পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয়া মাদককারবারি ভাইসহ গ্রেপ্তার

অভিযানে আটক আরও তিন সহযোগী

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ২৪ নভেম্বর, ২০২২ at ৬:০৭ পূর্বাহ্ণ

পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার চারদিন পর ঢাকায় পালিয়ে যাওয়ার সময় অবশেষে ধরা পড়েছে চান্দগাঁও থানা এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী হানিফ ও তার ভাই ইয়াসিন। পরে তাদের তথ্যমতে আরও তিন সহযোগীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে সীতাকুণ্ড উপজেলার ভাটিয়ারী এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে শ্যামলী পরিবহনের একটি বাসে তল্লাশি করে হানিফ ও ইয়াসিনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তার মোহাম্মদ হানিফের বাড়ি নগরীর চান্দগাঁও থানার কালুরঘাট এলাকায়। গ্রেপ্তার বাকি তিন সহযোগী হলো মহিউদ্দিন শরীফ (২৩), রেজাউল করিম (২০) এবং হৃদয় (২১)।

সিএমপির গোয়েন্দা শাখার অতিরিক্ত উপ কমিশনার (বন্দর) শামীম কবির আজাদীকে বলেন, পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা করে ছিনিয়ে নেওয়া মাদক মামলার প্রধান আসামি হানিফ ও তার ভাই ইয়াসিন গত চারদিন ধরে এলাকায় ছিল না। বোয়ালখালী, পটিয়া, রাঙ্গুনিয়ার বিভিন্ন এলাকায় আত্মগোপনে থাকার পর মঙ্গলবার রাতে হানিফ ও তার ভাই ঢাকায় পালিয়ে যাচ্ছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বাসে তল্লাশি করে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বাকি তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত শনিবার (১৯ নভেম্বর) রাতে পাঁচ হাজার পিস ইয়াবাসহ হানিফ ও দেলোয়ারকে গ্রেপ্তার করে কালুরঘাট পুলিশ ফাঁড়িতে নেওয়া হচ্ছিল। এ সময় কয়েকজন তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ এবং মাদক বিক্রেতাদের সহযোগী মিলে পুলিশের ওপর হামলা চালায়। তারা হানিফ ও দেলোয়ারকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এছাড়া পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) শরীফ রোকনুজ্জামানের ওয়্যারলেস সেট ছিনিয়ে নেওয়া হয়। এসময় পুলিশের সঙ্গে হানিফ বাহিনীর সংঘর্ষ হলে হানিফের বোন নাজমা গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান এবং দুই পুলিশ সদস্যও আহত হন।

ঘটনার দিন রাতেই মৌলভী বাজারের ৯ নম্বর পোল এলাকায় হানিফের ডেরায় ব্লক রেইড দিয়ে হামলার ঘটনায় জড়িত আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। আসামিরা হলো রাব্বি ইসলাম রবিন প্রকাশ মনি হিজড়া (২২), ফরিদুল ইসলাম প্রকাশ সুন্দরী হিজড়া (২০), বাদশা প্রকাশ ববিতা হিজড়া (১৮), আব্দুল জলিল (২০), দিল মোহাম্মদ (১৮), আব্দুর রহমান (১৮), আকলিমা আক্তার আঁখি (৩৫) ও মো. ইব্রাহিম (২৮)। এছাড়া গত সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় মৌলভীবাজার রেললাইন সংলগ্ন এলাকা থেকে এসআই শরীফ রোকনুজ্জামানের ওয়্যারলেস সেটটি পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পটুয়াখালীর মীর্জাগঞ্জের বাসিন্দা হানিফ মোহরার ৯ নম্বর ও ৮ নম্বর রেল লাইন কেন্দ্রীক ইয়াবা ব্যবসাসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণ করে। এই কাজে তৃতীয় লিঙ্গের বিশাল বাহিনী রয়েছে তার। সরকারদলীয় কতিপয় নেতাদের ভাগ বাটোয়ারা দিয়ে দেদারসে মাদক ব্যবসা চালিয়ে আসছিল হানিফ। তার নামে মাদক-খুনসহ একাধিক মামলা থাকার পরও র‌্যাব-পুলিশের একাধিক অভিযানে সে ছিল ধরাছোঁয়ার বাইরে। অবশেষে মঙ্গলবার ধরা পড়লো চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী হানিফ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএই দিনে
পরবর্তী নিবন্ধআবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান চট্টগ্রামের নতুন জেলা প্রশাসক