“নিজেরাতো আইন-আদালত মানেন না তাই লাগামহীন কথা বলতে পারেন”

সীতাকুণ্ডে শঙ্করমঠে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী

| শনিবার , ২০ নভেম্বর, ২০২১ at ৯:৪৪ অপরাহ্ণ

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, “বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কথায় মনে হচ্ছে আইন-আদালত কোনো কিছুরই দরকার নেই, সরকার চাইলেই খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠাতে পারে। আসলে নিজেরাতো কোনো আইন-আদালত মানেন না, সেই কারণেই তারা এ ধরনের লাগামহীন ও দায়িত্বহীন কথা বলতে পারেন।”

তাহলে সরকারকে জজকোর্ট, হাইকোর্ট ও সুপ্রীম কোর্টের ভূমিকাও পালন করতে হবে কি না এমন প্রশ্ন রাখেন তথ্যমন্ত্রী।

আজ শনিবার (২০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় সীতাকুণ্ডে শঙ্করমঠ ও মিশনের শতবর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানমালার পঞ্চম দিনের যুব সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে “সরকার চাইলে বিএনপি নেত্রীকে বিদেশ নিতে পারবেন” বিএনপি মহাসচিবের এমন বক্তব্যের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্য মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, “দুর্গাপূজার সময় যারা দেশে বিভেদ সৃষ্টি করতে চেয়েছে তারা স্বাধীনতার শত্রু, তাদের পূর্বপুরুষ আমাদের স্বাধীনতা চায়নি, তারা আমাদের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করেন না। তারা এখনো পাকিস্তানি ভাবধারা মনে ধারণ করে, তারা দেশের শত্রু, তাদেরকে চিহ্নিত করতে হবে। অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই।”

শ্রীমৎ তপনানন্দ গিরি মহারাজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন সীতাকুণ্ড উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম আল মামুন।

অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন শ্রীমৎ পরমানন্দ মহারাজ। বক্তব্য রাখেন বিমল কান্তি দাশ, কাউন্সিলর শফিউল আলম মুরাদ, দুলাল দে প্রমুখ।

খালেদা জিয়ার একটি অসুখ হলেই বিদেশ কেন নিয়ে যেতে হবে এমন প্রশ্ন রেখে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, “দেশে লক্ষ লক্ষ হাজার কোটি মানুষের চিকিৎসা হয়, দেশে বঙ্গবন্ধু বিশ্ববিদ্যালয়সহ অনেক ভালো প্রাইভেট হাসপাতাল আছে যেখানে অনেক ভালো চিকিৎসা হয় এবং অন্যদেশ থেকেও এখানে অনেক ক্ষেত্রে চিকিৎসা নিতে আসে। বেগম খালেদা জিয়ার পেটে-হাঁটুতে বা অন্যকোনো সমস্যা হলেই বিদেশ নিয়ে যাবার জন্য তারা জিকির তোলেন কেন সেটাই হচ্ছে প্রশ্ন। আইনমন্ত্রী স্পষ্ট করেছেন, আইনানুযায়ী খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর কোনো সুযোগ নাই।”

তিনি বলেন, “এভাবে বিদেশ নিয়ে যাবার ধোঁয়া তোলার মাধ্যমে তারা আমাদের চিকিৎসক এবং আমাদের হাসপাতালগুলোকে অবজ্ঞা করছেন। বিশেষ করে চিকিৎসকদের প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন করছেন।”

এর আগে যুব সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, “সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র ব্যবস্থা পাকিস্তান থেকে বেরিয়ে এসেছিলাম আমরা অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র রচনা করার জন্য। দেশ বিভাগ হয়েছিল সাম্প্রদায়িকতার ভিত্তিতে, মুসলমানদের জন্য একটি রাষ্ট্র, হিন্দুদের জন্য একটি রাষ্ট্র। আমরা যখন পাকিস্তান রাষ্ট্র ব্যবস্থায় ছিলাম তখন আমরা অনুধাবন করেছি এই রাষ্ট্র ব্যবস্থা আমরা বাঙালিদের জন্য নয় কারণ আমরা বাঙালিরা মনে করি, আমাদের প্রথম পরিচয় আমরা বাঙালি, আমাদের দ্বিতীয় পরিচয় আমরা কে কোন ধর্মাবলম্বী কিন্তু পাকিস্তান রাষ্ট্র ব্যবস্থায় ধর্মীয় পরিচয়কে মুখ্য করে নেয়া হয়েছিল। সেটির সাথে আমরা বাঙালিরা মানিয়ে নিতে পারিনি।”

তিনি বলেন, “আজকে যারা সাম্প্রদায়িক বিভেদ সৃষ্টি করতে চায়, ধর্মীয় বিভাজন তৈরি করে সমাজে বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে চান তারা শুধু সমাজের শত্রু নয় রাষ্ট্রের শত্রু কারণ এই রাষ্ট্র রচিত হয়েছে অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র রচনা করার জন্য। ধর্ম যার যার এই রাষ্ট্র সবার, আমাদের দেশে যখন ঈদ উৎসব হয় সেই উৎসবের আনন্দ শুধু মুসলমান সম্প্রদায়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না। ঈদ উৎসবে হিন্দু ও বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মানুষও যান। একইভাবে হিন্দু ও বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে মুসলমানরা আনন্দ উৎসবে শামিল হন। এটিই আমাদের সংস্কৃতি। এই চেতনায় আবহমান বাঙালি, বাংলা এবং বাংলাদেশ ধারণ করে। তাই ছোটখাট বিচ্ছিন্ন ঘটনা আমাদের এই সম্প্রীতির বন্ধনে কখনো বিভেদ তৈরি করতে পারে নাই এবং পারবে না।”

পূর্ববর্তী নিবন্ধখালেদা জিয়ার সুচিকিৎসার দাবিতে রাঙামাটি বিএনপির অনশন
পরবর্তী নিবন্ধতিনি নাকি র‌্যাব!