প্রতারকের খপ্পরে হুজুর, খোঁয়ালেন লাখ টাকা

মীর আসলাম, রাউজান | শুক্রবার , ২৪ মে, ২০২৪ at ৬:৫৩ পূর্বাহ্ণ

রাউজানে মাদরাসার এক হুজুর সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের ফাঁদে পড়ে এক লাখ বিশ হাজার খুঁইয়েছেন। উপজেলার ডাবুয়া ইউনিয়নের কান্দিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মোহাম্মদ ওমর ফারুক নামে ওই হুজুর এ বিষয়ে রাউজান থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন। জানা যায়, গত কয়েকদিন আগে হুজুর ওমর ফারুক চিকিৎসার জন্য নিজ স্ত্রীকে সাথে নিয়ে রাউজান উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গিয়েছিলেন। চিকিৎসা শেষে বসেছিলেন একটি চায়ের দোকানে। এসময় প্রতারক চক্রের এক সদস্য নানা সম্বোধন করে তার সাথে ভাব জমায়। হুজুরের সাথে কথা বলে প্রতারক নিশ্চিত হয় হুজুরের সৌদি আরবের মুদ্রা রিয়াল সম্পর্কে বেশ ধারণা আছে। এক সময় প্রতারক হুজুরকে একটি ৫০ টাকা মূল্যমানের রিয়াল দেখিয়ে বিনিময়ে কিছু টাকা চান। হুজুর তার প্রস্তাবে রাজি হয়ে রিয়ালটি হাতে নিয়ে টাকা বিনিময় করেন। এ সময় ওই প্রতারক হুজুরের মোবাইল নম্বরটি নেয়। ১৯ মে ওই প্রতারক হুজুরকে ফোন করে জানায়, তার কাছে আরো বেশ কিছু সৌদি রিয়াল আছে। আগের দরে ওসব রিয়াল চাইলে কিনতে পারবেন। হুজুর প্রতারকদের ফাঁদে পা দিয়ে সৌদি মুদ্রা কিনতে রাজি হন। এই নিয়ে স্ত্রীর সাথে পরামর্শ করলে প্রথমে বাধা পান স্ত্রীর কাছ থেকে। পরে স্ত্রীকে স্বর্ণ বন্ধক দিয়ে রিয়ালগুলো কিনে নিলে অনেক টাকা লাভ হবে জানালে তিনি রাজি হন। হুজুর দম্পতি এই সিদ্ধান্ত নিয়ে রাউজান ফকিরহাটের এক স্বর্ণ দোকানে স্বর্ণ বন্ধক রেখে এক লক্ষ ২০ হাজার টাকা নেন। এই টাকা নিয়ে তারা চলে যান প্রতারক চক্রের দেয়া ঠিকানা অনুসারে দক্ষিণ রাউজানের পাহাড়তলী এলাকায়। প্রতারক দল সেখানে হুজুর দম্পতিকে একটি গলির ভিতর নিয়ে যায়। এসময় তারা কয়েকটি রিয়াল হাতে নাড়াচাড়া করে বিশ্বাস জমায়। কিছুক্ষণ পর অন্য এক প্রতারক কাপড়ে বাঁধা একটি পুটলি নিয়ে হাজির হয়। এসময় তারা হুজুরের কাছ থেকে এক লক্ষ বিশ হাজার টাকা গুণে নিয়ে তাদের হাতে থাকা কাপড়ের পুটলিটি হুজুরের হাতে দিলে হুজুরের স্ত্রী খুলে দেখার প্রস্তুতি নিতেই প্রতারকরা তাদের দ্রুত চলে যাওয়ার পরামর্শ দেয়। না হলে বিদেশী মুদ্রা হাতে কেউ দেখলে বিপদে ফেলতে পারে বলে ভয় দেখায়। ভয়ে হুজুর স্ত্রীকে নিয়ে টেক্সি চড়ে বাড়ি চলে আসেন। গাড়িতে বসে হুজুরের স্ত্রী পুটলিটি খুলে দেখেন পুটলির ভিতর কিছু কাগজ ভাঁজ করা। তারা হতাশ হয়ে আবার প্রতারকদের খুঁজতে যান পাহাড়তলীতে। কিন্তু ততক্ষণে প্রতারক দল চম্পট দিয়েছে। হুজুর ওমর ফারুক এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন জানালেও থানার এসআই অজয় দেব শীল এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানান।

প্রতারণার শিকার হাফেজ মোহাম্মদ ওমর ফারুক বলেন, তার সন্তানরা সৌদি আরবে থাকেন। তিনি জানান, রিয়ালগুলো বিক্রি করে কিছু লাভ হলে সেই টাকা তার অভাবগ্রস্ত মেয়েকে সাহায্য করতে চেয়েছিলেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসৌদি আরবে অগ্নিকাণ্ডে রাঙ্গুনিয়া প্রবাসীর মৃত্যু
পরবর্তী নিবন্ধবাসে মাথায় বমি করে ৯ লাখ টাকা ছিনতাই