সাতকানিয়ায়, রাউজান ও বান্দরবানে পৃথক অগ্নিকাণ্ডে ১৬ বসতঘর ও ১২টি দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ও সন্ধ্যায় এসব ঘটনা ঘটে। আমাদের সাতকানিয়া প্রতিনিধি জানান, সাতকানিয়ায় অগ্নিকাণ্ডে ১৩টি বসতঘর ভস্মীভূত হয়েছে। এতে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকারসহ প্রায় ৪০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যরা। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার কালিয়াইশ ইউনিয়নের পশ্চিম কাটগড় এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
এলাকাবাসী জানান, গতকাল সকাল ৯টার দিকে কালিয়াইশ ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের পশ্চিম কাটগড় জেলে পাড়ার স্বপন জলদাসের রান্না ঘর থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়ে তা দ্রুত চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। এসময় পার্শ্ববর্তী মনোরঞ্জন জলদাস, সুভাষ জলদাস, প্রদীপ জলদাস, বলরাম জলদাস, ননাই জলদাস, কমল জলদাস, নীল কমল জলদাস, দীজমনি জলদাস, রাজমনি জলদাস, সৌরভ জলদাস, দিলীপ জলদাস ও সুবল জলদাসের বসতঘর পুড়ে যায়। এছাড়া তাদের পূজা মণ্ডপও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরে সাতকানিয়া ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।
সাতকানিয়া ফায়ার সার্ভিস স্টেশন কর্মকর্তা মো. জুলহাস বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে দীর্ঘক্ষণ চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হই। প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে রান্না ঘরের চুলা থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়ে চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে।
কালিয়াইশ ইউপি চেয়ারম্যান হাফেজ আহমদ জানান, অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত প্রত্যেক পরিবারকে এক হাজার নগদ টাকা, কম্বল ও চাল দেয়া হয়েছে। সাতকানিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আল বশিরুল ইসলাম জানান, প্রাথমিকভাবে উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে অগ্নিদুর্গতদের ২টি করে কম্বল দেয়া হয়েছে। তাদের তালিকা জেলা প্রশাসনের কাছে পাঠানো হয়েছে। পরবর্তীতে ক্ষতিগ্রস্ত সবাইকে সরকারিভাবে সহায়তা করা হবে।
আমাদের বান্দরবান প্রতিনিধি জানান, বান্দরবান বাজারে একটি মার্কেটে আগুনে ১২টি দোকান পুড়ে গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, বান্দরবান বাজারের কেএসপ্রু মার্কেটের একটি ইলেক্ট্রনিঙের দোকানে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়ে তা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। এতে পুড়ে গেছে মার্কেটের কাপড়, ওষুধ, ইলেক্ট্রনিঙ, প্লাস্টিকসহ বিভিন্ন ধরনের ১২টি দোকান। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ২টি ইউনিট, পুলিশ, সেনাবাহিনী ও স্থানীয়রা প্রায় দুই ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। এসময় আগুনে পার্শ্ববর্তী আরও কয়েকটি দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আগুনে প্রায় ৪ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বান্দরবান ফায়ার সার্ভিস ইউনিটের সহকারী পরিচালক মো. কামাল জানান, আগুনে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তাৎক্ষণিক বলা সম্ভব নয়।
আমাদের রাউজান প্রতিনিধি জানান, রাউজানে অগ্নিকাণ্ডে তিন বসতঘর পুড়ে গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে উপজেলার ডাবুয়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব ডাবুয়া মহাজান পাড়ায় এই ঘটনা ঘটে। ক্ষতিগ্রস্তরা হলেন প্রদীপ বর্ধন, সজিত বর্ধন, অজিত বর্ধন। ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক হারাধন বিশ্বাস জানান, বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে সূত্রপাত হয়ে আগুনের লেলিহান শিখা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে ৩টি বসতঘর পুড়ে যায়। ক্ষতিগ্রস্তদের দাবি আগুনে আসবাবপত্র, নগদ টাকা, স্বার্ণালংকার পুড়ে প্রায় আট লক্ষ টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। রাউজান ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলাম বলেন, অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে দমকল বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে দেড়ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।