নির্বাচন ও গণভোট একসঙ্গে? সিদ্ধান্ত সরকারকে নিতে প্রস্তাব দেবে ঐকমত্য কমিশন

| রবিবার , ১২ অক্টোবর, ২০২৫ at ৬:২৫ পূর্বাহ্ণ

সংসদ নির্বাচনের সঙ্গে গণভোটও হবে কিনা, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে সরকারকে ঐকমত্য কমিশন প্রস্তাব দেবে বলে জানিয়েছেন কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার। গতকাল শনিবার এফডিসিতে ‘ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র ছায়া সংসদে তিনি এ মন্তব্য করেন বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আগামী নির্বাচনের সঙ্গে একই দিনে গণভোট হবে কিনা তা বিশেষজ্ঞদের সুপারিশ ও রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতের ভিত্তিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রস্তাব দেবে ঐকমত্য কমিশন। খবর বিডিনিউজের।

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন প্রশ্নে গণভোট আয়োজন করতে একটি অধ্যাদেশ জারির ‘মতামত’ পাওয়ার মধ্য দিয়ে গত বুধবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার সমাপ্তি ঘটে। কমিশন জানিয়েছে, রাষ্ট্র সংস্কারের সিদ্ধান্ত ও বাস্তবায়নের অঙ্গীকারনামা সম্বলিত জুলাই জাতীয় সনদে আগামী ১৫ অক্টোবর স্বাক্ষর করবে রাজনৈতিক দলগুলো।

ঐকমত্য কমিশনের সদস্য বদিউল আলম বলেন, নির্বাচনি ও রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে দুর্বৃত্তায়ন বন্ধ করতে হবে। ক্ষমতার পালাবদলে যাতে দুর্নীতির পালাবদল না হয়, সে বিষয়ে সজাগ থাকা খুবই জরুরি। গত ১৫ বছরে আমরা দেখেছি ক্ষমতার সঙ্গে জাদুর কাঠি যুক্ত ছিল। বিগত সময়ে ক্ষমতাসীন সংসদ সদস্য, মেয়র ও চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিতদের সম্পদ আকাশচুম্বি হয়েছে। এটা বন্ধ করতে হবে। শেখ হাসিনা ক্ষমতা থেকে বিদায় নিলেও স্বৈরাচারী আইনকানুন কাঠামো এখনো বহাল রয়েছে। এসব কাঠামোই তাকে স্বৈরাচার বানিয়েছে।

বর্তমান সরকারের সংস্কার প্রসঙ্গ টেনে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, বর্তমানে চলমান সংস্কার কার্যক্রমে এসব কাঠামো পরিবর্তনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। তাই আইনি, প্রাতিষ্ঠানিক ও কাঠামোগত সংস্কার করা প্রয়োজন। সুশাসন ও জবাবদিহিতা না থাকলে কেবল নির্বাচনের মাধ্যমে স্বৈরাচারী শাসন ব্যবস্থার পরিবর্তন আনা সম্ভব নয়। আমরা বিশ্বাস করতে চাই, এই নির্বাচন কমিশন একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দিতে পারবে। ভবিষ্যৎ সরকার জুলাই সনদ বাস্তবায়ন না করলে তাদের পরিণতিও শেখ হাসিনার মত হতে পারে। এই সনদ বাস্তবায়নের মাধ্যমে স্বৈরাচারী কাঠামোর বিলোপ হবে। আশা করি, ভবিষ্যতে যারা ক্ষমতায় আসবেতারা এ ব্যাপারে সজাগ থাকবে।

সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর রেষারেষির কারণে জুলাই সনদ স্বাক্ষরে যদি প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়, তাহলে দেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। বিগত শাসন আমলে ফ্যাসিস্ট সরকারের অন্যায়, অত্যাচার, গুমখুন হত্যাসহ জুলাই বিপ্লবে শহীদের হত্যার বিচার বাধাগ্রস্ত হবে। দেশের আইনশৃঙ্খলার ওপর ব্যাপক প্রভাব পড়বে। পতিত ফ্যাসিস্ট শক্তি ফিরে আসার শঙ্কা তৈরি হবে। তাই হারিয়ে যাওয়া গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনতে নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। আমাদের প্রত্যাশা, বিভেদের রাজনীতি পরিহার করে আগামী ফেব্রুয়ারিতে একটি সফল জাতীয় নির্বাচনের লক্ষ্যে ফ্যাসিস্ট বিরোধী প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দল ঐক্যবদ্ধ থাকবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবান্দরবান আসনে বিএনপির সম্ভাব্য ৩ প্রার্থীর বৈঠক
পরবর্তী নিবন্ধদলগুলোকে গণভোট করার দায়িত্ব কে দিয়েছে, প্রশ্ন খসরুর