নুরজাহানের কান্না থামাবে কে

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১ at ৫:৩২ পূর্বাহ্ণ

৮৩, বাটালি রোড, এনায়েত বাজারের ‘আকমত ভিলা’। শুক্রবার সন্ধ্যায় আকমত ভিলায় চলছিল শোকের মাতম। এই ভবনেই মা-বাবার সাথে বসবাস করতেন রাফসান রায়হান। সৈয়দুল হক ও নুরজাহান বেগম দম্পতির একমাত্র সন্তান ছিল সে। পরিবারের একমাত্র ছেলের মৃত্যুতে মা নুর জাহানের আহাজারি থামছে না। এলাকার পরিবেশ ভারী হয়ে আসছিল। রাফসানের মৃত্যুর খবর পেয়ে আত্মীয়-স্বজনরা তখন ভিড় করছিল আকমত ভিলায়। নিকটাত্মীয়রা নুর জাহানের কান্না থামাতে পারছিলেন না। বরঞ্চ নুর জাহানের কান্নার অংশীদার হচ্ছিলেন।
সন্ধ্যায় আকমত ভিলার নিচে কথা হয় রাফসানের বাল্যবন্ধু আবু তালেবের সাথে। আবু তালেব বলেন, ‘রাফসান আমার বাল্যকালের বন্ধু। বন্ধু হিসেবে কোনো তুলনা হয় না তার। সে রেলওয়ে স্কুলে পড়ালেখা করেছে। একজন ছাত্রনেতা হিসেবে যা কোয়ালিটি দরকার, সবগুলোই ছিল রাফসানের। এবার কোতোয়ালী থানা ছাত্রলীগের সেক্রেটারি প্রার্থীও ছিলো। এমইএস কলেজকেন্দ্রীক রাজনীতি করতো। ও ছিলো কর্মীবান্ধব।’ আবু তালেব বলেন, ওর সাথে আমাদের ছোটভাই পিয়ম ছিলো। কোনো সড়ক দুর্ঘটনা ছিলো না। এখন পোস্টমর্টেম রিপোর্ট না পেলে কোনো কথা বলা যাচ্ছে না। ওমর ফারুক নামের আরেক বন্ধু বলেন, ‘রাফসান বন্ধুদের মাঝেও বেশ জনপ্রিয় ছিলো। এলাকায় ভদ্রছেলে ছিলো সে। এবার আইআইইউসি থেকে মাস্টার্স করেছিলো।
রাত ১০টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত রাফসানের এক নিকটাত্মীয় সরোয়ার হোসেন দৈনিক আজাদীকে বলেন, ‘রাফসানের লাশ নিয়ে তার বাবা নগরীর পথে রয়েছেন। ইতোমধ্যে সাতকানিয়া রাস্তার মাথা পার হয়েছেন তারা।’ সরোয়ার হোসেন বলেন, ‘রাফসানদের দাদার বাড়ি হাটহাজারীর নন্দীর হাটে। এখানে নানার বাড়িতে থাকতেন। এখানেই জন্ম, এখানেই বেড়ে উঠা রাফসানের।’ শনিবার জোহরের নামাজের পর রাফসানের জানাজা হবে বলে নিশ্চিত করেন তিনি।’
জানা গেছে, ১৫ সেপ্টেম্বর কক্সবাজারে বেড়াতে যান রাফসান ইরফান। কঙবাজারের বে ওয়ান্ডারস নামে একটি হোটেলে উঠেন। শুক্রবার ভোরে বুকে বেশি ব্যথা অনুভব করলে কক্সবাজারের বেসরকারি একটি হাসপাতাল হয়ে সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানেই তার মৃত্যু হয়। এ বিষয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকক্সবাজারে নগর ছাত্রলীগ নেতার অস্বাভাবিক মৃত্যু
পরবর্তী নিবন্ধপাহাড় চূড়ায় দশতলা ভবন