প্রতি হাটে বিক্রি ৩০ লাখ টাকার কলা

রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধি | শনিবার , ১৮ জুন, ২০২২ at ১১:২১ পূর্বাহ্ণ

রাঙ্গুনিয়া উপজেলা সদরের ইছাখালীতে প্রতি বুধবারে কলার হাট বসে। এদিন প্রায় ৩০ লাখ টাকার কলা ক্রয়-বিক্রয় হয়। এছাড়া সপ্তাহের অন্যদিনগুলোতেও এখানে অন্তত ১০ লাখ টাকার কলা বেচাকেনা হয়। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা রাঙামাটি ও রাঙ্গুনিয়ার পাহাড়ি এলাকাগুলো থেকে নানা জাতের কাঁচা-পাকা কলা এনে পসরা সাজিয়ে বসেন। পরে এসব কলা পাইকারদের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে সারা দেশে। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, নব্বইয়ের দশকের দিকে ইছাখালীতে কলার হাট বসতে শুরু করে। ব্যবসায়ীরা রাঙ্গুনীয়া উপজেলা ও রাঙামাটির বিভিন্ন বাজার থেকে কর্ণফুলী নদী পথে নৌকাযোগে প্রতি মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ইছাখালী ঘাটে কলা নিয়ে আসেন। পরদিন সকাল ছয়টা থেকে ইছাখালীর নির্ধারিত বাজারে শুরু হয় কলা বেচাকেনা, চলে পুরো দিন। তবে এখন সড়ক পথে ট্রাকে করেও কলা নিয়ে আসা হয়। এছাড়া ধীরে ধীরে এখানে কলা বেচাকেনার স্থায়ী দোকান নির্মিত হয়েছে। যেখানে শুধু সাপ্তাহিক হাটবারে নয়, প্রতিদিনই চলে বেচাকেনা। এসব কলার মধ্যে রয়েছে আইট্টা, আনাজি (সবজি), কাট্টলি (বাংলা), সবরি, চাঁপা ও সূর্যমূখী কলাসহ আরও অনেক।

ব্যবসায়ী মো. মফিজুর রহমান বলেন, প্রতি বুধবার বাজার হলেও বর্তমানে প্রতিদিনই এখানে প্রচুর পরিমাণে কলা ওঠে এবং বেচাকেনা চলে। রাঙ্গুনিয়া উপজেলার মরিয়মনগর, সরফভাটা, কোদালা, চন্দ্রঘোনা, পারুয়া ও পৌর এলাকার সহস্রাধিক ব্যবসায়ী স্থানীয় পাহাড়ি এলাকাগুলোসহ রাঙামাটি পার্বত্য জেলার রাজস্থলী, ফারুয়া, বরকল, কাপ্তাই, বিলাইছড়ি ও লংঘদু বাজার থেকে কলা কিনে এ হাটে নিয়ে আসেন; যা চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলা শহরের পাইকারেরা নিয়ে যান।
মরিয়মনগর এলাকার কলা ব্যবসায়ী মো. কাদের বলেন, শুধু স্থানীয় ব্যবসায়ীরাও নন, সারা রাঙ্গুনিয়ার বিশেষ করে পাহাড়ি এলাকার বাসিন্দারাও এখানে কলা বিক্রি করতে আসেন। রাঙ্গুনিয়ার বিভিন্ন হাট-বাজারের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা প্রধানত ইছাখালী থেকেই কলা নিয়ে বিক্রি করেন।

ইছাখালী বাজার থেকে কলা নিতে এসেছেন কোদালা এলাকার ব্যবসায়ী রহিম উদ্দিন। তিনি বলেন, এখান থেকে ১০০ পিস কলা প্রকার ভেদে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায় কিনতে হয়। যা দোকানে নিয়ে গিয়ে প্রতি পিস ৭ থেকে ১৩ টাকা দামে বিক্রি হয়।

চট্টগ্রাম থেকে আসা ব্যবসায়ী আবদুল আজিজ বলেন, সমতল এলাকার কলা আর পাহাড়ের কলার মধ্যে পার্থক্য অনেক। ইছাখালী বাজারে পাওয়া পাহাড়ি কলাগুলো সমতলের কলার চেয়ে অনেক হৃষ্টপুষ্ট। এগুলো সমতলের ক্রেতারা লুফে নেয়। এ হাটে পাহাড়ের প্রাকৃতিক পরিবেশে উৎপাদিত কলা পাওয়া যায় বলে সারা দেশেই এই বাজারের ব্যাপক পরিচিতি আছে।

ইছাখালী পৌর কাউন্সিলর জসিম উদ্দিন শাহ বলেন, এ হাটে প্রতিদিন প্রায় ১০ লাখ টাকার এবং প্রতি বুধবারে প্রায় ৩০ লাখ টাকারও বেশি মূল্যের কলা বেচাকেনা হয়। এ হাটের পরিধি বাড়ানো ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধদিনে নীরব, রাতে সরব
পরবর্তী নিবন্ধজলদীতে বৃদ্ধের রহস্যজনক মৃত্যু