‘নিদ্রা হলো স্বল্প মেয়াদী মৃত্যুসম অবস্থা আর মৃত্যু এক দীর্ঘ মেয়াদী শান্তির নিদ্রা।’ এটা বহুল উদ্ধৃত বচন। বিভিন্ন কৃষ্টি ও ধর্ম বিশ্বাসেও তা স্বীকৃত। নিদ্রা ও চিরনিদ্রার এই পারস্পরিক সম্পর্ক ছাড়াও নিদ্রা তথা ঘুমে মৃত্যুর ঘটনাও পরিলক্ষিত হয়। ক্ষণস্থায়ী নিদ্রা রূপ নেয় চির নিদ্রায়। গত ১৬ ফেব্রুয়ারী মঙ্গলবার রাতে ঘুমের মধ্যে বিদায় নেন বলিউডের ডিস্কো কিং খ্যাত জনপ্রিয় গায়ক ও সুরকার, বাঙ্গালীর গর্ব বাপ্পি লাহিড়ী। চিকিৎসকদের মতে, ঘুমের মধ্যে তার এই হঠাৎ মুত্যুর কারণ অবষ্ট্রাক্টিভ স্লিপ অ্যাপ্নিয়া (ওএসএ) এবং তার থেকে ঘটে যাওয়া হার্ট অ্যাটাক। সহজ বাংলায় তা হচ্ছে ঘুমের মধ্যে শ্বাসের পথ অবরুদ্ধ হবার কারণে আচমকা শ্বাস বন্ধ হয়ে পড়া। এভাবে শ্বাস বন্ধ হয়ে পড়লে হৃৎক্রিয়াও বন্ধ হয়ে পড়ার আশংকা থাকে। ঘটে যেতে পারে হার্ট অ্যাটাক। আক্রান্ত ব্যক্তি তাৎক্ষণিক মৃত্যুর মুখে পতিত হয়। শ্বাসবন্ধ হয়ে পড়লে হৃৎক্রিয়া বন্ধ হয়ে পড়ে স্বল্প সময়ে। কারণ মানুষের দেহে হৃৎপিণ্ড এবং ফুসফুস রক্ত সরবরাহ ও অক্সিজেন সরবরাহের ক্ষেত্রে একটা ইউনিট হিসাবে কাজ করে। একটা বন্ধ হলে অন্যটাও অবধারিতভাবে বন্ধ হয়ে পড়ে। ঘুমের মধ্যে ঘটে যাওয়া এই হার্ট অ্যাটাক সচরাচর উপসর্গহীন থেকে যায়। আক্রান্ত ব্যক্তি অনেকটা নীরবে মৃত্যুর হিম শীতল স্পর্শ লাভ করে।
ঘুম মানবদেহের জন্য অপরিহার্য। এটা কোন সৌখিনতা নয়। পর্যাপ্ত ও মানসম্মত ঘুম কেবল দেহের জন্য আবশ্যক নয়, মনকে সতেজ ও সুস্থ রাখার জন্যও ঘুম আবশ্যক। ঘুম মানুষের আত্মিক দিকও উন্নত করে। এভাবে সুস্বাস্থ্যের সব নির্দেশকের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে অপরিহার্য এই জৈবিক ক্রিয়া। ঘুমন্ত অবস্থায় মানবদেহ শারীরিকভাবে নিষ্ক্রিয় থাকে বটে তবে ঘুম নিজে একটা সক্রিয় শরীর বৃত্তীয় অবস্থা। ঘুম হচ্ছে মানুষের বিপাক ক্রিয়ার নিয়ন্ত্রক। একজন প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তির দৈনিক ৫ থেকে ৯ ঘন্টা ঘুম প্রয়োজন (গড়ে ৭ ঘন্টা)। পর্যাপ্ত ও ভালো ঘুম সুস্থ হৃৎযন্ত্রের জন্য আশীর্বাদ স্বরূপ। ঘুমের মধ্যে মস্তিস্কের উত্তেজক সিম্পেথেটিক স্নায়ুর কার্যকারিতা কমে আসে। এতে হৃৎস্পন্দন মন্থর ও নিয়মিত থাকে। রক্তচাপ কম থাকে। ফলে হৃৎপিণ্ডের উপর চাপ কম পড়ে এবং হৃৎক্রিয়া সুচারু ও নির্বিঘ্ন থাকে। ঘুমে উত্তেজনা প্রশমিত হয়, দুচিন্তা দূরীভূত হয় যা হৃৎ-সুস্থতার জন্য অপরিহার্য। এছাড়া ঘুম হৃদরোগের বিভিন্ন ঝুঁকি হ্রাস করে। যেমন ঘুম ওজন কমায়, রক্তের ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়ায় ও ডায়াবেটিস এর প্রকোপ হ্রাস করে। ঘুমে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। নিদ্রাহীনতা বিভিন্নভাবে ঘুমকে বিঘ্নিত করে, যেমন ঘুমের শুরু তার স্থায়িত্ব ও গুণগত মান ইত্যাদি। পর্যাপ্ত সুযোগ থাকা সত্ত্বেও জীবনযাত্রার ব্যস্ততায় ও চাপে কেউ কেউ তাদের ঘুম কাটছাট করতে বাধ্য হয়। নিদ্রাহীনতা দীর্ঘস্থায়ী হলে শরীরে দেখা দেয় বিভিন্ন বিপাক জনিত বিপত্তি ও হৃদরোগ। এটাই কার্ডিও মেটাবলিক ডিসঅর্ডার (cardiometabolic disorder)। এতে সৃষ্টি হয় উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, মেদবাহুল্য তথা হৃদরোগের বিভিন্ন ঝুঁকি। আবার তা সরাসরিও হৃদরোগের কারণ হতে পারে। নিদ্রাহীনতা ও ঘুমের বিভিন্ন সমস্যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি দেখা যায় নাকডাকা এবং ওএসএ। ওএসএ তে গলার ভিতরের গলবিলস্থ শ্বাসনালীর চারিদিকের মাংসপেশী অস্বাভাবিক শিথিল ও দুর্বল হয়ে পড়ে। স্বাভাবিক অবস্থায় ঘুমের সময় এই পেশীগুলো শ্বাসপথকে প্রশস্ত রাখতে ভূমিকা রাখে। পেশীগুলো শিথিল হয়ে পড়লে আল্-জিহবা ও আশপাশের পেশী শ্বাসপথকে সরু করে ফেলে এবং এক পর্যায়ে তা অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। এতে ঘুমন্ত ব্যক্তি নাক ডাকে। শ্বাস বন্ধ হয়ে পড়লে রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা নেমে আসে। এ পরিস্থিতি থেকে রক্ষা পেতে মস্তিষ্ক সংকেত পাঠিয়ে ঘুমন্ত ব্যক্তিকে জাগিয়ে তোলে। ১০ সেকেন্ডের বেশি শ্বাসবন্ধ থাকলেই ঘুম ভেঙ্গে যায়। মেদবাহুল্য, বার্ধক্য ও ডায়াবেটিস এই রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয় অনেকগুণ। এই প্রক্রিয়া রাতের পর রাত চলতে থাকলে দেখা দেয় উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, হার্ট ফেইলিউর, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন প্রাণঘাতি স্বাস্থ্য সমস্যা। মেদ বাহুল্য যেমন ওএসএ সৃষ্টির ঝুঁকিপূর্ণ উপাদান তেমনি ওএসএও মেদবাহুল্য সৃষ্টির জন্য দায়ী। ওএসএ আক্রান্ত ব্যক্তিগণ সচরাচর অতিভোজনে অভ্যস্ত হন তাদের স্নায়বিক কিছু ব্যত্যয় জনিত কারণে। উপরোন্তু রাতে ঘুমের বিঘ্ন হওয়াতে দিবাকালীন ঝিমুনি ও ঘুম ঘুম ভাব কাটাতে তারা মাত্রাতিরিক্ত চা, কপি ও অন্যান্য পানীয় গ্রহণ করে, যা মেদবাহুল্য ত্বরান্বিত করে। তারা কম কর্মমুখর হয়। এতেও মেদবাহুল্য বেড়ে যায়। এই মেদ বাহুল্যে শরীরের অন্যান্য স্থানের মতো শ্বাসনালীর চারিদিকেও চর্বি জমা পড়ে। এতে শ্বাসপথ আরো সংকুচিত ও অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। ফলে ওএসএ আরো জটিল আকার ধারণ করে। এভাবে সৃষ্টি হয় এক অচ্ছেদ্য চক্র। এই পরিস্থিতিতে মেদ বাহুল্য আগে নাকি ওএসও আগে তা নিয়ে দেখা দিতে পারে বিভ্রান্তি (তা অনেকটা মুরগী আর ডিমের গল্পের মতো)। ওএসএ এক জনগুরুত্বসম্পন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা। আমেরিকান ন্যাশনাল স্লিপ ফাউন্ডেশন এর তথ্যমতে ১৮ মিলিয়ন প্রাপ্ত বয়স্ক আমেরিকান এই রোগে আক্রান্ত। বাংলাদেশে তার সঠিক পরিসংখ্যান না থাকলেও তা সচরাচর দৃশ্যমান এক স্বাস্থ্য সমস্যা এটা নিঃসন্দেহে বলা যায়।
ওএসএ জনিত স্বাস্থ্য সমস্যাঃ
উচ্চ রক্তচাপ-উচ্চ রক্তচাপের সাথে ওএসএ এর কারণগত সম্পর্ক বিদ্যমান। শ্বাসবন্ধ হয়ে পড়লে তৎক্ষণাৎ রক্তচাপ বেড়ে যায় উত্তেজনাপ্রসূত হরমোন নিঃসরনের মাধ্যমে। রাত্রীকালীন পুনঃপৌনিক এই রক্তচাপ বৃদ্ধি এক পর্যায়ে দীর্ঘ মেয়াদী উচ্চ রক্তচাপে রূপ নেয় এবং হৃৎপিণ্ড ও রক্তনালীর ক্ষতিসাধন করে। গবেষণায় দেখা গেছে, উচ্চ রক্তচাপের শতকরা ৩০ ভাগ ক্ষেত্রে ওএসএ এর উপস্থিতি বিদ্যমান; যা অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপের ক্ষেত্রে শতকরা ৮০ ভাগ পর্যন্ত।
হৃদরোগ-শ্বাসক্রিয়া বন্ধ হবার ফলশ্রুতিতে হৃৎক্রিয়া বন্ধ হওয়া ছাড়াও ওএসএ করোনারী হৃদরোগের এক স্বতন্ত্র বিপদ ঝুঁকি হিসাবে বিভিন্ন রোগ তত্ত্বীয় গবেষনায় দেখা গেছে। ওএসএ হৃৎপিণ্ডের করোনারী রক্তনালীর প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখে। ওএসএ সৃষ্ট উচ্চ রক্তচাপ হৃৎপিণ্ডের অক্সিজেন চাহিদা বৃদ্ধি করে। আবার তা সরাসরি রক্তের অঙিজেন স্বল্পতা সৃষ্টি করে। উভয়ই ইস্কোমিয়া ও হার্ট অ্যাটাকের জন্য দায়ী। শেষ রাতের দিকে সচরাচর এই ধরনের হার্ট অ্যাটাক ঘটে থাকে। আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের মতে হার্ট অ্যাটাকের শতকরা ৭৫ ভাগ ক্ষেত্রে ওএসএ এর অস্তিত্ব বিদ্যমান। ওএসএ হৃদপেশীকে দুর্বল করে হার্ট ফেইলিউর সৃষ্টি করে।
ছন্দহীনতা-ওএসএ সৃষ্ট রক্তের অক্সিজেন স্বল্পতা ও ইস্কোমিয়া হৃৎপিণ্ডের হঠাৎ ছন্দহীনতা (অ্যারিথমিয়া) এর জন্য দায়ী। এতে হঠাৎ হৃৎক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যুর আশংকা দেখা দেয়। ঘুমের মধ্যেই ঘটে যায় এই অপ্রত্যাশিত হৃৎক্রিয়া বন্ধজনিত মৃত্যু বা কার্ডিয়াক অ্যারেষ্ট। গবেষনায় দেখা যায় ওএসএতে আক্রান্ত ব্যক্তির হঠাৎ মৃত্যুর আশংকা সাধারণ মানুষের তুলনায় দ্বিগুন বেশী।
ডায়াবেটিস-শরীরের বিপাকজনিত পরিবর্তনের মাধ্যমে তা রক্তের ইনস্যুলিনের কার্যকারিতা হ্রাস করে এবং ডায়াবেটিস এর প্রকোপ বৃদ্ধি করে। ওএসএ সৃষ্ট ডায়াবটিস, মেদবাহুল্য ও উচ্চ রক্তচাপের এই সমাহার চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় মেটাবলিক সিড্রোম নামে বহুল পরিচিত। তা ভোগান্তি ও মৃত্যুর অন্যতম কারণ।
অন্যান্য স্বাস্থ্যগত সমস্যা-রাতে নিদ্রাহীনতায় দিনের সতেজতা বিঘ্নিত হয়, এছাড়া দিনে ঘুম ঘুম ভাব কিংবা যত্রতত্র ঘুমিয়ে পড়া, খিট্খিটে মেজাজ, ক্ষুধাবৃদ্ধি, দুঃচিন্তা, হতাশা, স্মৃতি বিভ্রাট, হজমের সমস্যা, স্ট্রোক ইত্যাদি দেখা দিতে পারে।
ওএসএ কিভাবে সনাক্ত করা হবে?
ঘুমের ইতিহাস এবং তার আনুসঙ্গিক এক বা একাদিক স্বাস্থ্যগত সমস্যার উপস্থিতিতে ওএসএ সহজেই সনাক্ত করা যায়। ওএসএ আক্রান্ত ব্যক্তি অবধারিতভাবে রাতে নাক ডাকে উচ্চস্বরে। এছাড়া ঘুমে অস্থিরতা, যেমন ঘনঘন শরীরের অবস্থান পরিবর্তন, ঘুমে কথা বলা, হাঁটা, রাতে প্রশ্রাবের জন্য ঘনঘন জেগে উঠা ইত্যাদি সচরাচর দেখা যায়। একই রুমে অবস্থানকারীদের এই উপসর্গগুলো নজরে আসে। তাদেরও ঘুম বিঘ্নিত হয়। তবে এক্ষেত্রে উচ্চস্বরে নাকডাকা ব্যক্তি আলাদারুমে অবস্থান করলে এই উপসর্গ শনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়ে।
প্রতিকারঃ ওএসএ এর স্বীকৃত চিকিৎসা হচ্ছে সিপেপ (CPAP) নামের এক যান্ত্রিক শ্বাস সহায়ক ব্যবস্থা। এই যন্ত্রের মাধ্যমে রাতে ঘুমানোর সময় নাক-মুখের মারফত উচ্চ বায়ুচাপ প্রয়োগের মাধ্যমে শ্বাসপথকে উন্মুক্ত রাখা হয়। এতে আক্রান্ত ব্যক্তি অনায়াসে শ্বাস নিতে পারে। এই যান্ত্রিক ব্যবস্থা নাকডাকা বন্ধ করার পাশাপাশি আক্রান্ত ব্যক্তির উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, ওজন কমানো, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণসহ হৃদরোগের সামগ্রিক ঝুঁকি হ্রাস করে। এতে বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যায় ওষধের চাহিদা যেমন কমে আসে তেমনি জীবন মানও উন্নত হয়। আক্রান্ত ব্যক্তির পাশাপাশি তা জীবনসঙ্গী কিংবা একই রুমে অবস্থানকারীদেরও নির্বিঘ্ন ঘুমের নিশ্চয়তা দেয়।
প্রতিরোধঃ কিছু ব্যবস্থা ওএসও প্রতিরোধে ভূমিকা রাখতে পারে:-
ওজন কমানো ক্যালরী গ্রহণ হ্রাস করে ও কায়িক শ্রম বৃদ্ধি করে ওজন কমানো হচ্ছে এই ক্ষেত্রে প্রথম পদক্ষেপ।
জীবন যাত্রার স্বাস্থ্যগত পরিবর্তন-ধূমপান বর্জন (যা শ্বাসনালীকে স্ফীত করে তোলা বন্ধ করে), মদ্যপান বর্জন।
ঘুমানোর সময় মাথা দিক উঁচু করে রাখা অন্তত ৬০ ডিগ্রি। উপযুক্ত বালিশ কিংবা যান্ত্রিক বিছানা ব্যবহার করে তা সম্ভব।
একপাশে কাৎ হয়ে ঘুমানোর অভ্যাস করা-বালিশ দিয়ে কিংবা অন্যকোন ব্যবস্থার। এক্ষেত্রে অনেকে পিঠে টেনিস বল লাগিয়ে রেখে কাৎ হয়ে থাকা নিশ্চিত করে।
মুখ গ্রহব্বর ও দাতে বিভিন্ন ধরনের যন্ত্র ব্যবহারের মাধ্যমে শ্বাসপথ উন্মুক্ত রাখা।
বিশেষ ধরনের বাঁশি বাজিয়েও শ্বাসপথের মাংসপেশীর শক্তি বৃদ্ধি করা যায়।
পরিশেষে, ভালো ঘুম সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করে ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করে। ঘুম হোক শান্তির ও সুস্বাস্থ্য বিধানের। তা যাতে স্বাস্থ্যহানির কারণ না হয়। পাশাপাশি তা যেন অন্যের ঘুমের বিঘ্ন সৃষ্টির কারণ না হয়।
লেখক : হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ও প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান, হৃদরোগ বিভাগ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল।