মাত্র ১ লাখ ৪৮ হাজার ৪৬০ বর্গকিলোমিটারের বাংলাদেশ একটি নদীমাতৃক দেশ। শুধু যোগাযোগ মাধ্যম নয়, আগে জীবিকার অন্যতম প্রধান অবলম্বন ছিল নদ–নদী। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, আজ দেশের প্রতিটি নদীর মৃত অবস্থা। আগের মত পানির গ্রোত নেই, নদীর বুকে নৌকা নেই, মাছ ধরার জাল নেই। আছে শুধু ময়লা আবর্জনা আর দুর্গন্ধ। এছাড়া প্রভাবশালীদের নদী দখল তো আছেই। যে যেভাবে পারছে নদী দখল করে নিচ্ছে এবং সেখানে গড়ে তুলছে বিভিন্ন অবৈধ স্থাপনা, শিল্প প্রতিষ্ঠান ও ঘর–বাড়ি। একদিকে দখল বাণিজ্য ও অন্যদিকে অসচেতন নাগরিকদের ময়লার স্তুপ জমে বেশির ভাগ নদ–নদীই ভরা যৌবন হারিয়ে এখন মরা খাল। বাংলাদেশের মানচিত্র হারাতে চলেছে নদ–নদীর অস্তিত্ব। কেবল বন্দরনগরী চট্টগ্রামে ৭০ লাখ মানুষের বসবাস কর্ণফুলী নদীকে ঘিরে। কিন্তু মাত্রাতিরিক্ত দখল, দূষণ, ভরাটের বিপরীতে নদীশাসন না থাকায় দেশের লাইফলাইন খ্যাত কর্ণফুলী এখন বিপন্ন। সংবাদপত্রে প্রায়ই দেখা যায়, নদী দখল রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন নানা সময় অবৈধ দখলদার চিহ্নিত করলেও উচ্ছেদ করতে পারে না। প্রভাবশালীদের লম্বা হাতে নদীগুলো দখলমুক্ত করতে সরকারের নেয়া বিভিন্ন উদ্যোগও ভেস্তে যাচ্ছে এই সময়ে। যারা ভূমি দখল করে তারা দেশ ও জাতির সবচেয়ে বড় শত্রু। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া এখন অতীব জরুরি হয়ে পড়েছে। তাই কর্তৃপক্ষের কাজে বাধা কিংবা সুপারিশ নয়, বরং সহযোগিতা করা প্রয়োজন। পরিশেষে একটি কথাই বলব, ‘নদী বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে’–এটিই হোক আঠারো কোটি মানুষের স্লোগান।