কক্সবাজারের চকরিয়ায় ভবনের নির্মাণের পাইলিং কাজে ব্যবহৃত রিক মেশিনের মই ভেঙে চাপা পড়ে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বিকেল সাড়ে চারটার দিকে উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের খোন্দকার পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন দোতলা ভবনের পাইলিংয়ের কাজ চলাকালীন এই ঘটনা ঘটে। জানা যায়, শনিবার বিদ্যালয়ের দোতলা ভবন নির্মাণের জন্য পাইলিংয়ের কাজ চলছিল। কাজের সুবিধার্থে কোনো মানুষ যাতে সেখানে ভিড় করতে না পারে সেজন্য চারিদিকে ঘেরাও করে দেওয়া হয়েছিল। এরপরও সেখানে কাজ দেখতে যায় স্থানীয় কয়েকজন। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে হঠাৎ পাইলিং কাজে ব্যবহৃত রিক মেশিনের সিঁড়িটি উপর থেকে ছিটকে পড়লে নিচে চাপা পড়ে গুরুতর আহত হয় স্থানীয় দুইজন। তাদেরকে প্রথমে উদ্ধার করে পৌরশহরের দুটি প্রাইভেট হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিন্তু অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় প্রেরণ করা হয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। সেখানে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক সন্ধ্যা সাতটার দিকে তাদের মৃত ঘোষণা করেন। নিহতরা হলেন- একই ওয়ার্ডের কিসমত পাড়া সিদ্দিক আহমদের পুত্র আবদু শুক্কুর (৫৫) ও মৃত কালা মিয়ার পুত্র সোলতান আহমদ (৪৫)। ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিন হেলালী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
খোন্দকার পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আবুল মনসুর মো. মহসিন বলেন, ঠিকাদারের সঠিক নজরদারি না থাকায় ভয়াবহ এই দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। এতে স্থানীয় দুইজন ব্যক্তিকে হারিয়েছে এলাকাবাসী। বর্তমানে পরিবার দুটিতে আহাজারি চলছে।
নির্মাণকাজ চলাকালীন সঠিক নজরদারি না রাখার অভিযোগ প্রসঙ্গে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নিয়োজিত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান শামিম কনস্ট্রাকশনের মালিক মিজানুর রহমান দাবি করেন, পাইলিংয়ের কাজ শুরু করার আগেই স্থানীয়দের সতর্ক করা হয়েছিল সেখানে না যেতে। এরপরও তা না মেনে কাজ দেখতে যায় স্থানীয় কয়েকজন। এ সময় হঠাৎ রিক মেশিনের সিঁড়ি ছিটকে পড়লে নিচে চাপা পড়ে দুইজন। তাদেরকে দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিন্তু তারা মারা যায়।
চকরিয়া থানার ওসি চন্দন কুমার চক্রবর্তী বলেন, পুলিশ নিহত দুইজনের লাশ উদ্ধারের পর সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি শেষে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে। পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ প্রাপ্তিসাপেক্ষে পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
এদিকে চকরিয়ার চিংড়ি জোন এলাকার মাতামুহুরী নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে বাদশা মিয়া (৫৫) নামক এক পেশাদার জেলের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল সকালে উপকূলীয় চিংড়ি ঘের এলাকার ১১ একর পয়েন্টে জাল ফেলে মাছ ধরার সময় নদীর গভীরে জাল আটকে যায়। এই অবস্থায় অন্য সময়ের মতো ডুব দিয়ে জাল ছাড়িয়ে আনার চেষ্টাকালে তার শরীরে জাল পেঁচিয়ে যায়। দীর্ঘসময় তিনি ফিরে না আসায় সাথে থাকা অন্য জেলেরা ডুব দিয়ে তার মরদেহ তুলে আনেন। নিহত বাদশা মিয়া চকরিয়ার পুর্ব বড় ভেওলা ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের অলির বাপের পাড়ার মৃত আশরাফ উজ-জামানের পুত্র।
