নেতারা যা বললেন

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ২৯ মে, ২০২২ at ৭:৫৪ পূর্বাহ্ণ

পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে দক্ষিণ জেলা যুবলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন গতকাল শনিবার সকাল থেকে একটানা চলে বিকাল ৪টা পর্যন্ত। সম্মেলনের বিশেষ অতিথি আওয়ামী লীগের চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ মাহমুদ স্বপন বলেন, সবাই বলে বিএনপির জন্ম ক্যান্টনমেন্টে। আমি বলছি বিএনপির জন্ম পাকিস্তানের আইএসআই অফিসে। বিএনপি পাকিস্তানের আইএসআই থেকে পরিচালিত হয়। তিনি বলেন, আমাদের আমাদের জাতীয় ফুল শাপলা, জাতীয় ফল কাঠাল, জাতীয় পাখি দোয়েল আর দেশের জাতীয় ছিনতাইকারীর নাম জিয়াউর রহমান। তিনি সশস্ত্র বাহিনীর অস্ত্র ব্যবহার করে ক্ষমতা ছিনতাই করেছিলেন। যে ব্যক্তি সশস্ত্র বাহিনীর অস্ত্র নিয়ে রাতের আধারে ক্ষমতা দখল করে তিনি কি ছিনতাইকারী নয়?
বিএনপি নানানমুখী ষড়যন্ত্রের পরও পদ্মা সেতু আটকাতে পারেনি মন্তব্য করে স্বপন বলেন, পদ্মা সেতু যাতে না হয় এজন্য বিএনপি দেশে ও বিদেশে একাধিক লবিস্ট নিয়োগ করেছিল। তাদের সেই ষড়যন্ত্রকে ব্যর্থ করে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দৃঢ়চিত্তে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু তৈরী করে দেখিয়ে দিলেন। এখন তারা বলছে, পদ্মা সেতুতে টাকা বেশি খরচ হয়েছে। বিএনপি চোরের দল, চোর সবসময় সবাইকে চোর মনে করে। পদ্মা সেতু দেশের টাকায় হয়েছে। সেখানে বিন্দু পরিমাণ চুরি হয়নি। যাচাই-বাছাই করে আন্তর্জাতিক টেন্ডার আহ্বান করে হয়েছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জাতীয় সংসদের অপর হুইপ স্থানীয় সাংসদ সামশুল হক চৌধুরী বলেন, আজকে ৪৫ বছর পরে বঙ্গবন্ধু ঘোষিত জেলা সাবেক মহকুমা পটিয়াতে যুবলীগের সম্মেলন আয়োজন করার জন্য বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। এই পটিয়ার মাঠ অত্যন্ত ভাগ্যবান। এ মাঠে বঙ্গবন্ধু দুইবার সভা করেছেন। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বারবার এখানে মিটিং করে গেছেন। যুবলীগের চেয়ারম্যানের দৃষ্টি আকর্ষণ করে হুইপ সামশুল হক বলেন, পরশ ভাইয়ের নেতৃত্বে সারাদেশে যেভাবে যুবলীগে জোয়ার এসেছে, সুসংগঠিত হয়েছে তেমনিভাবে দক্ষিণ চট্টগ্রামেও যেন সেইভাবে যুবলীগে জোয়ার আসে সে ব্যবস্থা নিতে হবে।
সম্মেলনের প্রধান বক্তা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেছেন, বাংলাদেশে ইসলামের যদি কোনো খাদেম থাকেন তাহলে তিনি হচ্ছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি ইসলামের খাদেম, আল্লাহর প্রেমিক। তা না হলে তার ডাকে সাড়ে ৭ কোটি মানুষ কোনোদিন আসতেন না। মাইনুল বলেন, যুবলীগের কাজ হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করে মানুষের কল্যাণে কাজ করা, আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে কাজ করা। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় আজ আমাদের চারপাশে অনুপ্রবেশকারীরা ঢুকে পড়েছে। বিএনপি-জামায়াত ঢুকে পড়েছে। আমরা সকলে বক্তব্য দিই বিএনপি-জামায়াত আমাদের পতাকাতলে আসতে পারবে না। আমরা হাত তালি দিই। হাততালির অভাব নেই। কিন্তু বাস্তবে কোথায়? বাস্তবে আমাদের পাশে বসা বিপদগামী যুবক। মাদক সেবনকারী যুবক, চাঁদাবাজ যুবক। এরা সমাজকে অতিষ্ঠ করে তোলে। এরা শেখ হাসিনার সব অর্জনকে ধূলিস্যাৎ করে দেয়। তিনি বলেন, কোনো বিপদগামী যুবক যুবলীগে আসতে পারবে না।
নজরুল ইসলাম চৌধুরী এমপি বলেন, সামনে নির্বাচন তাই বিএনপি-জামায়াত আবার নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু করে দিয়েছে। তারা বুঝতে পেরেছে এই দেশে তারা আর কোনোদিন ক্ষমতায় আসতে পারবে না। আজকে প্রধানমন্ত্রীর সারাদেশে যে উন্নয়ন সেই উন্নয়নের সবচেয়ে বেশি ছোঁয়া লেগেছে চট্টগ্রামে। এই চট্টগ্রামে অসংখ্য মেগা প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। আমার আমেরিকা যাওয়ার সুযোগ হয়েছে। সেখানে যাদের ঘর নেই তারা রাস্তায় প্লে কার্ড বিক্ষোভ করে। আর আমাদের প্রধানমন্ত্রী এ দেশের গৃহহীনদের ঘর করে দিয়েছেন, জমির মালিক করে দিয়েছেন। আমাদের প্রধানমন্ত্রীর পথ আজকে আমেরিকা অনুসরণ করছে।

মোস্তাফিজুর রহমান এমপি বলেন, জাতির পিতার একটি বিখ্যাত বাণী আছে- রাজনীতি করতে হলে নীতি থাকতে হবে। যার নীতি নেই সেই নেতা দ্ধারা কোনো উন্নয়ন কর্মকাণ্ড করা সম্ভব নয়। দক্ষিণ জেলা যুবলীগের যে কমিটি করবেন তাতে এমন নেতা নিয়ে করবেন যাদের নীতি আছে। বঙ্গবন্ধুর নৌকার পক্ষে কাজ করবে, সেরকম নেতা নির্বাচন করতে হবে।
কেন্দ্রীয় সহ প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন বলেন, আজকে বিএনপি-জামায়াত খুব করে প্রচার করছে বাংলাদেশ নাকি শ্রীলংকা হতে যাচ্ছে। কিন্তু তারা জানে না যে, বাংলাদেশ আর শ্রীলংকা এক নয়। কারণ শ্রীলংকার রাজস্ব আয়ের প্রধানতম খাত হচ্ছে পর্যটন খাত। করোনা মহামারীর দুই বছরে শ্রীলংকায় কোনো পর্যটক যেতে পারেনি। আমাদের বৈদেশিক আয়ের সঙ্গে শ্রীলংকার বৈদেশিক আয়ের মধ্যে বিশাল ব্যবধান। আমাদের রিজার্ভ তাদের তিন-চার গুণেরও বেশি। যাদের আমাদের দেশের অবস্থান সম্পর্কে ধারণা নেই, যারা আমাদের নেত্রীর যোগ্যতা ও দক্ষতা সম্পর্কে ধারণা রাখে না তারাই নানাভাবে বিভ্রান্ত ছড়ানোর চেষ্টা করছে।
কেন্দ্রীয় যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নাঈম বলেন, দক্ষিণ জেলা যুবলীগ অত্যন্ত সুসংগঠিত। আগামীতে দক্ষিণ জেলায় যারাই নৌকার মনোনয়ন পাবে আমরা তাকে বিজয়ী করতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করব। তিনি বলেন, আমরা যারা যুবলীগ করি বা করতে চাই সবাই এ যুবলীগকে বুকে ধারণ করব। যুবলীগকে আমাদের ভালোবাসতে হবে। কারো কোনো কর্মকাণ্ডের জন্য এ প্রাণের সংগঠন যদি ক্ষতিগ্রস্ত হয় অথবা প্রশ্নবিদ্ধ হয় তার ঠাঁই যুবলীগে হবে না।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনগরীর ১৮ খালে ৩৬ বাঁধ
পরবর্তী নিবন্ধকমিটি ঘোষণা ছাড়াই শেষ কাউন্সিল অধিবেশন