এক দুর্ভেদ্য প্রাচীর গড়ে উঠেছে, দিনের পর দিন আমার চোখের সামনেই। কিছু পাথর আমার নামেই বরাদ্দ ছিলো সম্ভবত আমার জন্মের আগে থেকে। তার উপর কিছু জেদ, অবহেলা, নির্বুদ্ধিতাসহ নিজগুণে আরো কিছু পাথরের স্তুপ করেছি, নিজেই। আর বাকি পাথরগুলো জড়ো করেছে আমার নিয়তি, পরিচিত অপরিচিত শুভাকাঙ্ক্ষী, স্বজনেরা, যাদের দ্বারা আমি বেষ্টিত চিরকাল।এই অনাকাঙ্ক্ষিত উপকারের বাধন থেকে আমি কিছুতেই মুক্ত হতে পারিনি। আমার শ্বাস আটকে গেলেও বলা হয়ে ওঠেনি সংকোচে। এতো যত্নে এতো মজবুত প্রাচীর গড়ে উঠেছে, কোথাও ছিটেফোঁটা আলো আসার পথ নেই। আমার সমস্ত আলো আটকে পড়েছে ওপাশে। করার কিছুই ছিলো না অথর্বের মতো চেয়ে থাকা ছাড়া। এপাশ থেকে প্রতিদিন প্রতি বেলায় প্রাচীরে কান পেতে অনুভব করতে চেয়েছি আমার প্রাপ্য উষ্ণতাটুকু। ব্যর্থ হয়ে ফিরে এলেও আর্তচিৎকারটুকু নিজের ভেতরেই রেখে দিয়েছি। তবু যেন স্পষ্ট দেখতে পাই আমার আদুরে আলোটুকুর লুটোপুটি, যেন জ্বলে যাই তার গনগনে তেজে, যেন তার তীব্রতায় পুড়ে অঙ্গার করা গন্ধ পাই, শুধু ছুঁতে পাই না। আঁধার আঁকড়ে থেকেও মননে অনুভবে যে তীব্র আলোর ঝলকানি ধারণ করে আছি, এ আমার এক জনমের সাধনার ফল নয়তো আর কি হতে পারে!