পদ্মা সেতু প্রকল্পে সরকার ‘তিন গুণ বেশি’ টাকা খরচ করেছে মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীর সেই খরচের হিসাব চেয়েছেন। গতকাল শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সমাবেশে তিনি বলেন, পাকিস্তান আমলে আমরা যখন ছাত্র ছিলাম, ছাত্র আন্দোলন করতাম, রাজপথে তখন বিভিন্নভাবে শ্লোগান দিতাম।
“…একটা শ্লোগান ছিল, ১০ টাকা তেলের দাম বাড়লেই তখন বলতাম– ১০ টাকার তেল খেয়ে স্বর্গে যাব। এখন বলতে চাই, বিভিন্ন টোল দিয়ে আমরা পদ্মা ব্রিজ দিয়ে স্বর্গে যাব।”
পণ্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে বিএনপি আয়োজিত ওই সমাবেশে ফখরুল বলেন, কার টাকায় আপনারা পদ্মা ব্রিজ বানিয়েছেন? জনগণের টাকায়। জনগণের পকেট কেটে ট্যাক্স নিচ্ছেন। ভ্যাট, ট্যাক্স, অমুক ট্যাক্সের নামে মানুষের কাছ থেকে সব টাকা নিয়ে যাচ্ছেন। আর কী করছেন? ঋণ নিয়েছেন। সেই ঋণের বোঝা বাংলাদেশের মানুষকে বইতে হবে। সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকার প্রজেক্ট ৩০ হাজার কোটি টাকা করেছেন। আমরা জানতে চেয়েছি, বাকি টাকাগুলো আপনারা কীভাবে খরচ করলেন? খবর বিডিনিউজের।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, তারা (সরকার) বলে উন্নয়ন। এত উন্নয়ন যে সোনা দিয়ে সব মুড়ে দিচ্ছে। আমাদের রুমিন ফারহানা গতকাল খুব ভালো বলেছেন যে, পদ্মা ব্রিজ হচ্ছে গোল্ডেন ব্রিজ। সোনা দিয়ে মোড়াই করা একটা ব্রিজ বানাইছে। খবর নিয়ে দেখবেন, তার বেশিভাগ টাকাই তাদের পকেটে গেছে। একটা লোকও বাকি নেই– সবগুলো টাকা চুরি করে তাদের পকেট ভারী করেছে, ব্যাংকে ভরেছে আর বিদেশে পাচার করেছে।
বিএনপি নেতা ফখরুলের ভাষ্য, সিঙ্গাপুরে যদি যান, দেখবেন যে, বড় বড় শপিং মল তৈরি হচ্ছে, বাড়ি তৈরি হচ্ছে। কারা মালিক? বাংলাদেশি লোকেরাই মালিক। কানাডায় যান, ওখানে একটা বেগমপাড়া তৈরি হয়ে গেছে, মালয়েশিয়াতে যান, সেকেন্ড হোম তৈরি করেছে কারা? আওয়ামী লীগ, তাদের নেতা–মন্ত্রীরা, তাদের মদদপুষ্ট ব্যবসায়ীরা। এই লোকগুলোকে বড়লোক করার জন্য আমরা দেশ স্বাধীন করি নাই, এই লোকগুলোকে চুরি–চামারি–লুণ্ঠন করার সুযোগ দিতে আমরা আমাদের রক্ত দিইনি। আমরা ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছি একটা গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের জন্য, বৈষম্যহীন বাংলাদেশের জন্য।
ফখরুল বলেন, পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে দায়মুক্তিই ‘প্রমাণ করে’ প্রস্তাবিত বাজেট সাধারণ মানুষের জন্য নয়। বাজেটে কাদেরকে সাহায্য করেছে? যারা টাকা চুরি করল, ডাকাতি করল, লুণ্ঠন করল এবং লুণ্ঠন করে বিদেশে টাকা পাচার করল, পিকে হালদারের মতো লোকদের। তারা এখন ৭ শতাংশ ট্যাক্স দিলে বিদেশ থেকে টাকা ফেরত আনতে পারবে এবং এর বিরুদ্ধে কেউ কোনো প্রশ্ন করতে পারবে না। তাদেরকে দুদক ধরবে না, হাই কোর্ট থেকেও তাদেরকে কোনো প্রশ্ন করা যাবে না।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, যারা এই বাজেট দিয়েছে তারা কি সাধারণ মানুষের সরকার? এটা কি সাধারণ মানুষের জন্য বাজেট? যারা লুটেরা, চোর–ডাকাত– এটা তাদের সরকার। আজকে এরা (সরকার) মানুষের পকেট কেটে নিজেদের পকেট ভারী করে এদেশের অর্থনীতিকে এদেশের সম্ভাবনাকে ধ্বংস করে দিচ্ছে।