প্যানেল মেয়র নির্বাচনের পর ১৪ স্থায়ী কমিটি

চসিক

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ৯ মার্চ, ২০২১ at ৪:৪৫ পূর্বাহ্ণ

আইন অনুযায়ী সিটি কর্পোরেশনে ১৪টি স্থায়ী কমিটি গঠনের বাধ্যবাধকতা আছে। বাজেট প্রণয়ন, গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি সম্পাদন ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনাসহ অন্যান্য বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের পূর্বে মতামত নিতে হয় সংশ্লিষ্ট স্থায়ী কমিটির। অথচ এখনো স্থায়ী কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেয়নি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)। তবে ‘প্যানেল মেয়র’ নির্বাচনের পরই স্থায়ী কমিটিগুলো গঠনের পরিকল্পনা আছে বলে জানিয়েছেন চসিকের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা। অবশ্য একাধিক কাউন্সিলর জানিয়েছেন, নির্বাচিত কাউন্সিলরগণ নিজ নিজ ওয়ার্ডে কাজ করছেন। তাই স্থায়ী কমিটি গঠনে বিলম্ব হলেও তেমন সমস্যা হচ্ছে না। তবে দ্রুত গঠন করা হলে কাজে গতি বৃদ্ধির পাশাপাশি মনিটরিং জোরালো হতো। স্থানীয় সরকার আইন (সিটি কর্পোরেশন) ২০০৯ এর ৫০ ধারা অনুযায়ী, স্থায়ী কমিটি গঠন করতে হবে। যেসব স্থায়ী কমিটি গঠন করতে হবে সেগুলো হচ্ছে- ‘অর্থ ও সংস্থাপন’, ‘বর্জ্য ব্যবস্থাপনা’, ‘শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা এবং স্বাস্থ্যরক্ষা ব্যবস্থা’, ‘নগর পরিকল্পনা ও উন্নয়ন’, ‘হিসাব নিরীক্ষা ও রক্ষণ’, নগর অবকাঠামো নির্মাণ ও সংরক্ষণ’, ‘পানি ও বিদ্যুৎ’, ‘সমাজকল্যাণ ও কমিউনিটি সেন্টার’, ‘পরিবেশ উন্নয়ন কমিটি’, ‘ক্রীড়া ও সংস্কৃতি কমিটি’, ‘জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন কমিটি’, ‘যোগাযোগ’, ‘বাজারমূল্য পর্যবেক্ষণ, মনিটরিং ও নিয়ন্ত্রণ’ এবং ‘দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা’।
স্থায়ী কমিটি গঠনের বিষয়ে আইনে বলা হয়েছে, ‘কর্পোরেশন প্রত্যেক বছর তার প্রথম সভায়, অথবা যথাশীঘ্র সম্ভব, তৎপরবর্তী কোন সভায় স্থায়ী কমিটি গঠন করবে। যার মেয়াদ দুই বছর ছয় মাস হবে এবং দুই বছর ছয় মাস পর নতুন করে কমিটি গঠন করতে হবে।’
এদিকে চসিকের বর্তমান নির্বাচিত পরিষদের (ষষ্ঠ) প্রথম সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি। ওই সভার কার্যতালিকায় স্থায়ী কমিটি গঠনের বিষয়টি অর্ন্তভুক্ত ছিল। তবে এ বিষয়ে প্রাথমিক আলোচনা হলেও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এর আগে ২০১৫ সালে ১ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হয়েছিল পঞ্চম পরিষদের দ্বিতীয় সাধারণ সভা। ওই সভায় ‘অর্থ ও সংস্থাপন’, ‘বর্জ্য ব্যবস্থাপনা’, ‘শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা এবং স্বাস্থ্যরক্ষা ব্যবস্থা’ ও ‘ক্রীড়া ও সংস্কৃতি কমিটি’ শীর্ষক চারটি স্থায়ী কমিটি গঠন করা হয়েছিল। পরবর্তীতে ধাপে ধাপে আরো ১৪টি স্থায়ী কমিটি গঠন করা হয়েছিল। অর্থাৎ গতবার মোট ১৮টি স্থায়ী কমিটি গঠন করা হয়েছিল। অবশ্য ১৪টি স্থায়ী কমিটির বাইরেও কর্পোরেশনের সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রয়োজনবোধে অন্য কোন বিষয়ের জন্যও স্থায়ী কমিটি গঠন করা যাবে বলে আইনে উল্লেখ আছে।
এদিকে স্থায়ী কমিটির আকার সম্পর্কে সিটি কর্পোরেশন অ্যাক্টের ৫০ নং ধারার বিভিন্ন উপ-ধারায় বলা আছে, কর্পোরেশন প্রত্যেক স্থায়ী কমিটির সদস্য সংখ্যা নির্ধারণ করবে এবং স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও সদস্যগণ কাউন্সিলরগণের মধ্য থেকে কর্পোরেশনের সভায় নির্বাচিত হবে। তবে কোনো কাউন্সিলর একই সময়ে দুইটির অধিক স্থায়ী কমিটির সদস্য এবং একটির অধিক স্থায়ী কমিটির সভাপতি হতে পারবে না। মেয়র পদাধিকার বলে সকল স্থায়ী কমিটির সদস্য হবেন।
কমিটির কার্যাবলী সম্পর্কে বলা আছে, স্থায়ী কমিটির সুপারিশ কর্পোরেশনের পরবর্তী সভায় বিবেচিত হবে। স্থায়ী কমিটির সকল কার্যধারা কর্পোরেশনের সাধারণ সভার অনুমোদন সাপেক্ষে চূড়ান্ত হবে। এছাড়া বাজেটের প্রাক্কলন স্থায়ী কমিটি কর্তৃক মতামত প্রদানের পর বাজেট সভায় অনুমোদিত হবে এবং যে কোন চুক্তি বিষয়ক সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করার পূর্বে সংশ্লিষ্ট স্থায়ী কমিটির মতামত গ্রহণ করতে হবে।
বিগত সময়ে স্থায়ী কমিটির সভাপতির দায়িত্বপালন করেছেন এমন কয়েকজন কাউন্সিলর নাম প্রকাশ না করার শর্তে দৈনিক আজাদীকে বলেন, আইনে যতগুলো স্থায়ী কমিটি গঠনের বিধান আছে বাস্তবে সবগুলোর তেমন ভূমিকা থাকে না। তবে কয়েকটি স্থায়ী কমিটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। যেমন অর্থ ও সংস্থাপন, নগর অবকাঠামো নির্মাণ ও সংরক্ষণ এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ক স্থায়ী কমিটির অনেক বেশি কাজ থাকে। সিটি কর্পোরেশনের আবশ্যিক কাজগুলোর অন্যতম বর্জ্য ব্যবস্থাপনা। এ বিষয়ে স্থায়ী কমিটি থাকলে পরিচ্ছন্ন বিভাগের সাথে সমন্বয় করতে পারেন।
চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্র্তা কাজী মুহাম্মদ মোজাম্মেল হক আজাদীকে বলেন, স্থায়ী কমিটি গঠনের বিষয়ে আলোচনা চলছে। তবে আপাতত আমরা চাচ্ছি প্যানেল মেয়র আগে নির্বাচন করতে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধটিকার দ্বিতীয় ডোজের তারিখ জানানো হবে এসএমএসে
পরবর্তী নিবন্ধজুয়েলারি থেকে কোটি টাকার স্বর্ণ নিয়ে পালাল কর্মচারী