চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক সংস্কারের রূপরেখা দিয়েছে নবনির্বাচিত কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু)। শিক্ষার্থীদের চাহিদা ও বাস্তব পরিস্থিতি বিবেচনায় তারা একযোগে একাডেমিক, আবাসন, যাতায়াত, স্বাস্থ্যসেবা ও প্রযুক্তি খাতে বেশ কিছু প্রস্তাব তুলে ধরেছে। গতকাল মঙ্গলবার চাকসু ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়। নবনির্বাচিত সপ্তম ক্যাবিনেটের প্রথম কার্যনির্বাহী সভার সিদ্ধান্তগুলো সেখানে তুলে ধরেন সহ–সভাপতি (ভিপি) ইব্রাহিম রনি। চাকসুর সাধারণ সম্পাদক সাঈদ বিন হাবিব সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন। ইব্রাহিম রনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য কোটা শূন্যে নামিয়ে আনা আমাদের অন্যতম প্রধান প্রস্তাব। আমরা মনে করি, যোগ্যতার ভিত্তিতেই ভর্তি প্রক্রিয়া পরিচালিত হওয়া উচিত।তিনি আরও জানান, আবাসন সংকট নিরসনে ১০ তলা বিশিষ্ট দুটি নতুন হল নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সিট সংকট সমাধানে ৬৯৩ কোটি টাকার একটি প্রকল্প একনেকে অনুমোদনের প্রক্রিয়ায় রয়েছে। পাশাপাশি কটেজ ও ভাড়াবাসা তদারকিতে বিশেষ কমিটি গঠন এবং অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য আবাসন ভাতা প্রাপ্তির বিষয়ে ইউজিসিকে চিঠি পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে। যাতায়াত ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনার লক্ষ্যেও চাকসুর প্রস্তাব রয়েছে। শাটল ট্রেন থাকা সত্ত্বেও শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি দূর হয়নি বলে উল্লেখ করেন ভিপি রনি। এজন্য শহরগামী বাস সার্ভিস চালু ও ১ নম্বর গেট থেকে জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত চক্রাকার বাস সার্ভিস শুরু করার প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। একই সঙ্গে শিক্ষক–কর্মকর্তাদের বাসে শিক্ষার্থীদের চলাচলের অনুমতি চাওয়া হয়েছে। ছাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে শাটল ট্রেনে নির্দিষ্ট বগি বরাদ্দের দাবিও উত্থাপন করা হয়। গ্রন্থাগার ও ক্যাফেটেরিয়া উন্নয়নেও নতুন ভাবনা যুক্ত করেছে চাকসু। ‘ওপেন জোন’ চালু, বই নিয়ে প্রবেশের নিয়ম শিথিল, দ্রুতগতির ওয়াইফাই এবং অনলাইন সেবা বৃদ্ধির উদ্যোগের কথা জানানো হয়। স্বাস্থ্যসেবা খাতে উন্নয়ন প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসক সংখ্যা বাড়ানো, দ্রুত একজন গাইনোকোলজিস্ট নিয়োগ, জরুরি হটলাইন চালু এবং নতুন অ্যাম্বুলেন্স সচল করা। এতে প্রযুক্তি খাতে সুবিধা বৃদ্ধির অংশ হিসেবে প্রথম বর্ষ থেকেই শিক্ষার্থীদের একাডেমিক ইমেইল দেওয়া, স্টোরেজ ৫ থেকে ১৫ জিবি করা এবং বিভাগের ওয়েবসাইট নিয়মিত আপডেট রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়। পাশাপাশি মোজাম্মেল হক অডিটোরিয়াম ও মুক্তমঞ্চ সংস্কার এবং সাংস্কৃতিক কার্যক্রমে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে প্রণোদনা দেওয়ার প্রস্তাবও অনুমোদিত হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন চাকসুর যোগাযোগ ও আবাসন সম্পাদক ইসহাক ভূঁইয়া, ক্রীড়া সম্পাদক মোহাম্মদ শাওন, সাহিত্য–সংস্কৃতি ও প্রকাশনা সম্পাদক হারেজুল ইসলামসহ অন্যান্য নির্বাচিত প্রতিনিধিরা।












