পাহাড়ি জনপদের শিশুরা পেল স্কুল

চকরিয়ার হারবাং

চকরিয়া প্রতিনিধি | শনিবার , ১১ মার্চ, ২০২৩ at ৪:৫০ পূর্বাহ্ণ

কক্সবাজারের চকরিয়ার হারবাং ইউনিয়নের প্রত্যন্ত ও অবহেলিত জনপদ উত্তর হারবাংয়ের কোরবানিয়া ঘোনায় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে ‘এমপি জাফর আলম প্রাথমিক বিদ্যালয়’। গত বুধবার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদ্যালয়টির যাত্রা শুরু করেছে।

জানা যায়, হারবাং ইউনিয়নের উত্তর হারবাং কোরবানিয়া ঘোনাসহ আশপাশের এলাকায় কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছিল না। এসব এলাকার শিক্ষার্থীদের যেতে হতো অনেক দূরের স্কুলে। ফলে পড়াশোনা শেষ না করে ঝরে পড়তো অনেকে। জনসংখ্যার অনুপাতে শিক্ষার হারে হারবাং ইউনিয়নটির স্তর ছিল নিম্নমুখী। কক্সবাজার১ আসনের সংসদ সদস্য ও চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাফর আলমের ব্যক্তিগত প্রচেষ্টা ও অর্থায়নে সেখানে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে প্রাথমিক বিদ্যালয়টি। এখন থেকে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের আর দূরে যেতে হবে না প্রাথমিক শিক্ষার পাঠ নিতে। বাড়ির কাছেই নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে প্রাথমিক বিদ্যালয়। প্রথমবারের মতো বিদ্যালয়টিতে প্রথম শ্রেণী থেকে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তি হয়েছে অন্তত শতাধিক শিক্ষার্থী। নিয়োগ দেওয়া হয়েছে প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষক।

হারবাং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মেহরাজ উদ্দিন মিরাজ জানান, তাঁর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের একেবারে অবহেলিত এলাকা হচ্ছে উত্তর হারবাংয়ের কোরবানিয়া ঘোনা গ্রামটি। এটি পাহাড়ঘেরা হওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থাও বেশ অনুন্নত। অনেক দূরদূরান্ত থেকে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করতে এতদিন ভিন্ন ওয়ার্ডের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যেত। চেয়ারম্যান বলেন, বিষয়টি আমাদের সংসদ সদস্য জাফর আলমকে অবহিত করার পর তিনি গুরুত্বের সাথে নেন। এমপি উদ্যোগ নেন কোরবানিয়া ঘোনা গ্রামে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার। তাই এক কানি জমি কিনে সেখানে বিদ্যালয়ের অবকাঠামো নির্মাণ শুরু করেন। প্রায় ৬ মাস ধরে কাজ শেষ হওয়ার পর আনুষ্ঠানিকভাবে গত বুধবার থেকে ক্লাস শুরু হয়েছে। শিক্ষকদের বেতনভাতাসহ যাবতীয় খরচ নির্বাহসহ সবকিছুই দেখভাল করছেন এমপি নিজেই।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি অনেকদূর এগিয়ে যাবে এবং অবহেলিত কোরবানিয়া ঘোনাসহ আশপাশের গ্রামগুলোতে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেবে।

বাড়ির কাছে বিদ্যালয় পেয়ে মহাখুশি কোরবানিয়া ঘোনা গ্রামের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। বিদ্যালয়ে ভর্তির পর ক্লাসে পাঠ নেওয়া কয়েকজন শিক্ষার্থী বলে, আমরা সরকারিভাবে বইও হাতে পেয়েছি। এখন থেকে আমরা পড়ালেখায় মনোযোগ দেবো। ভবিষ্যতে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে দেশ গড়ার কাজে নিজেদের নিয়োজিত রাখবো।

সংসদ সদস্য জাফর আলম দৈনিক আজাদীকে বলেন, সরকার প্রাথমিক শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করেছে। একজন শিক্ষার্থীও যাতে শিক্ষাগ্রহণ থেকে বিচ্যুত না হয় সেজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপবৃত্তির ব্যবস্থা চালু করেছেন। তিনি আরো বলেন, কোরবানিয়া ঘোনা গ্রামে বিদ্যালয় না থাকার বিষয়টি স্থানীয় চেয়ারম্যানের কাছ থেকে জানার পর সেখানে এক কানি জায়গা ক্রয় করে বিদ্যালয়টি স্থাপন করেছি। যতদিন আমি বেঁচে থাকবো বিদ্যালয়টির যাবতীয় কার্যক্রম আমার দ্বারা পরিচালিত হবে। এটিকে সরকারিকরণের ব্যবস্থাও নেওয়া হবে ভবিষ্যতে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমানুষের সাথে দ্বন্দ্ব দূর করতে হাতির জন্য উপযোগী পরিবেশ গড়তে হবে
পরবর্তী নিবন্ধখাগড়াছড়ির বনে নীলপরী