প্রথম দিনে ‘উপেক্ষিত’ বিধিনিষেধ

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ১৪ জানুয়ারি, ২০২২ at ৬:১৫ পূর্বাহ্ণ

ওমিক্রনের বিস্তার ঠেকাতে ১১ দফা বিধিনিষেধ কার্যকরের প্রথম দিনে অনেক ক্ষেত্রেই তা উপেক্ষিত দেখা গেছে। পথে ঘাটে বাজারে রাস্তায়, এমনকি যানবাহনেও অনেকের মুখেই মাস্ক দেখা যায়নি। এ অবস্থায় বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, বিধিনিষেধ মেনে চলার বিকল্প নেই। এ ব্যাপারে প্রত্যেককেই সচেতন হতে হবে, সংকল্প নিতে হবে এবং চলাফেরায় সংযত হতে হবে। নির্দেশনা অনুযায়ী অফিস-আদালতে এবং ঘরের বাইরে সবার মাস্ক পরার কথা। রেস্তোরাঁ, বাজার কিংবা জনসমাগম স্থলে স্বাস্থ্যবিধি মানতে দেখা গেছে কমই। নগরীর বাজার কিংবা ফুটপাতে মাস্ক ছাড়াই ক্রেতা-বিক্রেতারা বেচাকেনা করছিলেন। হোটেল কিংবা রেস্তোরাঁয় বসে খেতে হলে টিকা সনদ দেখানোর নির্দেশনা থাকলেও তা মানার প্রবণতা কোথাও চোখে পড়েনি, এমনকি মাস্ক ছাড়াই খাবার কিনতে দেখা গেছে। এক রেস্টুরেন্ট মালিকের ভাষায়, এলাকার সব মানুষই পরিচিত। আমরা তো তাদের সাথে জোর করতে পারি না। বাসের চালক এবং হেলপারদের টিকা সনদ থাকা বাধ্যতামূলক হলেও অনেকেই বলেছেন, তারা এখন পর্যন্ত টিকাই নেননি। এদিকে করোনা পরিস্থিতির ভয়াবহ অবনতি ঘটছে। মাত্র দিন কয়েকের ব্যবধানে সিঙ্গেল ডিজিট থেকে থ্রি ডিজিটে উন্নীত হয়েছে করোনা। দিনে গড়ে ৬/৭জন করোনা রোগী শনাক্ত হচ্ছিল গত বেশ কিছুদিন ধরে, অথচ গত কয়েক দিনে তা আড়াইশ’তে গিয়ে ঠেকেছে। শুধু চট্টগ্রামে নয়, দেশে করোনা রোগীর সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে। ভয়াবহ পরিস্থিতিতে সরকার ১১দফা বিধি নিষেধ আরোপ করে। এগুলো হচ্ছে, শপিং মল ও বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতা এবং হোটেল-রেস্তোরাঁসহ জনসমাগম স্থলে বাধ্যতামূলক মাস্ক পরতে হবে।
অফিস-আদালতসহ ঘরের বাইরে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি বাস্তবায়নে সারা দেশে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে। রেস্তোরাঁয় বসে খেতে ও আবাসিক হোটেলে থাকতে হলে অবশ্যই করোনার টিকা সনদ প্রদর্শন করতে হবে। ট্রেন, বাস ও লঞ্চে সক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী নিতে হবে। সব ধরনের যানের চালক ও সহকারীদের কভিড-১৯ টিকার সনদধারী হতে হবে -এ ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। গতকাল থেকে এসব বিধিনিষেধ কার্যকর হওয়ার আগাম ঘোষণা দেয়া হয়েছে। কিন্তু গতকাল নগরীর কোথাও বিধিনিষেধ আরোপের কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি। বিধিনিষেধ পালনে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার কথা বলা হলেও গতকাল নগরীর কোথাও মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। নগরীর একাধিক রেস্টুরেন্টে সরজমিনে ঘুরে দেখা গেছে করোনা মোকাবেলার বিধিনিষেধের কোনো বালাই নেই। যে যার মতো রেস্তোরাঁয় ঢুকে খাবার খাচ্ছে। নগরীর আগ্রাবাদ এলাকায় কয়েকটি রেস্তোরাঁয় প্রবেশের ক্ষেত্রে টিকা সনদ দেখা হয়নি। জিজ্ঞেসও করা হয়নি।
করোনা মোকাবেলায় সরকারি উদ্যোগের বেহাল দশা ঘরে ঘরে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতিকে আরো নাজুক করে তুলবে বলেও আশংকা প্রকাশ করা হয়েছে। এই অবস্থায় জনসচেতনতার কোনো বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলেছে, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে একমাত্র সচেতনতাই মানুষকে রক্ষা করতে পারে। ভয়াল এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় সংকল্প দরকার বলেও তারা মন্তব্য করেছেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবিদেশে বসে দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচারকারীদের পাসপোর্ট বাতিল হতে পারে : তথ্যমন্ত্রী
পরবর্তী নিবন্ধস্বাস্থ্যবিধি পালনে রোববার থেকে মাঠে থাকবে ভ্রাম্যমাণ আদালত