পথে পথে ভোগান্তি, তবুও গন্তব্যে ছুটছে মানুষ

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ১০ জুলাই, ২০২১ at ৭:০৬ পূর্বাহ্ণ

কঠোর লকডাউনে পথে পথে ভোগান্তি মাথায় নিয়ে গন্তব্যে ছুটছে মানুষ। শুক্রবার এমনিতে রাস্তায় লোকজন কম। তারপরেও যারা কাজে বের হয়েছেন, তাদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। পরিবহনের বাড়তি ভাড়া, নগরীর প্রবেশ মুখে বাড়তি কড়াকড়ির কারণে মাত্রা ছাড়িয়েছে দুর্ভোগ। বিশেষত নগরীর প্রবেশপথ শাহ আমানত সেতু এলাকায় এ দুর্ভোগ ছিল বেশি।
বাঁশখালীর আলাউদ্দিন, নগরীর ভাড়া বাসায় বসবাস করলেও জরুরি প্রয়োজনে মা ও স্ত্রীকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি যাচ্ছিলেন। শুক্রবার বিকেল তিনটায় কথা হলে তিনি বলেন, ‘জুমার নামাজের পর বাসা থেকে বের হয়েছি। চকবাজার থেকে আসতে ১৮০ টাকা সিএনজি ভাড়া দিতে হয়েছে। নতুন ব্রিজে এসে আটকে গেছি। এখানে বাইক ছাড়া কোনো গাড়ি মিলছে না। বাধ্য হয়ে হেঁটে ব্রিজ পার হচ্ছি। মইজ্জ্যারটেক গিয়ে কোনো গাড়ি নিয়ে বাঁশখালীর জলদি যেতে হবে।’
গার্মেন্টস কারখানায় কাজ করেন শামিমা। গ্রামের বাড়ি চন্দনাইশের হারলা গ্রামে। শামিমা বলেন, ‘আমার বাবা অনেকদিন ধরে শয্যাশায়ী। গত কয়েকদিনে শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। গার্মেন্টস খোলা থাকায় প্রতিদিন কাজে যেতে হয়। তাই যেতে পারিনি। আজ শুক্রবার থাকায় বাবাকে দেখতে যাচ্ছি। নতুন ব্রিজে এসে গাড়ি পাচ্ছি না। পরে আরেক মহিলার সাথে হেঁটে ব্রিজ পাড়ি দিতে রওয়ানা দেন শামিমা।’ প্রায় ১৫ মিনিট পরে মইজ্জ্যারটেক এলাকায় দেখা যায়, কয়েকটি স্পটে পুলিশ থাকলেও ছোট পরিবহন চলাচল ছিল স্বাভাবিক। মইজ্জ্যারটেক থেকে চরপাথরঘাটা ব্রিজঘাট, থানা এলাকায় অটো রিকশাগুলো যাত্রী পরিবহন করছে। মইজ্জ্যারটেক থেকে পটিয়া, আনোয়ারা, বাঁশখালীর বিভিন্ন গন্তব্যে যাচ্ছে সিএনজি অটো রিকশাগুলো। এসব অটো রিকশার বেশিরভাগই অনিবন্ধিত। আগে যেখানে জনপ্রতি ৬০-৮০ টাকায় বাঁশখালীর জলদি যাওয়া যেতো, এখন জনপ্রতি ১৫০-১৮০ টাকা করে গুণতে হচ্ছে আগ্রহী যাত্রীদের।
মইজ্জ্যারটেক এলাকায় কথা হয় পটিয়ার কচুয়াই এলাকার বাসিন্দা আজিজুল ইসলামের সাথে। তিনি বলেন, আমার বড় ভাই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আমি ভাইয়ের সাথে হাসপাতালে থাকি। আজ আমার বোনকে রেখে বাড়ি যাচ্ছি। রোগী পরিবহনের জন্য কোনো বাধা না থাকলেও রোগীর শুশ্রুষাকারী হিসেবে গাড়ির যাতায়াতে সুযোগ নেই। হাসপাতাল থেকে রিকশা করে নতুন ব্রিজ এসেছি ১২০ টাকায়। নতুন ব্রিজ থেকে ব্যাটারি রিকশা করে আরেক ব্যক্তিসহ ৩০ টাকা করে ব্রিজ পার হয়েছি। এখন সিএনজিগুলো বাড়তি তিনগুণ ভাড়া দাবি করছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, অনুমতি না থাকলেও নতুন ব্রিজ থেকে বাইকাররা একজন কিংবা দুইজন যাত্রী নিয়ে নগরীতে প্রবেশ করছে। মইজ্জ্যারটেকে পুলিশ চেকপোস্টে যাত্রী নামিয়ে দিয়ে টোলবঙের আগে আবার যাত্রী নিয়ে ব্রিজ পাড়ি দিচ্ছে অসংখ্য মোটর বাইক। তবে পণ্যবাহী ট্রাক, পিকআপ, প্রাইভেট কার, ট্রাক, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা বহনকারী হাইচ ও মিনিবাস চলছে কোনো বাধা ছাড়াই।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনাইক্ষ্যংছড়িতে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত পুরো গ্রাম
পরবর্তী নিবন্ধঅন্য উচ্চতায় আল মানাহিল