ভারতীয় ঋণ সহায়তায় নগরে ২০ হাজার ৬০০টি এলইডি বাতি স্থাপন প্রকল্পটির টেন্ডার প্রক্রিয়া আগামী মাসে শুরু হচ্ছে। প্রকল্পটি গ্রহণ করে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)। তবে ভারতে চূড়ান্ত অনুমোদন না পাওয়ায় ২০১৮ সালে গৃহীত প্রকল্পটি গত তিন বছর ধরে আটকে ছিল।
সর্বশেষ গত সপ্তাহে ভারত থেকে চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়া যায়। দেশটি তিনটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের শর্ট লিস্টও সরবারহ করে। প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে এনার্জি ইফিসিয়েন্সি সার্ভিসেস লিমিটেড, সিগনিফাই ইনোভেশন্স ইন্ডিয়া লিমিটেড এবং শাপর্জি পালনজি অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেড।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চসিকের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) ঝুলন কুমার দাশ। তিনি জানান, চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, প্রি-কোয়ালিফাইড ঠিকাদারের শর্ট লিস্ট দিবে ভারতের বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়। এতদিন তালিকা না পাওয়ায় ঠিকাদার চূড়ান্ত করা যাচ্ছিল না। এখন যেহেতু তালিকা পেয়েছি আমরা দরপত্র আহ্বান করতে পারব।
চসিক সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালে পিইসি (প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি) এবং ২০১৯ সালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় চূড়ান্ত অনুমোদন পেয়েছিল ২৬০ কোটি ৮৯ লাখ ৮৭ হাজার টাকার প্রকল্পটি।
জানা গেছে, জ্বালানি দক্ষতা উন্নয়নে পারস্পরিক সহযোগিতা জোরদারের লক্ষ্যে ২০১৭ সালে বাংলাদেশের ‘টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ’ এবং ভারতের ‘এনার্জি ইফিসিয়েন্সি সার্ভিস লিমিটেড (ইইসিএল)’র সঙ্গে ২০১৭ সালে একটি সমঝোতা চুক্তি হয়েছিল। এর প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সরকারের মাধ্যমে এলওসি-৩ (লাইন অব ক্রেডিট) এর আওতায় প্রকল্পে ৮২ দশমিক ২০ শতাংশ ঋণ সহায়তা দেয়ার কথা ভারতের।
প্রকল্পের উন্নয়ন প্রস্তাবনা (ডিপিপি) সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পে ঋণ হিসেবে দেয়া ভারতের অর্থ সহায়তার পরিমাণ ২১৪ কোটি ৪৬ লাখ ৮২ হাজার টাকা। বাকি ৪৬ কোটি ৪৩ লাখ ৫ হাজার টাকা দিবে বাংলাদেশ সরকার। প্রকল্পের আওতায় শহরের ৪১ ওয়ার্ডে ৪০, ৬০, ১০০ ও ২৫০ ওয়াটের ২০ হাজার ৬০০টি এলইডি বাতি, ২০ হাজার ২৬৭টি জিআই পোল এবং ৫০৭টি কন্ট্রোল সুইচ বঙ বসানো হবে। পাঁচ মিটারের বেশি প্রশস্ত সড়কগুলোতে এসব বাতি লাগানো হবে। এছাড়া হাইড্রোলিক বীম লিফটার ও ইলেকট্রিক্যাল ইক্যুপমেন্ট সংগ্রহ করা হবে।
প্রসঙ্গত, প্রকল্পটি নিয়ে গত ২৫ মার্চ দৈনিক আজাদীতে ‘কাজ শুরুর আগেই মেয়াদ শেষ, চসিকের ২৬০ কোটি টাকার এলইডি প্রকল্প’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর নড়েচড়ে বসে চসিকসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। তারা ভারতের সংশ্লিষ্ট সংস্থার যোগাযাগ বাড়িয়ে দেয়। এরপর নানা প্রক্রিয়া শেষে ভারত থেকে চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়া যায়।