প্রেরককে খুঁজছে পুলিশ, প্রাপক তিন দিনের রিমান্ডে

গৃহস্থালী পণ্যের আড়ালে অস্ত্র

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ at ৭:৪৩ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম কাস্টমসে বৈদেশিক ডাকযোগে পিস্তল-কার্তুজ আসার ঘটনায় মামলার অন্যতম আসামি চালানের প্রাপক মজুমদার কামরুল হাসানকে গত সোমবার গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার কামরুল চট্টগ্রাম কর অঞ্চল-১ এর ১২ নম্বর সার্কেলে উচ্চমান সহকারী হিসেবে কর্মরত। তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ নগরীর আগ্রাবাদের সিজিএস কলোনি এলাকায় বসবাস করছেন। অন্যদিকে গতকাল মঙ্গলবার তাকে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। আবেদনের প্রেক্ষিতে চট্টগ্রামের চতুর্থ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী শরীফুল ইসলাম তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
অন্যদিকে চালানের প্রেরক ইতালি প্রবাসী রাজীব বড়ুয়াকে খুঁজছে পুলিশ। প্রাথমিকভাবে পুলিশ জানতে পেরেছে বৈদেশিক ডাকে পিস্তল-কার্তুজ পাঠানোর আগে রাজীব বড়ুয়া দেশে এসেছেন। গত ২০১০ সালে ইতালি যাওয়ার আগে রাজিবও এক সময় আগ্রাবাদ সিজিএস কলোনি এলাকায় থাকতেন। ছোটবেলা থেকে তার সঙ্গে কামরুলের বন্ধুত্ব রয়েছে। রাজীবের গ্রামের বাড়ি রাউজানে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে বলে পুলিশ জানতে পেরেছে।
জানতে চাইলে নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (বন্দর) মেহেদী হাসান বলেন, ইতোমধ্যে চালানের প্রাপক মজুমদার কামরুল হাসানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে। এখন আমরা চালানের প্রেরক ইতালি প্রবাসী রাজীব বড়ুয়াকে ধরতে অভিযান চালাচ্ছি। আমরা শুনেছি- ইতালি থেকে পিস্তল-কার্তুজে চালান পাঠিয়ে সে-ও দেশে ফিরেছে। আমরা তার অবস্থান শনাক্ত করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছি। এক্ষেত্রে সে যদি দেশের বাইরে থাকে তাকে ধরতে প্রয়োজনে ইন্টারপোলের সহায়তা নেব আমরা। গ্রেপ্তার মজুমদার কামরুল পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছে। পিস্তল-কার্তুজগুলোর আসার কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এদিকে গ্রেপ্তার মজুমদার কামরুল হাসানকে গতকাল চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে চট্টগ্রাম আয়কর বিভাগ। বিষয়টি দৈনিক আজাদীকে নিশ্চিত করেন চট্টগ্রাম কর অঞ্চল-১ এর কমিশনার সৈয়দ মো. আবু দাউদ।
উল্লেখ্য, গত রোববার বৈদেশিক ডাকের মাধ্যমে ইতালির রোম থেকে গৃহস্থলীর পণ্যের ঘোষণায় আসা চালানে দুটি ৮এমএম পিস্তল, দুটি পিস্তল সদৃশ খেলনা এবং ৬০টি কার্তুজ জব্দ করেছে চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। কায়িক পরীক্ষায় পাওয়া গৃহস্থলী পণ্যগুলোর মধ্যে ছিল- ফ্রাইফ্যান ৩ পিস, ঢাকনা ২ পিস, ড্রিল মেশিন ১ সেট, ইলেকট্রিক হ্যান্ড ব্লেন্ডার ১ সেট, ছুরি ১ পিস, মিনি ব্লেন্ডার ১ সেট, চকলেট ১ কেজি, সাবান ২ পিস, লোশন ১ পিস, লেডিস ব্যাগ ১ পিস, হ্যান্ড ব্যাগ ১ পিস, আয়রন ১ সেট ও মাল্টিপ্লাগ ২ পিস। এ ঘটনায় পরদিন সোমবার চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন বাদি হয়ে মজুমদার কামরুল হাসান ও রাজিব বড়ুয়াকে আসামি করে কাস্টমস আইন, বিশেষ ক্ষমতা আইন ও অস্ত্র আইনে বন্দর থানায় একটি মামলা করেন। একইদিন রাতে নগরীর হালিশহরের আই ব্লক খালপাড় এলাকা থেকে ডবলমুরিং থানা পুলিশ তাকে (কামরুল হাসান) গ্রেপ্তার করে বন্দর থানায় হস্তান্তর করে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআর্ত-মানবতার সেবায় পাশে থাকার প্রত্যয় নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে অবিরোধ ফাউন্ডেশন
পরবর্তী নিবন্ধবাবা ফেরেনি বাকরুদ্ধ ঋদ্ধি