পিতা-পুত্র হত্যাকাণ্ডে ৪ জনের স্বীকারোক্তি

নতুন গ্রেপ্তার ৬

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ২৮ অক্টোবর, ২০২১ at ৬:১৯ পূর্বাহ্ণ

ফটিকছড়ি থানার চাঞ্চল্যকর পিতা-পুত্রের পৃথক হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আরও চারজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। গ্রেপ্তার হয়েছে নতুন আরও ছয় জন। এর আগে গ্রেপ্তারকৃত তিনজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছিল।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই চট্টগ্রাম জেলার এসআই মো. কামাল আব্বাস জানান, ২০২০ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা সাতটার দিকে ফকির আহাম্মদ (৩৩) ফটিকছড়ি হলুদ্যা খোলা এলাকায় তার খামার বাড়ি থেকে সিগারেট কিনতে বের হয়ে আর বাড়ি ফিরেনি। ২৯ সেপ্টেম্বর কাঞ্চননগর ইউপির মানিকপুর হলুদ্যা খোলা সাকিনস্থ লক্ষীছড়ি সীমান্তবর্তী দুইদ্যা খালে ফকির আহাম্মদের গলাকাটা লাশ পাওয়া যায়। এ সংক্রান্তে তার পিতা এজাহার মিয়া (৭০) বাদী হয়ে ফটিকছড়ি থানায় একটি মামলা করেন।
গত ২৪ জুন সকাল নয়টার দিকে এজাহার মিয়া (৭০) ও তার ছেলে ইসমাইল হোসেন (২৩) গরুর পাল নিয়ে ফটিকছড়ি থানাধীন নিশ্চিন্তপুর এলাকায় আহমদের পতিত জমিতে চাষ করতে যায়। ইসমাইল হোসেন গরু চরাতে থাকে ও এজাহার মিয়া ধানের জালা ফেলার জন্য জমি চাষাবাদ করতে থাকে। বিকেল পাঁচটার দিকে ইসমাইল গরু নিয়ে বাড়িতে চলে যায়। ইসমাইল বাড়িতে গেলে তার মা তার পিতা এজাহার মিয়ার কথা জিজ্ঞাসা করলে সে জানায়, জমির বীজতলা তৈরি শেষে সন্ধ্যার সময় চলে আসবে। কিন্তু রাত আটটার সময়ও এজাহার মিয়া বাড়িতে না যাওয়ায় তার স্ত্রী ও আত্মীয়-স্বজন আশপাশে বাজার-ঘাটে খোঁজ করতে থাকে। কিন্তু কোন খোঁজ-খবর পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে ২৫ জুন বিকাল তিনটার দিকে নিশ্চিন্তপুর বাঁশঝাড়ের নিচে এজাহার মিয়ার গলাকাটা লাশ পাওয়া যায়। এই সংক্রান্তে ভিকটিমের স্ত্রী নাছিমা বেগম বাদী হয়ে ফটিকছড়ি থানায় একটি মামলা করেন।
বহুল আলোচিত মামলা দুটির মধ্যে এজাহার মিয়া হত্যা মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পান পিবিআই, চট্টগ্রাম জেলার এসআই মো. কামাল আব্বাস। তিনি গত ২৮ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্তভার গ্রহণ করেন। এজাহার মিয়া হত্যা মামলাটির তদন্ত কার্যক্রম চলাকালীন তার পুত্র ফকির আহাম্মদ হত্যা মামলাটির রহস্যও একই সূত্রে গাঁথা মর্মে প্রতীয়মান হওয়ায় গত ১৯ অক্টোবর মামলাটির তদন্তও এসআই কামাল আব্বাসের উপর অর্পিত হয়। উভয় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মো. কামাল আব্বাসের নেতৃত্বে গত ২৬ অক্টোবর বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে হত্যাকাণ্ডের জড়িত মো. বাহাদুর (৩৭), মো. রমজান (৪০), মো. মহি উদ্দিন (৩০), মো. আবুল কালাম প্রকাশ আবু (৬৬), মো. সুলতান আহমদ (৬৫) এবং মো. নজরুল ইসলামকে (৩০) গ্রেপ্তার করে।
তদন্তে বের হয়ে আসে, লিজের জমি নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে প্রথম হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। দীর্ঘ ৮ মাসেও হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্‌ঘাটন না হওয়ায় বাদী মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নিলে বিষয়টি আসামিরা অবগত হয়ে বাদী এজাহার মিয়াকেও পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে।
তদন্ত কর্মকর্তা জানান, গতকাল ২৭ অক্টোবর গ্রেপ্তারকৃত ছয়জনকে আদালতে হাজির করা হলে তাদের মধ্যে বাহাদুর, রমজান, মহিউদ্দিন ও নজরুল ইসলাম আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকাপ্তাইয়ে ইউপি সদস্য খুন
পরবর্তী নিবন্ধগোল্ডেন শীপ ব্রেকিংয়ের ১২ মালিকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা