প্রেষণা মালিক শ্রমিকের সম্পর্ক বৃদ্ধি করে

রূপম চক্রবর্ত্তী | বুধবার , ১১ মে, ২০২২ at ১০:২৯ পূর্বাহ্ণ

জীবন জীবিকার প্রয়োজনে আমরা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছি। কেউ বড় পদবী নিয়ে চাকুরী করছি আবার কেউ শ্রমিক হিসেবে কাজ করছি। মালিকপক্ষ এবং প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শ্রমিক, কর্মচারীদের সুসম্পর্ক প্রতিষ্ঠানের উন্নতির অন্যতম চাবিকাঠি। যেকোনো কাজের বিনিময়ে কর্মচারীরা পুরস্কার প্রাপ্তির আশা রাখেন। কোনো প্রতিষ্ঠানের মূল চালিকাশক্তি তার মানবসম্পদ তথা শ্রমিক-কর্মী। শ্রমিক-কর্মীদের সন্তুষ্টি অর্জন ব্যতীত সংগঠনের কার্যসমূহ সাফল্যজনকভাবে সম্পাদিত হতে পারে না। বিশেষ চাহিদার কারণে মানুষের ইচ্ছা-অনিচ্ছা তৈরি হয়। প্রেষণা কর্মীর মানসিক শক্তি বৃদ্ধি করে এবং চাহিদা পূরণের ক্ষমতা বাড়ায়।

সরাসরি কর্মীর মানসিক অবস্থাকে প্রভাবিত করে। এতে সে কার্যসম্পাদনে প্ররোচিত হয়। সুতরাং প্রেষণা প্রয়োগ করলে কর্মীর ভিতরে ইতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি হবে। সুতরাং প্রেষণা কার্যশক্তির সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। প্রেষণা হলো এমন একটি ব্যবস্থাপকীয় প্রক্রিয়া যা কোনো কর্মীকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে কার্য সম্পাদনে উদ্বুদ্ধ করে, ফলে প্রাতিষ্ঠানিক লক্ষ্য অর্জনে সে তার সর্বোচ্চ শক্তি নিয়োগ করতে সচেষ্ট হয়।

প্রেষণা প্রতিষ্ঠানের চাকাকে সজল রাখে, কর্ম-উদ্দীপনার পরিবেশ সৃষ্টি করে, শিল্প-সম্পর্ক গতিশীল রাখে এবং সর্বোপরি প্রাতিষ্ঠানিক জীবনে সজীবতা আনে। কর্মী যাতে তার সর্বোচ্চ পরিপক্কতা প্রয়োগ করতে পারে, মূলতঃ প্রেষণা সেই কাজটি করে থাকে। প্রেষণা এমন একটি প্রক্রিয়া যা শ্রমিক-কর্মীদের কর্মক্ষেত্রে যৌক্তিক আচরণ করতে অনুপ্রাণিত করে। ফলে কর্মীরা সর্বোচ্চ পরিপক্কতা প্রয়োগ করতে পারে। তাই এটি একদিকে কর্মীর মনোবল বৃদ্ধি এবং অন্যদিকে প্রতিষ্ঠানের সার্বিক উৎপাদনশীলতার সাথে সম্পৃক্ত। প্রেষণা কর্মীদের অভাবের সাথে সংশ্লিষ্ট। প্রথমে অভাবের তাড়না আসবে; মানুষ সেটি পুরণ করার চেষ্টা করবে। প্রতিষ্ঠানে কর্মীরা যোগ্যতা অনুযায়ী পদোন্নতির একটি অভাব বোধ করবে। প্রতিষ্ঠান যদি তার এই অভাবটি পূরণ করে তাহলে সে অনুপ্রাণিত হবে এবং প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য অর্জনের প্রতি তার আগ্রহ বেড়ে যাবে। পদোন্নতির ব্যাপারে অনেক প্রতিষ্ঠানে দেখা যায় জ্যেষ্ঠতা লংগন করা হয়। এটা অবশ্যই একজন কর্মচারীর মনোবল বৃদ্ধির অন্তরায়। কোম্পানিতে যারা আগে নিয়োগপ্রাপ্ত হবেন তাদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পদোন্নতি দেওয়ার ব্যবস্থা রাখতে হবে।

উপযুক্ত প্রেষণাদানের ফলে শ্রমিক কর্মীরা প্রতিষ্ঠানের সকল কাজে তাদের সর্বোচ্চ শক্তি নিয়োগ করে। এতে প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। উৎপাদন বৃদ্ধি পেলে মালিকপক্ষের আয় যেমন বাড়বে ঠিক তেমনি দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিও বাড়বে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহারই জিত আর জিতই হার
পরবর্তী নিবন্ধসম্পর্ক আসলে কী?