পূজার বর্ণিল আনন্দের প্রস্তুতি

কেনাকাটায় মার্কেট শপিংমলে ভিড়

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ৪ অক্টোবর, ২০২১ at ৫:৩৭ পূর্বাহ্ণ

দুয়ারে কড়া নাড়ছে হিন্দু ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজা। পূজায় চাই নতুন জামা। নতুন জামা যে কোনো উৎসব আনন্দকে আরো বর্ণিল করে তোলে। তাই তো বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষের ভিড় বাড়ছে শপিংমল-মার্কেটে। চলছে পূজার কেনাকাটার ধুম। তবে বরাবরের মতো উপক্ষিত স্বাস্থ্যবিধি। ব্যবসায়ীরা বলছেন, দুর্গাপূজা ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে মার্কেটে ক্রেতাদের ভিড় বাড়ছে। এই ক’দিনে বেচাবিক্রিও আশাব্যঞ্জক।
গতকাল নগরীর টেরিবাজার, রিয়াজুদ্দিন বাজার, নিউ মার্কেট, জহুর হকার্স মার্কেট, তামাকুমন্ডি লেইন, ভিআইপি টাওয়ার, আমিন সেন্টার, ইউনেস্কো সেন্টার, সেন্ট্রাল প্লাজা, আফমি প্লাজা ও শপিং কমপ্লেক্সে ঘুরে এই চিত্র দেখা গেছে। বিক্রেতারা থরে থরে কাপড় সাজিয়েছেন। বিক্রিও করছেন। অনেক বিক্রেতা ক্রেতাদের পছন্দের জামা দেখাচ্ছেন। ক্রেতারা কালার ডিজাইন পছন্দ হলেই কাপড় কিনে হাসিমুখে বাড়ির ফিরছেন। টেরিবাজারের একটি সুপারমলের বিক্রেতা মো. শাহজাহান বলেন, এ পর্যন্ত শাড়ি পাঞ্জাবিই সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়েছে। এখন যেহেতু গরমের দিন, তাই কটনের জামাই সবচেয়ে বেশি চলছে। এছাড়া কিছু ক্রেতা সিল্কের পাঞ্জাাবি ও কাথান শাড়িও কিনছেন।
টেরিবাজারে ক্রেতা অনসূয়া রায় পূর্বা বলেন, সারাবছরই কেনাকাটা করা হয়। তবে পূজার কেনাকাটার আনন্দ আলাদা। এক্ষেত্রে নিজে জামা না কিনেও বাড়ির ছোটদের জামা কিনে দিলে আনন্দের মাত্রা বহুগুণ বেড়ে যায়। তবে বিক্রেতারা জামা কাপড়ের দাম বেশি চাইছেন।
টেরিবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুল মান্নান বলেন, দিনের বেলায় গরমের কারণে বিক্রি কিছুটা কম। তবে পড়ন্ত বিকেল থেকে ক্রেতাদের আনাগোনা বাড়তে থাকে। বেচা-বিক্রির অবস্থা খুব খারাপ। জামা কাপড়ের দামও নাগালের মধ্যে রয়েছে। আমরা ব্যবসায়ীরা প্রত্যেকটি দোকানে সরকার ঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যবসা পরিচালনা করছি।
জহুর হকার্স মার্কেটের অলিদ ফ্যাশনের স্বত্ত্বাধিকারী এমএম ইলিয়াছ উদ্দিন বলেন, পূজা উপলক্ষে বর্তমানে বেচাবিক্রি আগের চেয়ে বেড়েছে। গত ঈদেও করোনার কারণে আমাদের ব্যবসা ভালো হয়নি। তবে বর্তমানে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় আমরা স্বাচ্ছন্দে ব্যবসা করতে পারছি। আমরা প্রত্যেক ক্রেতাকে মাস্ক পরা নিশ্চিত করছি। মাস্ক ছাড়া কোনো ক্রেতার কাছে কাপড় বিক্রি করছি না।
জহুর হকার্স মার্কেটে আসা ক্রেতা চন্দন ভৌমিক বলেন, এবার পূজোয় তেমন কিছু নিচ্ছি না। একটি জিন্স প্যান্ট ও টি শার্ট কিনতে এসেছি। এছাড়া মায়ের জন্য শাড়ি ও বাবার জন্য পাঞ্জাবি কিনেছি।
দেওয়ানজী পুকুর লেইনের ফ্যাশন হাউস ‘প্রিয়জন’র স্বত্বাধিকারী সুপল দাশ বলেন, গত বছর করোনার কারণে ব্যবসা হয়নি। এ পর্যন্ত বেচাবিক্রি বেশ ভালো। মার্কেটগুলোতে পূজোর আমেজ বিরাজ করছে।
নগরীর রেয়াজুদ্দিন বাজারেও চলছে কেনাকাটার ধুম। বিকেল নামতেই সরু গলিগুলোতে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা হয়। একই অবস্থা তামাকুমণ্ডি লেইনেও। তামাকুমন্ডি লেইনের ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম বলেন, পূজাকে কেন্দ্র করে সনাতন ধর্মালম্বী ভাই-বোনেরা মার্কেটমুখী হয়েছেন। এ পর্যন্ত যে পরিমাণ বেচাবিক্রি হচ্ছে তাতে আমরা সন্তুষ্ট।
তামাকুমন্ডি লেইনে আসা গৃহিনী সুরভী দত্ত বলেন, বাচ্চার জন্য জামা কিনতে এসেছি। নতুন জামা ছাড়া আসলে পূজার আনন্দ পূর্ণতা পায় না। নিজের জন্য কিছু না নিলেও বাচ্চাদের জন্য ঠিকই কিছু কিছু নিতে হয়।
তামাকুমণ্ডি লেইন বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আহমদ কবির দুলাল দৈনিক আজাদীকে বলেন, মার্কেটে ক্রেতাদের উপস্থিতি আশাব্যাঞ্জক। গত বছর করোনার কারণে ঈদ ও পূজা দুটোতে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। এ বছর ঈদে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও পূজায় পরিস্থিতি উন্নতি হয়েছে। যেহেতু করোনা ভাইরাস এখনও রয়েছে, তাই সবাইকে মাস্ক পরার জন্য উদ্বুব্ধ করছি। যাতে সবাই মাস্ক পরে আসেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসংকট কোথায়, উত্তরণ কীভাবে
পরবর্তী নিবন্ধজাতিসংঘ সফর নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন আজ