পাটুরিয়ায় ফেরি কাত হয়ে ডুবল ১৭ ট্রাক

| বৃহস্পতিবার , ২৮ অক্টোবর, ২০২১ at ১০:৫২ পূর্বাহ্ণ

মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাটে যানবাহন নিয়ে একটি ফেরি কাত হয়ে পদ্মা নদীতে আংশিক ডুবে গেছে। ফেরিতে থাকা অন্তত ১৭টি ট্রাক পানিতে ডুবে গেছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। আমানত শাহ নামের এই ফেরিটি দৌলতদিয়া থেকে পাটুরিয়া আসছিল। ফেরিটিতে শুধুমাত্র পণ্যবাহী ট্রাক ছিল বলে জানায় কর্তৃপক্ষ। এই ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এদিকে ঘটনার পরপরই দমকল বিভাগ উদ্ধার অভিযান শুরু করেছে। কাত হয়ে উল্টে যাওয়া ফেরি উদ্ধারে পাটুরিয়া ঘাটে কাজ শুরু করেছে উদ্ধারকারী জাহাজ হামজা। শাহ আমানত ফেরিটি বাঁধা হয়েছে হামজার সঙ্গে। তবে কাত হয়ে ফেরিটির ভিতরে পানি ঢুকে ওজন বেড়ে যাওয়ায় উদ্ধার কাজে জটিলতার আভাস মিলছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। রাত সোয়া আটটায় বুধবারের মতো অভিযান স্থগিতের আগ পর্যন্ত ডুবে যাওয়া মোট চারটি ট্রাক উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিআইডব্লিউটিএ’র সদস্য (পরিকল্পনা ও পরিচালনা) দেলোয়ার হোসেন। আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে আবার উদ্ধার অভিযান শুরু হবে বলে জানিয়েছেন এ কর্মকর্তা। বিআইডব্লিউটিএ’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. নুরুল আলম জানিয়েছেন, ফেরিটির ভেতরে পানি ঢুকে এটির ওজন হাজার টনের বেশি দাঁড়িয়েছে বলে ধারণা করা যায়। কিন্তু হামজার সক্ষমতা মাত্র ৬০ টন। হামজাকে দিয়ে কিভাবে ফেরিটিকে উদ্ধার করা যাবে সে বিষয়ে কর্মকর্তারা আলোচনা করছেন।
এদিকে উদ্ধার কাজে হামজার সঙ্গে যোগ দিতে পাটুরিয়ার পথে রয়েছে আরেক উদ্ধার জাহাজ প্রত্যয়।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রতিবার নৌ দুর্ঘটনার পর যে চিত্র দেখা যায়, এবারও এর ব্যতিক্রম দেখা যায়নি। সরকারি সংস্থাগুলোর কাছে থাকা উদ্ধারকারী সরঞ্জামগুলো কাজ করেনি। নৌ দুর্ঘটনার পর ঘটনার শিকার জাহাজ উদ্ধারে বেশির ভাগ সময় দায়িত্ব পড়ে বিআইডব্লিউটিএ’র ওপর। কিন্তু সংস্থাটির উদ্ধারকারী জাহাজ রুস্তম ও হামজার ধারণক্ষমতা খুবই কম। এবারও দ্রুতই ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজ শুরু করেছে হামজা। তবে উদ্ধার অভিযান দীর্ঘতর হতে পারে বলে আভাস দিচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা।
ফেরির লোকজন ও ট্রাকচালকদের মতে, ফেরিতে ১৭টি ট্রাক, একটি কার ও কয়েকটি মোটরসাইকেল ছিল। শুধু তিনটি ট্রাক নামতে পেরেছে। ঘটনার পর, ঘাটের ট্রলার চালক ও বিআইডব্লিউটিসির ভাসমান কারখানার লোকজন ডুবন্ত ট্রাকচালক ও লোকজনকে উদ্ধার করেন।
নির্ঘুম চোখ নিয়ে, কাত হয়ে যাওয়া ফেরির আশপাশেই ঘোরাঘুরি করছিলেন মোহাম্মদ সেলিম। এর মধ্যে পুলিশও কয়েকবার তাড়া দিয়েছে সরে যেতে। কিন্তু ঘাট ছেড়ে যাওয়ার কোনো উপায় নেই এই চালকের। কারণ তিনি যে কাভার্ড ভ্যানটি চালাতেন সেটি ফেরি থেকে পড়ে নদীতে ডুবে আছে। ভ্যানটির পেছনের কিছুটা অংশ ভেসে আছে, সেটাই যেন বারবার আশা দেখাচ্ছে সেলিমকে। ঘাটে ভেড়ার পর ফেরি থেকে নামার ঠিক আগ মুহূর্তে এ দুর্ঘটনা ঘটে। জীবন বাঁচাতে ফেরি ও পন্টুনের ঠিক মাঝখানে কাভার্ড ভ্যানটিকে রেখেই কোন রকমে নেমে যেতে হয় তাকে।
তিনি বলেন, তিনটি ট্রাক ফেরি থেকে নেমে যেতে পারে। চতুর্থ পরিবহনটি ছিল আমার। ডুবতে থাকা ফেরি থেকে কাভার্ডভ্যানের দুটো চাকা ঘাটের পন্টুনে তোলার পরপরই ফেরিটি নিচু হতে থাকলে গাড়িটি আটকে যায়, এঙেলিটরে চাপ দিয়ে ঘাটে ওঠার শেষ সুযোগটিও আর ছিল না।
এই ঘটনায় কেউ নিখোঁজ আছেন এমন তথ্যও পাওয়া যায়নি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচন্দনাইশে ৭ ইউনিয়নে নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশী ৪২ জন
পরবর্তী নিবন্ধসামপ্রদায়িক সহিংসতার মামলায় বিএনপি নেতাদের জড়ানো হচ্ছে : ফখরুল