পরিবার নিয়ে দেখা যায় এমন সিনেমা তৈরি করুন

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী

| সোমবার , ১৮ জানুয়ারি, ২০২১ at ৬:২২ পূর্বাহ্ণ

সুস্থ ধারার চলচ্চিত্র নির্মাণের তাগিদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এমনভাবে সিনেমা তৈরি করতে হবে, যেন পরিবার-পরিজন নিয়ে দেখতে পারি। গতকাল রোববার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-২০১৯ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ আহ্বান জানান তিনি। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী। সমাজ গঠনে চলচ্চিত্রের ভূমিকার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আমি একজন রাজনীতিবিদ, যত বক্তৃতা দিয়ে মানুষকে যত কথাই বলি না কেন, একটা নাটক, একটা সিনেমা, একটা গানের মধ্য দিয়ে বা একটা কবিতার মধ্য দিয়ে কিন্তু অনেক কথা বলা যায়, মানুষের অন্তরে প্রবেশ করা যায়, মনের গহীনে প্রবেশ করা যায়। সেজন্য এর একটা আবেদন কিন্তু রয়েছে। খবর বাংলানিউজের।
শিশুদের জন্য শিক্ষণীয় চলচ্চিত্র নির্মাণের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের শিশুদের জন্য সিনেমা তৈরি করা একান্তভাবে প্রয়োজন। এর মধ্য দিয়ে একটা শিশু জীবনকে দেখতে পারবে, বড় হতে পারবে। শিশুদের জন্য চলচ্চিত্র নির্মাণ করা এবং তার মধ্য দিয়ে তাদের শিক্ষণীয় বিষয়গুলো প্রতিফলিত করা, এটাও কিন্তু করতে হবে। অনেক দায়িত্ব আপনাদের। শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের শিল্প-সংস্কৃতি, সেগুলোও যেমন থাকবে, আবার বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার জন্য সেগুলোও থাকতে হবে। আন্তর্জাতিকভাবে সেগুলো যেন গ্রহণযোগ্যতা পায়। পাশাপাশি আমাদের যে মহান অর্জন, লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমরা যে বিজয় অর্জন করেছি, আমাদের সে বিজয়ের ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, আমাদের চেতনা, আমাদের নীতি-আদর্শ-সেগুলো প্রতিফলিত হওয়া একান্ত দরকার।
মুক্তিযুদ্ধের ওপর আরও সিনেমা নির্মাণের আহ্বান জানিয়ে সরকার প্রধান বলেন, মুক্তিযুদ্ধের ওপর আমি আপনাদের সিনেমা নির্মাণের অনুরোধ করব। জাতির পিতাকে ১৫ আগস্ট হত্যা করার পর আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে। কাজেই ইতিহাসটা যেন সবাই জানে। আমাদের বিজয়ের ইতিহাসটা প্রজন্মের পর প্রজন্ম যেন মনে রাখতে পারে, সেই ধরনের চলচ্চিত্র আরও নির্মাণ হওয়া দরকার।
দুর্দশাগ্রস্ত শিল্পীদের পাশে দাঁড়ানোর কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ কষ্টটা যখন আমি দেখি; আর বিশেষ করে আমার ছোট বোন রেহানা যখন লন্ডনে থাকে, সে অনলাইনে পত্রিকা নিয়মিত পড়ে এবং কারো কোনো কষ্ট দেখলে সঙ্গে সঙ্গে আমাকে সে খবর পাঠায়। আমি চেষ্টা করি, সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিতে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে দেশের চলচ্চিত্র অঙ্গনের একমাত্র রাষ্ট্রীয় ও সর্বোচ্চ পুরস্কার ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার’ বিজয়ীদের হাতে তুলে দিয়েছেন অনুষ্ঠানের সভাপতি তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। ২০১৯ সালে নির্মিত চলচ্চিত্রগুলোর মধ্য থেকে ২৫টি ক্যাটাগরিতে ছয়টি যুগ্মসহ মোট ৩১ জনকে জাতীয় পুরস্কার দেওয়া হয়। এবার আজীবন সম্মাননা (যুগ্ম) পান বিশিষ্ট চলচ্চিত্র অভিনেতা মাসুদ পারভেজ (সোহেল রানা) ও অভিনেত্রী কোহিনুর আক্তার সুচন্দা। শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র (যুগ্ম) ‘ন ডরাই’ ও ‘ফাগুন হাওয়ায়’, শ্রেষ্ঠ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘নারী জীবন’, শ্রেষ্ঠ প্রামাণ্য চলচ্চিত্র ‘যা ছিল অন্ধকারে’ এ বছর জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পায়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামের ভাষায় নির্মিত ‘ন ডরাই’র বাজিমাৎ
পরবর্তী নিবন্ধ৭৮৬