন্দি
পরবর্তী নিবন্ধবান্দরবানে ভূমি অফিসে জালিয়াতি, জারিকারকসহ কারাগারে ৩