পুলিশের সঙ্গে জামায়াতের সংঘর্ষ, গাড়ি ভাঙচুর

চৌমুহনী মোড় ।। সহকারী কমিশনারসহ দুই পুলিশ আহত, আটক ২১

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ২৯ জুলাই, ২০২৩ at ৪:৪২ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম নগরীতে জামায়াতে ইসলামীর মিছিল থেকে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে কর্মকর্তাসহ দুই পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। ঘটনার সময় পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজের পর নগরীর ডবলমুরিং থানাধীন চৌমুহনী মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে জামায়াতের ২১ জন নেতাকর্মীকে আটক করেছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা, জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমানসহ অন্য নেতাকর্মীদের মুক্তি, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ ও সাংবিধানিক অধিকার সভাসমাবেশ করতে না দেওয়ার প্রতিবাদে এই বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। হামলায় আহত দুই পুলিশ সদস্য হলেন সিএমপি ডবলমুরিং জোনের সহকারী কমিশনার মুকুল চাকমা ও কনস্টেবল মুসা। তাদের বিভাগীয় পুলিশ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) পশ্চিম জোনের উপ কমিশনার জসিম উদ্দিন বলেন, জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা ‘নারায়ে তাকবির, আল্লাহ আকবর’ স্লোগান দিয়ে মিছিল বের করে। পরে পুলিশ তাদের ধাওয়া দিলে পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এতে ডবলমুরিং থানার সহকারী কমিশনার মুকুল চাকমাসহ দুই পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে অভিযান চালিয়ে আমরা ২১ জনকে আটক করেছি। তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

পুলিশ জানিয়েছে, আটক ব্যক্তিরা জামায়াতশিবিরের কর্মী। এর আগে গতকাল শুক্রবার বেলা ২টার দিকে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছিল জামায়াতের চট্টগ্রাম নগর শাখা। তবে পুলিশের কাছ থেকে অনুমতি না পাওয়ায় তারা নগরের আগ্রাবাদ এলাকায় কর্মসূচির ঘোষণা দেয়।

দলটির ফেইসবুক পেইজে দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জামায়াতের কেন্দ্রীয় সুরা সদস্য ও নগর কমিটির সেক্রেটারি অধ্যক্ষ নুরুল আমিনের নেতৃত্বে বাদামতল মোড় থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের করা হয়।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জুমার নামাজ শেষে জামায়াতশিবিরের নেতাকর্মীরা জড়ো হয়ে ডবলমুরিং থানার আগ্রাবাদ বাদামতল মোড় থেকে মিছিল শুরু করে। মিছিলটি চৌমুহনী মোড় এলাকায় এসে শেষ হয়। সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে জামায়াতের নেতারা বক্তব্য রাখেন। এরপর মিছিল করার নামে চৌমুহনী মোড়ে বিশৃক্সখলা সৃষ্টি করেন জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা। পরে ব্যানারসহ বিশাল একটি বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন নেতাকর্মীরা। বিক্ষোভ মিছিল চলাকালে পুলিশ বাধা দিলে জামায়াতশিবিরের কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বাধে। এতে উভয়পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। একপর্যায়ে জামায়াতশিবিরের নেতাকর্মীরা পুলিশের একটি গাড়িসহ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করে। পরে পুলিশের ধাওয়ায় তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।

প্রসঙ্গত, এ মাসের মাঝামাঝি সময়ে লালদীঘি মাঠে সমাবেশ করার অনুমতি চেয়ে পুলিশ কমিশনারের কাছে আবেদন করেছিলেন জামায়াত ইসলামীর নেতারা। কিন্তু তাদের অনুমতি দেওয়া হয়নি। এরপর কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে শুক্রবার নগরীর আন্দরকিল্লা জামে মসজিদ চত্বরে বিক্ষোভ সমাবেশ করার অনুমতি চেয়ে গত ২৩ জুলাই আবার পুলিশের কাছে আবেদন করে সংগঠনটি। তাতেও অনুমতি দেওয়া হয়নি। এ অবস্থায় শুক্রবার সকাল থেকে বিভিন্ন স্থানে এবং গুরুত্বপূর্ণ

মসজিদগুলোতে পুলিশের সতর্ক অবস্থান ছিল। এরমধ্যেই বাদামতল জামে মসজিদ থেকে নামাজের পরপর মিছিল বের করে জামায়াতে ইসলামী।

এদিকে পুলিশের ওপর হামলা ও ভাঙচুরের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ডবলমুরিং থানা ছাত্রলীগ। শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফরহাদ সায়েম ও সাধারণ সম্পাদক রাকিব হায়দারের নেতৃত্বে মিছিলটি আগ্রাবাদ, মাজার গেট, বাদামতলী মোড় হয়ে চৌমুহনী মোড়ে এসে শেষ হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকালুরঘাট সেতুর কাজ শুরু হচ্ছে ১ আগস্ট থেকে
পরবর্তী নিবন্ধসমাবেশে যোগ দিতে ঢাকা এসে বিএনপি নেতার মৃত্যু