পাকিস্তানের সামনে আজ অস্ট্রেলিয়া

ক্রীড়া প্রতিবেদক | বৃহস্পতিবার , ১১ নভেম্বর, ২০২১ at ৭:৪৭ পূর্বাহ্ণ

এবারের বিশ্বকাপে যাদেরকে সবচাইতে ফেবারিট মানা হয়েছিল সেই ভারত এবং দুইবারের চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ বিদায় নিয়েছে গ্রুপ পর্ব থেকে। যদিও যে চারটি দল সেমিফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে তাদেরকে সেরা চারটি দল বলা হচ্ছে। তবে এবারের বিশ্বকাপে সবচাইতে অপ্রত্যাশিত ফলাফল করেছে পাকিস্তান। যদিও সব সময় আনপ্রেডিক্টেবল পাকিস্তান এবারে আর আনপ্রেডিক্টেবল ছিলনা। একের পর এক ম্যাচ জিতে অজেয় থেকে সেমিফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে বাবর আজমের দল।
অপরদিকে অস্ট্রেলিয়াকে বুড়োদের দল বলা হলেও দুর্দান্তভাবে তারাও জায়গা করে নিয়েছে শেষ চারে। আজ মুখোমুখি হচ্ছে এই দুদল। লক্ষ্য ফাইনালের টিকিট পাওয়া। ওয়ানডে বিশ্বকাপে সবচাইতে বেশি শিরোপা জেতা অস্ট্রেলিয়া এখনো পারেনি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা জিততে। ওয়ার্নার-ফিঞ্চদের লক্ষ্য তাই প্রথমবারের মতো শিরোপা জেতা। এবারের বিশ্বকাপে একমাত্র অজেয় দল পাকিস্তান। ২০১০ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতা পাকিস্তান চায় দ্বিতীয়বারের ট্রফিটা ঘরে তুলতে। সুপার টুয়েলভ পর্বে পাকিস্তানের পারফরম্যান্স সে রকমই ইঙ্গিত বহন করে। পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজম বলেই দিয়েছেন তারা আর দুটি ম্যাচ জিততে চায়। তার কথাতেই পরিষ্কার তিনি শিরোপা ছাড়া আর কিছু ভাবছেনা। সুপার টুয়েলভ পর্বে অস্ট্রেলিয়া একটি মাত্র ম্যাচে হেরেছে ইংল্যান্ডের কাছে। তাই গ্রুপ রানার্স আপ হিসেবে তারা এখন সেমিতে পাকিস্তানের সামনে। আইপিএল কিংবা বিশ্বকাপের আগে অস্ট্রেলিয়ান যে সব ক্রিকেটার ফর্ম হীনতায় ভুগছিলেন তারা সবাই ফিরেছেন ফর্মে। বিশেষ করে ওয়ার্নার, ফিঞ্চরা রানে ফিরেছেন। যা অসিদের জন্য বড় স্বস্তি। এবারের বিশ্বকাপে অস্ট্রেয়িলান ব্যাটিংকে যদি সেরা বলা হয়ে থাকে তাহলে পাকিস্তানি বোলার অপ্রতিরোধ্য। তাই বলা হচ্ছে পাকিস্তানি বোলিং এর সাথে লড়াইটা হবে অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যানদের।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের পরিসংখ্যানে অবশ্য এগিয়ে পাকিস্তান। দুদলের ২৩ লড়াইয়ে পাকিস্তান জিতেছে ১২ ম্যাচ। আর অস্ট্রেলিয়ার জয় ৯টি। তবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দুদলের পরিসংখ্যান সমানে সমান। বিশ্বকাপে ছয় ম্যাচ খেলে পাকিস্তান জিতেছে তিন ম্যাচ। অস্টেলিয়াও জিতেছে তিনটি। পরিসংখ্যান এবং দুদলের বর্তমান অবস্থা বিচারে এবারের লড়াইটাও হাড্ডাহাড্ডি হওয়ারই কথা। বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত এক ম্যাচও হারেনি পাকিস্তান। দুই ওপেনারের সঙ্গে দলটির বোলিং আক্রমণ আছে দুর্দান্ত ফর্মে। শুরুতেই উইকেট তুলে নিয়ে প্রতিপক্ষকে চাপে ফেলে দিচ্ছে পাকিস্তান। পাশাপাশি তরুণদের সাথে অভিজ্ঞ শোয়েব মালিক এবং মোহাম্মদ হাফিজ যেন নিজেদের নতুন করে চেনাচ্ছেন। কাজেই পাকিস্তান দলটিকে একেবারে জমাট একটি দল হিসেবে দেখা হচ্ছে এবারের বিশ্বকাপে। বোলিংয়ে যেমন দ্যুতি ছড়াচ্ছেন শাহিন শাহ আফ্রিদি, ইমাদ ওয়াসিম, হারিস রউফ, সাদাব খানরা তেমনি ব্যাট হাতে বাবর আজম, মোহাম্মদ রিজওয়ান, মোহাম্মদ হাফিজ, শোয়েব মালিকরা। আর শেষ দিকে ঝড় তোলার জন্য আসিফ আলিতো রয়েছেই। তাই পাকিস্তানকে রুখতে গেলে শতভাগেরও বেশি দিতে হবে অস্ট্রেলিয়াকে।
অপরদিকে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের কাছে নাস্তানাবুদ হয়ে যাওয়া অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপে ফিরে পেয়েছে ছন্দ। যে ওয়ার্নারকে ফর্মহীনতার কারণে দল থেকে বিদায় করে দেওয়া হয়েছিল সে ওয়ার্নারের ব্যাটে এখন রানের বন্যা।
অস্ট্রেলিয়ার দুই ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার ও অ্যারন ফিঞ্চ হতে পারে পাকিস্তানের জন্য চিন্তার কারণ। তিনে ব্যাটিং করা মিচেল মার্শও আছেন দারুণ ফর্মে। বিষয়টি এমন দাঁড়িয়েছে যে, টপ অর্ডারের দুর্দান্ত ফর্মের কারণে অস্ট্রেলিয়ার মিডল অর্ডার তেমন সুযোগই পাচ্ছেনা ব্যাট করার। ম্যাঙওয়েল-পেইনদের বিধ্বংসী ব্যাটিংও মাথা ব্যাথার কারণ হতে পারে পাকিস্তানের জন্য। বিশেষ করে শুরুতে পাকিস্তানের বোলিং আর অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিংয়ের লড়াইটা বেশ জমবে। শেষ পর্যন্ত ফাইনালের টিকিট টা কার হাতে উঠে সেটা দেখতে চোখ রাখতে হবে দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের দিকে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচকরিয়ায় বন্য হাতিকে গুলি করে হত্যা
পরবর্তী নিবন্ধপ্রতিশোধ নিয়ে ফাইনালে নিউজিল্যান্ড