এবারের বিশ্বকাপে ফেভারিটের মতই শুরু করেছিল ফ্রান্স। কিন্তু শেষ ম্যাচে হেরে অজেয় থাকা হলো না চ্যাম্পিয়নদের। যদিও কাতারে সবার আগে শেষ ষোলো নিশ্চিত করা দল ফ্রান্স। তবে গ্রুপে শেষ ম্যাচে তাদের ১-০ গোলে হারিয়ে চমক দেখায় তিউনিসিয়া। সেই ধাক্কা সামলে এবার কোয়ার্টার-ফাইনালে ওঠার পরীক্ষা ফরাসিদের। যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ ১৯৮৬ সালের পর প্রথমবার নকআউট পর্বের টিকেট পাওয়া পোল্যান্ড। দোহার আল থুমামা স্টেডিয়ামে আজ মাঠে নামবে ফ্রান্স ও পোল্যান্ড। বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় শুরু হবে ম্যাচটি। সবশেষ এই দুই দল একে অন্যের বিপক্ষে লড়েছিল ২৬ বছর আগে। গ্রুপ রানার্স আপ হয়ে পোল্যান্ড এসেছে নক আউট পর্বে। আর গ্রুপ সেরা হয়ে ফ্রান্স। তাই অপেক্ষাকৃত সহজ প্রতিপক্ষকে টপকে শেষ আটে জাযগা করে নেওয়াই লক্ষ্য ফরাসিদের।
বিশ্বকাপের আগের তিন আসরে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন দলগুলো নকআউট পর্বের আগেই বাদ পড়েছিল। তবে সে ধারায় ছেদ ফেলতে পেরেছে ফ্রান্স। ২০০৬ সালে ব্রাজিলের পর এবার প্রথম শিরোপাধারী দল হিসেবে গ্রুপ পর্বের বৈতরণী পার করেছে ফ্রান্স। তাই তারা যে শেষ পর্যন্ত যাবে তেমনটি ধরেই নেওয়া যায়। যদিও দলটির বেশ কয়েকজন তারকা খেলোয়াড় নাই। তারপরও তারা গ্রুপ পর্বে দারুন খেলেছে।
অস্ট্রেলিয়াকে ৪-১ এবং ডেনমার্ককে ২-১ গোলে পরাজিত করে সবার আগে শেষ ষোল নিশ্চিত করেছিল ফ্রান্স।যদিও শেষ ম্যাচে তারা হেরে যায় তিউনিশিয়ার কাছে। অপরদিকে পোল্যান্ড মেঙিকোর সাথে ড্র করে বিশ্বকাপ শুরু করে। পরের ম্যাচে সৌদি আরবকে ২-০ গোলে হারায় শেষ ম্যাচে আর্জেন্টিনার কাছে ২-০ গোলে হেরে গেলেও গোল গড়ে মেক্সিকোকে পেছনে ফেলে পোল্যান্ড জায়গা করে নেয় শেষ ষোলতে। শক্তি সামর্থ্য ছাড়াও পরিসংখ্যানেও পোল্যান্ডের চাইতে এগিয়ে ফ্রান্স। পোল্যান্ডের বিপক্ষে সব মিলিয়ে সবশেষ সাত ম্যাচে অপরাজিত আছে ফ্রান্স। যেখানে জয় ৩টি আর ড্র ৪টি।
পোল্যান্ডের বিপক্ষে ফরাসিরা সবশেষ হেরেছিল ১৯৮২ সালে প্রীতি ম্যাচে। সে ম্যাচটি ৪-০ গোলে হেরেছিল ফ্রান্স। ৩৬ বছর পর বিশ্বকাপে নকআউট পর্বে জায়গা করে নিয়েছে পোল্যান্ড। ১৯৮৬ আসরে শেষ ষোলোয় তাদের ৪-০ গোলে হারিয়েছিল ব্রাজিল। তবে আজকের ম্যাচে পোল্যান্ডের সবচাইতে বড় ভরসার নাম গোল রক্ষক ভয়চেখ স্ট্যাসনি। টাইব্রেকার বাদে যুক্তরাষ্ট্রের ব্র্যাড ফ্রিডেল (২০০২) ও ইয়ান তমাসেভস্কির (১৯৭৪) পর তৃতীয় গোলরক্ষক হিসেবে বিশ্বকাপে দুটি পেনাল্টি সেভ করার কীর্তি গড়েছেন পোল্যান্ডের এই গোলরক্ষক। আগের ম্যাচে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে একাই লড়াই করেছেন তিনি শুধু তাই নয় সৌদি আরব ও আর্জেন্টিনার বিপক্ষে স্পট কিক ঠেকান তিনি। এবারের বিশ্বকাপ আসরে নিজেদের প্রথম দুই ম্যাচে কোন গোলই হজম করেনি পোল্যান্ডের এই গোল রক্ষক।
শেষ ম্যাচে আর্জেন্টিনার কাছ থেকে দুটি গোল হজম করেন তিনি। তাই ফ্রান্সের বিপক্ষে তিনিই দলের জন্য বড় প্রেরণা হতে পারে। অবশ্য বিশ্বকাপের লড়াইয়ে এগিয়ে পোলিশরা। এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপে একবারই সাক্ষাৎ হয়েছে ফ্রান্স ও পোল্যান্ডের। ১৯৮২ আসরের তৃতীয় স্থান নির্ধারণী সে ম্যাচে ৩-২ গোলে জিতেছিল পোলিশরা। সেটিও আজ প্রেরনা হতে পারে। অবশ্য দুই দলের সবশেষ দুটি ম্যাচ ছিল ১৯৯৬ ইউরো বাছাইয়ে। উভয় ম্যাচই ড্র হয়েছিল। কিন্তু সময় বদলেছে। এখন ফ্রান্স দলও অনেক শক্তিশালী। তার উপর তারা বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন। তাই কতটা লড়াই করতে পারবে পোল্যান্ড সেটা জানা যাবে আজ মাঠে। আজ যারা জিতবে তারা যে এগিয়ে যাবে শিরোপার পথে আরো একধাপ। আর হারলে বাপি বাড়ি যা।