প্রাণ হাতে নিয়ে বহু দূর পথ পাড়ি ৭ বাংলাদেশির

| রবিবার , ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ at ৫:৫০ পূর্বাহ্ণ

রাশিয়া হামলার পরপরই নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছুটছে ইউক্রেনের সবাই, হাজারো মানুষের সেই মিছিলে শামিল বাংলাদেশি শিক্ষার্থী শেখ খালেদ বিন সেলিম। ওডেসা স্টেশনে তিনি সঙ্গী পান আরও ছয় বাংলাদেশি তরুণকে। ওডেসা থেকে পোল্যান্ড সীমান্তবর্তী লিভভ শহরে পৌঁছানোর গল্প শোনান তিনি। গত বৃহস্পতিবার ইউক্রেনে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পরপরই কৃষ্ণসাগর তীরের শহর ওডেসা থেকে অপেক্ষাকৃত নিরাপদ পশ্চিম অঞ্চলের দিকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন খালেদ। খবর বিডিনিউজের।
তিনি বলেন, ওডেসার বাস এবং ট্রেন স্টেশন পাশাপাশি। লোকজন একটি টিকেটের জন্য মরিয়া হয়ে দুই জায়গায় ছোটাছুটি করছিল। ভাগ্যক্রমে আমি টিকেট পেয়ে যাই। স্টেশনে বাংলাদেশের আরও ছয়জন স্টুডেন্টের সঙ্গে দেখা হয়ে যায়। মানুষের প্রচণ্ড ভিড় থাকার কারণে ওই দিন ওডেসা থেকে বাড়তি একটি ট্রেন ছাড়া হয়। তারপরও অনেক মানুষ ট্রেনে উঠতে পারেনি। আমার সামনেই ভারতীয় স্টুডেন্টদের একটি দল অনেক রিকোয়েস্ট করেও ট্রেনে উঠতে পারলো না। ইউক্রেইনের অনেক নাগরিকও ট্রেনে উঠতে পারেননি।
ওডেসার একটি মেডিকেল কলেজের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী খালেদ আক্ষেপ নিয়ে বলেন, মেডিকেলে পড়তে ২০১১ সাল ইউক্রেন আসি। ২০১৪ সালে পূর্ব ইউক্রেনে (ক্রিমিয়া যুদ্ধ) যুদ্ধ শুরু হলে স্টাডি ব্রেক করে দেশে ফিরে যাই। এরপর ফিরে এসে আবার পড়া শুরু করি, এবারও যুদ্ধ। যুদ্ধ যেন আমার পিছু ছাড়ছে না।
ওডেসাতে এখনও কয়েকজন বাংলাদেশি আটকা পড়ে আছেন জানিয়ে তিনি বলেন, আমি ওডেসা ছাড়ার পর সেখানে মিসাইল হামলার খবর পেয়েছি। সেখানে ইউনিভার্সিটি ও চার্চের বাংকার খুলে দেওয়া হয়েছে। আমাদের ইউনিভার্সিটি থেকে বলেছিল, চাইলে হোস্টেলের বাংকারে থাকতে পারি। কিন্তু আমি ঝুঁকি নিতে চাইনি। আতঙ্ক-উত্তেজনা আর ঠেলাঠেলি করে ওডেসা থেকে ৭৯৮ কিলোমিটার দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে লিভভ পৌঁছায় খালেদদের ক্লান্ত দলটি। কিন্তু সেখানে তাদের থাকার জায়গা নেই। কিন্তু পৌঁছেও দুর্ভোগের যেন শেষ নেই। প্রচণ্ড ঠাণ্ডার মধ্যে একটার পর একটা হোটেল, হোস্টেল চষে বেড়ান তারা। খালেদ বলেন, এখানে মানুষ গিজগিজ করছে। সবার চোখে মুখে আতঙ্ক। আসার পর জানতে পেরেছি, এখানেও বিমান হামলার আশঙ্কায় সাইরেন বাজানো হয়েছে। সবাই সীমান্ত পেরিয়ে পোল্যান্ড চলে যেতে চান।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবাঙ্কারে জন্ম, শিশুর নাম দেওয়া হলো স্বাধীনতা
পরবর্তী নিবন্ধইউক্রেনেও ট্যাংক ম্যান