নাশকতা চালালে রাজপথেই সমুচিত জবাব

মহানগর আ. লীগের প্রতিবাদ সমাবেশে নাছির

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ১৮ আগস্ট, ২০২২ at ৭:৪৩ পূর্বাহ্ণ

দেশব্যাপী সিরিজ বোমা হামলার ১৭তম বার্ষিকীতে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে বক্তারা বলেছেন, বিএনপি জামাত এখনো জঙ্গীবাদের পৃষ্ঠপোষকতা করে যাচ্ছে। তারা নানামুখী ষড়যন্ত্রের জাল বুনে এদেশকে অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়। তাই তাদেরকে তিল পরিমাণ ছাড় দেওয়া হবে না। এই বিএনপি ও জামাতের প্রত্যক্ষ ইন্ধনে ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট একমাত্র মুন্সীগঞ্জ জেলা ছাড়া দেশের ৬৩টি জেলায় পরিকল্পিতভাবে লাগাতার সিরিজ বোমা বিস্ফোরণের মাধ্যমে বাংলাদেশে জঙ্গীবাদের উত্থান ঘটে। এই ঘটনার মধ্য দিয়ে সন্ত্রাসের ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা যুক্ত হয়।
গতকাল বুধবার জেলা পরিষদ মার্কেট চত্বরে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দীন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন।
সভায় চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ.জ.ম. নাছির উদ্দীন বলেছেন, বিএনপি মুখে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বললেও আসলে তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী সবচেয়ে ক্ষতিকারক অপশক্তি। এই দলটি ক্ষমতায় থেকে পাকিস্তানি ভাবধারায় দেশকে পরিচালিত করেছে। এমনকি এই দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ৭১ সালে জাতিসংঘে মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে বক্তব্যদানকারী শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী বানিয়েছেন এবং কুখ্যাত রাজাকার ক্যাপ্টেন আব্দুল হালিমকে মন্ত্রীত্ব পদ দিয়েছেন। একইভাবে জিয়ার সহধর্মিনী খালেদা জিয়া যুদ্ধাপরাধী মতিউর রহমান নিজামী ও আল মুজাহিদিকে মন্ত্রীত্ব দিয়েছিলেন। এতেই প্রমাণিত বিএনপি এদেশে স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে একটি অপশক্তি। এরা কখনো বাংলাদেশ চায় না এবং বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যে উন্নয়ন ও অগ্রগতি সাধিত হয়েছে তাকে নষ্ট করতে চায়। তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, এদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ সু-স্পষ্ট অবস্থান নিয়েছে। তাদের মিছিল সমাবেশ করার গণতান্ত্রিক অধিকার রয়েছে। কিন্তু মিছিল সমাবেশের নামে নাশকতা করলে জনগণের জান-মালের ক্ষতি সাধন করলে রাজপথেই তাদেরকে সমুচিত জবাব দেওয়া হবে। আ.জ.ম. নাছির উদ্দীন আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রাম মহানগরের মূল ৩টি আসনসহ আংশিক ৩টি আসনে যাকেই নৌকা প্রতীক দেবেন তাঁর বিজয় সুনিশ্চিত করার জন্য সর্বাত্মক প্রস্তুতি সম্পন্ন করার নির্দেশনা দেন। তিনি নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে সাংগঠনিক দলীয় কর্মকাণ্ডে সক্রিয় অংশগ্রহণের উপর গুরুত্বারোপ করেন।
সভাপতির বক্তব্যে মাহতাব উদ্দীন চৌধুরী বলেন, বিএনপি-জামাতের অপশক্তির কাছে আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে দাঁড়িয়েছে। এই অপশক্তি নির্মূল ছাড়া আমরা কেউ নিরাপদ নই। কিন্তু মিছিল সমাবেশের নামে নাশকতা করলে জনগণের জান-মালের ক্ষতি সাধন করলে রাজপথেই তাদেরকে সমুচিত জবাব দেওয়া হবে। তিনি আরো বলেন, আমরা ঘৃণা ও উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি যে, বিএনপি জামাত এখনো জঙ্গীবাদের পৃষ্ঠপোষকতা করে যাচ্ছে। তারা নানামুখী ষড়যন্ত্রের জাল বুনে এদেশকে অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়। তাই তাদেরকে তিল পরিমাণ ছাড় দেওয়া হবে না।
মহানগর আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুকের সঞ্চালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন উপদেষ্টা সফর আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ, শফিক আদনান, মশিউর রহমান চৌধুরী, জাফর আলম চৌধুরী, মহব্বত আলী খান, ফিরোজ আহমেদ, সাহাব উদ্দীন আহমেদ প্রমুখ। সমাবেশ মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নঈম উদ্দীন চৌধুরী, এড. ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, আব্দুচ ছালাম, হাসান মাহমুদ শমসের, এড. শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, হাজী মোহাম্মদ হোসেন, হাজী জহুর আহমেদ, ইঞ্জিনিয়ার মানস রক্ষিত, জোবাইদা নার্গিস খান, আব্দুল আহাদ, আবু তাহের প্রমুখ।
সভার প্রারম্ভে সিরিজ বোমা হামলা যারা নিহত এবং আহত হয়েছেন তাদের সকলের আত্মার শান্তি ও সুস্থতা কামনায় বিশেষ মোনাজাত করা হয়। বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে বিশাল মিছিলটি লালদিঘীর চত্বর হয়ে কোতোয়ালীর মোড়, জিপিও, দোস্ত বিল্ডিং, নিউ মার্কেট হয়ে দারুল ফজলস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআদালত চত্বরে দুই সাংবাদিককে আইনজীবীর মারধর
পরবর্তী নিবন্ধগেটম্যান ও মাইক্রোবাস চালকই দায়ী