পরপর দুইরাতে ফলের বাগানে হাতির তাণ্ডব

লামার কুমারী এলাকা

লামা প্রতিনিধি | বৃহস্পতিবার , ১৫ জুন, ২০২৩ at ৪:৪১ পূর্বাহ্ণ

লামা উপজেলার কুমারী এলাকায় বন্য হাতির তাণ্ডবে স্থানীয় ফলদ বাগান মালিকদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পরপর গত দুইরাত একপাল হাতি কুমারী বাজার সংলগ্ন এলাকায় হানা দিয়ে শতাধিক ফলন্ত আম, কাঁঠাল ও লিচু গাছ উপড়ে ও ভেঙে ফেলেছে। বন্য হাতির অব্যাহত তাণ্ডবে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয় সূত্র জানায়, অপরিকল্পিত বৃক্ষ নিধন ও বনাঞ্চলে জনবসতি গড়ে উঠার কারণে পাহাড়ে বন্যপ্রাণীর খাদ্য সংকট দেখা দেয়। এতে খাবারের সন্ধানে বেপরোয়া হয়ে উঠে বন্য হাতিগুলো। প্রতি বছর আম, কাঁঠালের মৌসুমে হাতির পাল লোকালয়ে হামলা চালায়। এসময় তারা মানুষের ফলদ বাগান ও জমির পাকাধানসহ জানমালের ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে থাকে। চলতি বছরও এক পাল বন্য হাতি উপজেলার কুমারী এলাকায় অবস্থান নেয়। হাতির পালটি পরপর দুই রাত কুমারী বাজার সংলগ্ন এলাকায় বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট এস এ খান তোফায়েলের বাগানে তাণ্ডব চালায়। হাতির পালটি শতাধিক আম, কাঁঠাল ও লিচু গাছ ভেঙে ও উপড়ে ফেলে। এছাড়া ভেঙে ফেলে বাগানের সীমানা প্রাচীরও। একই সময় পাশের কয়েকটি বাগানেরও ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে।

ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আবু ওমর জানান, গত দেড় মাস ধরে ৭/৮টির এক পাল বন্য হাতি সন্ধ্যা হলেই কুমারী এলাকার লোকালয়ে নেমে আসে। এসময় হাতির পাল ফসলী জমি ও ফলদ বাগানসহ জানমালের ব্যপক ক্ষতি করছে। স্থানীয়রা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মশাল জ্বালিয়ে তাদের জানমাল রক্ষার চেষ্টা করছেন। তিনি বলেন, বন্যহাতি তাড়াতে বন বিভাগের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে একটি ইআরটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সদস্যদের প্রশিক্ষণসহ টর্চ লাইট, বাঁশি ও পোশাক দেওয়া হয়। কোথাও বন্যহাতি আক্রমণ চালালে এ কমিটির লোকজন হাতিগুলো গহীন অরণ্যে তাড়াতে কাজ করে। বর্তমানে বন বিভাগের পক্ষ থেকে কোনো সুযোগসুবিধা না পাওয়ায় ঝিমিয়ে পড়ছে কমিটির সদস্যরা।

লামা বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. আরিফুল হক বেলাল বলেন, গহীন পাহাড়ে খাদ্য সংকট দেখা দেওয়ায় হাতিগুলো লোকালয়ে হানা দিচ্ছে। তবে বন্যহাতির দল কোনো মানুষ বা কারো জমির ফসল ও বাগানের ক্ষতি করে থাকলে বিধি মোতাবেক বন বিভাগের পক্ষ থেকে ক্ষতি পূরণ দেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, গত ৭ মে দিবাগত রাতে কুমারী এলাকায় বাগানের ফল ও জমির ধান রক্ষা করতে গিয়ে বন্য হাতির কবলে পড়ে প্রাণ হারান আক্তার হোসেন (৩৮) নামের এক কৃষক।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআজ আষাঢ়ে বৃষ্টি ঝরুক
পরবর্তী নিবন্ধ৪৩নং আমিন শিল্পাঞ্চল ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সম্মেলন