পরিকল্পিতভাবে নির্মাণ সামগ্রীর দাম বাড়াচ্ছে অসাধু সিন্ডিকেট

সংবাদ সম্মেলনে সম্মিলিত ঠিকাদার ফোরামের অভিযোগ

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ২৪ মার্চ, ২০২২ at ৮:২৫ পূর্বাহ্ণ

পরিকল্পিতভাবে নির্মাণ সামগ্রীর দাম বাড়িয়ে একটি অসাধু সিন্ডিকেট সরকারের চলমান উন্নয়ন কর্মযজ্ঞকে বাধাগ্রস্ত করছে বলে অভিযোগ করেছে চট্টগ্রাম সম্মিলিত ঠিকাদার ফোরাম। গতকাল দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন ফোরামের নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সম্মিলিত ঠিকাদার ফোরামের সদস্য সচিব আসাদুজ্জামান টিটু বলেন, গত নয় মাস ধরে পর্যায়ক্রমে ইট, রড-সিমেন্টসহ নির্মাণ সামগ্রীর দাম বৃদ্ধি করেছে একটি অসাধু সিন্ডিকেট। কিন্তু গত দুই মাসে হঠাৎ করে নির্মাণ সামগ্রীর দাম অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। একই সময়ে ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশ বেড়েছে ইলেকট্রনিকস, হার্ডওয়্যার ও স্যানিটারি পণ্যের দামও। ফলে উন্নয়ন প্রকল্পের সাথে জড়িত ঠিকাদাররা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। বাড়তি দামে নির্মাণ সামগ্রী ক্রয় করে চলমান কাজ সম্পন্ন করতে অনেক ব্যবসায়ী ইতিমধ্যে দেউলিয়া হয়ে পড়েছেন। নির্মাণ সামগ্রীর দাম বৃদ্ধি পেয়েছে ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশ। চট্টগ্রাম এলজিইডি, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর, সড়ক ও জনপথ, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত বিভাগ, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, জেলা পরিষদ, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ, পানি উন্নয়ন বোর্ড, সিটি কর্পোরেশন, রেলওয়ে, জনস্বাস্থ্য এইচইডিসহ সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। চট্টগ্রামে প্রায় তিন হাজার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এসব প্রকল্পের কাজ করছে। রড, সিমেন্টসহ অন্যান্য নির্মাণ সামগ্রীর অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির কারণে অধিকাংশ উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ এখন বন্ধ হওয়ার পথে।
তিনি আরও বলেন, ইট, বালি, সিমেন্ট ও রডের দাম বাড়ার পাশাপাশি ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে ইলেকট্রিক, হার্ডওয়্যার, স্যানিটারিসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম। দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধির ফলে বেড়েছে নির্মাণ শ্রমিকের দৈনিক মজুরি বেড়েছে। বর্তমানে একজন নির্মাণ শ্রমিকের মজুরি ৮শ টাকা। এ ছাড়া টন প্রতি ৫০ হাজার টাকার রড এখন ৯১ হাজার টাকা। আমদানি করা ৩৪ হাজার টাকার পাথরের টন এখন ৫১ হাজার টাকা। এভাবে সব পণ্যের দাম বেড়েছে। কিন্তু সরকারি কোন বিভাগের রেট রিসিডিউল করা হয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে সম্মিলিত ঠিকাদার ফোরামের আহ্বায়ক গোলাম মুর্তজা টুটুল বলেন, আগে নির্মাণ কাজে পদ্মা, মেঘনা, যমুনা ওয়েল কোম্পানির উৎপাদিত বিটুমিন ব্যবহার করা হতো। কিন্তু বিদেশ থেকে বিটুমিন আমদানিকারকদের কারসাজির কারণে দেশীয় বিটুমিনের সরবরাহ চাহিদার বিপরীতে কমে গেছে। ফলে বাজার সংকট দেখিয়ে প্রতি ড্রাম বিটুমিন বিক্রি করা হচ্ছে ১১ হাজার থেকে ১২ হাজার টাকায়। এতে নির্মান ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ বেড়েছে। কিন্তু কাজের রেইট পরিবর্তন করা হয়নি। এসময় উপস্থিত ছিলেন এলজিইডি ঠিকাদার সমিতির সভাপতি মহিউদ্দিন সুফল, আলী হোসেন, জসিম উদ্দিন, মহসিন হায়দার, নজরুল ইসলাম, সালাউদ্দিন লিটন, সাইফুল ইসলাম, শওকত হোসেন, মো. ইলিয়াছ চৌধুরি, নুরুল আফছার, আবদুল্লাহ টিটু, জামশেদ চৌধুরি, মোহাম্মদ রায়হান, মোহাম্মদ ইমরান, জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধদোহাজারীতে সওজের ৫ একর জায়গা উদ্ধার
পরবর্তী নিবন্ধমিয়ানমারে কারাভোগ শেষে ফিরলেন ৪১ বাংলাদেশি