পঞ্চান্ন বছর বয়সী রবীন্দ্র কুমার নাথ ২০১৪ সালে নাশকতাকারীতের আঘাতে হাত পঙ্গু হয়ে যায়। স্ত্রী সন্তানকে নিয়ে চরম কষ্টে চলে তাদের সংসার। অভাবের সংসারে থাকার ঘরটিও জরাজীর্ণ। কিন্তু রবীন্দ্রের মুখে এক হাসির ঝিলিক। ঝরাজীর্ণ থাকার ঘরটি সরকার পাকা করে দিয়েছে। মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে এই ঘরটি পান তিনি। চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ ৫ লাখ ৬৮ হাজার টাকা ব্যয়ে এই ঘর নির্মাণ করেছে। ঘরে পাশে বসানো হয়েছে একটি নলকূপও। বরীন্দ্র কুমারের বাড়ি সীতাকুণ্ড পৌর সভায়। চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ মুজিব শতবর্ষে ‘জমি আছে ঘর নাই’ প্রকল্পের আওতায় জেলার সবকটি উপজেলায় সর্বমোট ৫০টি ঘর নির্মাণ করছে। তৎমধ্যে সীতাকুণ্ডে দুইটি অনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয়েছে। অপর ঘরটি পেয়েছেন একজন ফল বিক্রেতা। তার নাম ইউসুফ চৌধুরী। তার পরিবারে দুই কন্যা সন্তান রয়েছে। উপজেলার সোনাইছড়ি ঘোড়ামারা এলাকার বাসিন্দা তিনি। মুজিব শতবর্ষে চট্টগ্রাম জেলাপরিষদ প্রকল্পের আওতায় সবকটি উপজেলায় সর্বমোট ৫০টি ঘর নির্মাণ করছে। এরমধ্যে ১২টি নির্মাণ কাজ শতভাগ সম্পন্ন হয়েছে । বাকিগুলোর কাজ চলমান রয়েছে। শতভাগ সম্পন্ন হওয়া ঘরগুলোর মধ্যে সীতাকুণ্ডে ২টির চাবি অনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয়েছে গত বুধবার। এই ঘরগুলোর প্রাক্কলিত নির্মাণ ব্যয় হয়েছে ৫,৬৮,৮৪৮ টাকা। মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনক্রমে চট্টগ্রাম জেলাপরিষদের রাজস্ব তহবিল থেকে দেওয়া হয়েছে। ঘর পাওয়া রবীন্দ্র কুমার নাথ বলেন, আমি একজন কাঠমিস্ত্রি ছিলাম। ২০১৪ সালে যখন জামায়াত বিএনপি সীতাকুণ্ডে জ্বালাও পোড়া শুরু করেছিলো ওই সময় আমি একটি দোকানে কাঠমিস্ত্রি হিসাবে কাজ করছিলাম। এসময় নাশকতাকারীরা আমাকে চরমভাবে আঘাত করে। এতে আমার ডান হাতের রক্তের নার্ভগুলো নষ্ট হয়ে যায়। পরবর্তীতে আমি ওই হাত দিয়ে কোন কাজ করতে পানি না। অভাবের সংসারে অনেক কষ্টে তিন মেয়ের মধ্যে বড় মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি। বড় ছেলে লেখাপড়া করছে। কিন্তু থাকার যে ঘরটি ছিলো তা খুবেই জরাজীর্ণ। প্রধানমন্ত্রী মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে আমার এই জরাজীর্ণ ঘরটি পাকা করে দিয়েছে। আমি তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞ। অপর ঘর পাওয়া ইউসুফ চৌধুরী বলেন, ফল বিক্রি করে সংসার চালাই। দুই ছোট কন্যা নিয়ে জরাজীর্ণ ঘরে থাকতাম। বৃষ্টি বাদল এলে ভিজতে হতে সন্তানদের নিয়ে। তার এই দুঃখ আর থাকলো না। নতুন ঘর পেয়ে তিনও খুবই খুশি। জেলা পরিষদ সদস্য আ ম ম দিলশাদ বলেন, মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা, বাংলার মাটিতে গৃহহীন মানুষ থাকবে না। মুজিব কন্যার ঘোষণা বাস্তবায়নে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ অঙ্গীকারবদ্ধ। তারই আলোকে চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলায় ৫০টি ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। গত বুধবার সীতাকুণ্ডের দু্ই গৃহহীনকে ঘরের চাবি বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।