পৌর এলাকা, কিন্তু সড়ক নেই

রাঙ্গুনিয়া পৌরসভার কড়ইল্যাটিলা

রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধি | রবিবার , ২৬ মার্চ, ২০২৩ at ৫:১৯ পূর্বাহ্ণ

রাঙ্গুনিয়া পৌরসভার ইছাখালী ৩ নং ওয়ার্ডের ছোট গ্রাম কড়ইল্যাটিলা। পৌর এলাকার বাসিন্দা হয়েও যাতায়াতের সড়কের অভাবে রয়েছেন গ্রামবাসী। অর্ধশত পরিবারের গ্রামটির বাসিন্দারা দীর্ঘদিন ধরে একটি সড়কের দাবি জানিয়ে আসছেন, তবে এখনও তা বাস্তবায়ন হয়নি। দ্রুত সড়ক নির্মাণের দাবিতে গ্রামবাসী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, পৌর মেয়র ও স্থানীয় কাউন্সিলর বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, পৌরসভার উত্তরঘাটচেক দাশপাড়া থেকে পায়ে হেঁটে প্রায় এক কিলোমিটার যাওয়ার পর কৃষি জমির আইল ধরে হাঁটতে হয় আরও এক কিলোমিটার। পথে দুটি ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকো রয়েছে। পাহাড়ি গ্রামটির সবাই কৃষক ও নিম্নবিত্ত। সড়ক যোগাযোগ না থাকায় স্কুলে যেতে গ্রামের শিশুদেরও দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বর্ষায় পানি উঠলে যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায় তাদের। সড়ক না থাকায় কোনো ধরনের গাড়ি যায় না গ্রামটিতে।

গ্রামের বাসিন্দা আবদুর রহিম মিয়া বলেন, রাঙ্গুনিয়ায় প্রচুর উন্নয়ন হয়েছে। কিন্তু আমাদের গ্রামের খবর কেউ নেয়নি। অনেক কাউন্সিলর এসেছে, গেছে। সবাই সড়ক করে দেয়ার আশ্বাস দিয়েছে। কিন্তু কেউ বাস্তবায়ন করেননি। মাননীয় তথ্যমন্ত্রী মহোদয়ের প্রচেষ্টায় এই গ্রামে বিদ্যুৎ এলেও এখনো কোনো যাতায়াত ব্যবস্থা হয়নি। আমাদের এই সীমাহীন দুর্ভোগ যেন দেখার কেউ নেই।

জান্নাতুল নাঈম নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের এলাকা থেকে কয়েক কিলোমিটার পায়ে হেঁটে পারুয়ার সাহাব্দিনগর স্কুলে গিয়ে পড়ালেখা চালিয়ে গিয়েছি। এখন ইমাম গাজ্জালি কলেজে পড়ছি। বর্ষাকালে পরীক্ষা থাকলে আমাদের এলাকার কোনো শিক্ষার্থী যেতে পারে না। এজন্য এলাকায় অল্পতেই স্কুল থেকে ঝড়ে পড়ে শিক্ষার্থীরা। ইয়াছমিন নামে একজন বলেন, দুর্গম যাতায়াতের কারণে পঞ্চম শ্রেণির পর আর পড়ালেখা করা হয়নি। আমার মতো এই গ্রামের বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই অল্পতেই পড়ালেখা বাদ দিয়ে দিতে বাধ্য হয়।

গ্রামবাসী জানান, সাঁকো পার হতে গিয়ে পড়ে হাতপা ভাঙার ঘটনা নিত্যদিনের। এছাড়া গ্রামের কেউ অসুস্থ হলে হাসপাতালে নিয়ে যেতেও পাওয়া যায় না গাড়ি। তবে ঘাটচেক ভাবনাকেন্দ্র দিয়ে নবনির্মিত সড়কের সাথে পাহাড়ি পথে এক কিলোমিটারের কম অংশ সড়ক করে দিলে এই দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পাবেন বলে জানিয়েছেন গ্রামবাসী।

স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর জসিম উদ্দিন শাহ বলেন. আমি দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে সরকারি যাবতীয় কর্মসূচিতে তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই গ্রামের বাসিন্দাদের যাতায়াতের সড়ক নির্মাণের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া হবে। পাশাপাশি বাসিন্দাদের জীবন মান উন্নয়নেও পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধস্বাধীনতার প্রথম ঘোষণা প্রচার রাজনৈতিক নেতৃত্বের দূরদর্শী সিদ্ধান্ত
পরবর্তী নিবন্ধমোহাম্মদ মোবারক