পাহাড়ি ঢলে রাউজানের নিচু এলাকায় হাঁটু পানি

হাটহাজারীতে পানিবন্দি লক্ষাধিক মানুষ

রাউজান ও হাটহাজারী প্রতিনিধি | মঙ্গলবার , ২১ জুন, ২০২২ at ৬:৩৯ পূর্বাহ্ণ

কয়দিনের ভারি বর্ষণে সৃষ্ট পাহাড়ি ঢলে রাউজান ও হাটহাজারী উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও পৌরসভার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। অনেক রাস্তায় হাঁটু পানি হওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

রাউজান : প্রতিনিধি জানান, গতকাল বৃষ্টি না থাকলেও পাহাড়ি ঢল নেমে রাউজানের বিভিন্ন ইউনিয়ন ও পৌরসভার কিছু বাড়িঘর ও রাস্তাঘাট হাঁটু পানিতে তলিয়ে গেছে। উপজেলা ও পৌর এলাকার বিভিন্নস্থানে ঘুরে দেখা গেছে উপজেলার পূর্বাংশের পাহাড় থেকে বর্ষার পানির ঢল বিভিন্ন খাল নালা ছড়া হয়ে রাউজানের উপর দিয়ে হালদায় গিয়ে পড়ছে। পাহাড়ি স্রোতের তীব্রতায় ডাবুয়া, বেরুলিয়া, রাউজান, কাশখালীসহ বিভিন্ন খালের পাড় ভেঙ্গে উপজেলার নিচু এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। উপজেলার উত্তর-দক্ষিণ যোগাযোগের সবকটি রাস্তায় হাঁটু পানি হওয়ায় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।

রাউজান পৌরসভার মেয়র জমির উদ্দিন পারভেজ বলেন, পাহাড়ি ঢলে ক্ষতিগ্রস্ত পৌর এলাকার কিছু কিছু রাস্তাঘাট জরুরিভাবে সংষ্কার করে দেয়া হচ্ছে। কী পরিমাণ রাস্তাঘাট ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা নিরুপন করছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের একটি প্রকৌশলী দল। তারা পাহাড়ি ঢলে ক্ষতিগ্রস্ত খালের পাড় পরিদর্শন করে গেছে।
হাটহাজারী : হাটহাজারী প্রতিনিধি জানান, কয়দিনের ভারি বর্ষণে সৃষ্ট পাহাড়ি ঢলে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও পৌরসভার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে করে উপজেলার আওতাধীন লক্ষাধীক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বন্যার কারণে নিম্নাঞ্চলের সাথে উপজেলা সদরের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

জানা যায়, উপজেলার ফরহাদাবাদ, ধলই মির্জাপুর, ছিপাতলী, নাঙ্গলমোড়া, গুমানমর্দ্দন, গড়দুয়ারা, মেখল, উত্তর ও দক্ষিণ মাদার্শা, শিকারপুর বুড়িশ্চর ও হাটহাজারী পৌরসভারসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এছাড়া বিস্তীর্ণ এসব এলাকায় বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে মৌমুসী ফসল, খামার, মৎস্য খামার এবং গ্রামীণ ও মহাসড়কসহ প্রায় ২০/৩০টির মতো অভ্যন্তরীণ সড়ক। সরেজমিনে দেখা গেছে, চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি মহাসড়কের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ২নং গেইট ও বড়দীঘির পাড় এলাকায় মহাসড়কের অংশ বিশেষ ঢলের পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় মহাসড়কে ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি চলাচল করছে। বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়া মহাসড়কে বড়দীঘির পাড় এলাকায় লোকজনকে জাল দিয়ে মাছ ধরতে দেখা গেছে। পৌরসভাসহ বিভিন্ন এলাকায় শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বসতঘরে পানি ঢুকে পড়েছে। পানি নিষ্কাশনের সরকারি ছরা ও পানি চলাচলের জায়গা অবৈধভাবে দখল করার কারণে পৌর এলাকার কামাল পাড়া, ফটিকা, শাহজালাল পাড়া, আজিমপাড়া, পূর্ব দেওয়াননগর, উত্তর ও দক্ষিণ মীরেরখীল, পূর্ব আলমপূর, শায়েস্তা খাঁন পাড়া প্রভৃতি এলাকার বাড়ি ঘরে বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে। পৌরসভার সুন্দরীছরার বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে গিয়ে ৮ নং ওয়ার্ড ও মীর রোডের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিদুল আলম বলেন, পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টিপাতে উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়ন এবং পৌর এলাকার কিছু ওয়ার্ডের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। তাছাড়া পৌরসভার মাটিয়া মসজিদ এলাকায় মহাড়কের পাশে অবৈধভাবে ভরাটকৃত জায়গা খনন করে পানি সরানোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধটেকনাফে কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় ইজিবাইকের দুই রোহিঙ্গা যাত্রীর মৃত্যু
পরবর্তী নিবন্ধহালদার পাড়ে রেণু ফোটানোর উৎসব বৃষ্টিতে ম্লান